সামাজিক পরিমন্ডলে মনকষাকষি অতি স্বাভাবিক ব্যাপার। ব্লগেও তা হয়। কিন্তু বাংলা মন কষাকষির আদি পিতা যে বিদেশী তা হয়তো অনেকেরই জানা নেই। বাংলায় মনকষাকষি মানে পরস্পর মনোমালিন্য, কথার বা মতের মিল না থাকা।
মনকষাকষি শব্দটি আরবি ভাষার দান।
আরবি মুনাকশা থেকেই আমরা মন কষাকষি তৈরি করেছি।
আরবি মুনাকশা শব্দের অর্থ হলো ঝগড়া, প্রতিযোগিতা, বিতর্ক, শত্রুতা ইত্যাদি। এর সবটাই প্রকাশ্য। অন্যদিকে মনকশা থেকে উদ্ভূত বাংলা মনকষাকষি মানে পরস্পরের প্রতি মনের বিরূপতা ও বিরোধীতা, পরস্পর মনোমালিন্য, পরস্পর অবনিবনা ইত্যাদি। তবে বঙ্গীয় শব্দকোষে দাবি করা হয়েছে বাংলা মনকষাকষি এসেছে ফারসি মুনাকশ্ থেকে।
ফারসিতে মুনাকশ মানে বিবাদ।
আসলে বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত শতকরা ৮ ভাগ শব্দের অরিজিন কিন্তু বিদেশী (ভাষাবিজ্ঞানী ড. মুহম্মদ এনামুল হকের অভিমত)। বাংলায় বিবর্তিত হবার কারণে আমাদের অনেকেই এসবের মূল সব সময় ধরতে পারি না। উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে : পাশের বাড়ির ভাবি ফিনফিনে শাড়ি পরে ফুরফুরে মেজাজে আছেন। এখানে 'ফুরফুরে' আর 'ফিনফিনে' শব্দটি দুটিও বিদেশী।
এ শব্দ দুটির মানে আপনাদের নিশ্চয় অজানা নয়। মজার ব্যাপার কি জানেন? 'মানে' শব্দটিও কিন্তু বিদেশি। বাংলায় ঠাঁই পাওয়া আরবি 'মানে' অর্থ অভিধেয়, শব্দার্থ, অভিপ্রায়, উদ্দেশ্য, তাৎপর্য। (যেমন কথার মানে)। অবশ্য সংস্কৃতেও 'মানে' শব্দটি রয়েছে।
এটার অর্থ পরিমাণে, দিবসের পরিমাণে বা দিনে। জগৎমঙ্গল কাব্যে লেখা হয়েছে : 'কন্যা বলে থাক আজিকার মানে ঘরে, কালি সঙ্গে করি দিব যাইহ ক্ষেত্রেরে। '
সংস্কৃতে মানের আরেকটি অর্থ হচ্ছে তুলনায়। ('তার মানে এ জিনিসটা ভালো')।
(চলবে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।