মূল অর্থে বাংলা 'উদগাতা' শব্দ এখন আর ব্যবহৃত হয় না। আভিধানিক অর্থেও সংস্কৃতাগত 'উদগাতা' শব্দকে চেনা যায় না। শব্দটি ভারতীয় পুরাণ থেকে ধার করা হলেও এখনও এটা শুধু রূপক বা আলঙ্করিক প্রয়োগের মাঝে সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে।
বঙ্গীয় শব্দকোষে উদগাতা শব্দের মূল অর্থ হয়েছে, 'যজ্ঞের ষোড়শ ঋত্বিকের একতম'। সোজা কথায়, উদগাতা হলেন একজন ঋত্বিক যিনি সামবেদজ্ঞ ও সাম গানে পারঙ্গম।
পরবর্তীকালে উদগাতার অর্থ দাঁড়ায় সামবেদ গায়ক, প্রদর্শনকারী, প্রচারক। নারায়ণের মুখ হতেই উদ্গাতার সৃষ্টি। হিন্দুদের মনুগ্রন্থে দাবি করা হয়েছে, ব্রহ্মা হোতা ও অধ্বর্য্যুরও সৃষ্টি একই প্রক্রিয়ায়।
বুদ্ধদেব বসু 'মহাভারতের কথা'য় উদগাতাকে সামবেদ গায়ক হিসেবে দেখিয়েছেন ('উত্তর কান্ডে লব-কুশের আগমনের পর তাদের গ্রহণ করলেন শুধু রামায়ণের উদগাতা রূপে')। তবে সুধীন্দ্রনাথ দত্ত প্রচারক অর্থে শব্দটি ব্যবহার করেছেন ('উদগাতা জোতিষ্ক যেন বৃত্তির নিজস্ব পূর্ণ করে অসম্পৃক্ত অয়নাংশ')।
হালে উদগাতা শব্দটির আলঙ্করিক বা রূপক প্রয়োগ বেশি। এখন উদগাতা মানে অগ্রদূত বা উদবোধক। যেমন বিনয় ঘোষ তার 'বাঙালির রাষ্ট্রচিন্তা, অটোমেটিক জীবন ও সমাজ' গ্রন্থে লিখেছেন : 'জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা পর্যন্ত জাতীয়তাবোধের এ উদ্বোধন পর্বের উদগাতা ও প্রেরণাদাতা ছিলেন প্রধানত শিক্ষিত মধ্যবিত্ত বাঙালিরা'।
(চলবে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।