'সম্ভ্রান্ত' শব্দটির সঙ্গে একটি সমীহ ভাব লেপ্টে আছে। শব্দটি উচ্চারিত হলেই মনে ভক্তি ভক্তি ভাব আসে। বিষয়টা অবশ্য সাইকোলজিকাল। অথচ শব্দটির মূল অর্থ জানলে আমাদের পিলে চমকে যেতে বাধ্য।
তিনি সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান বললে আমরা এটাই বুঝি যে তার পরিবার শুধু অবস্থাপন্নই নয়, ভদ্র এবং দাপটওয়ালা।
আসলে একদিন বাঙালি সমাজে মানুষ কোনো বিশেষ পরিবার বা গোষ্ঠীর দাপটের কারণে সব সময় ভয়ে যেভাবে তটস্থ বা সন্ত্রস্ত হয়ে থাকতো, সেই প্রসঙ্গটিই সম্ভ্রান্ত অর্থে ব্যবহৃত হতো। দাপটে অসহায় হয়ে যাবার প্রসঙ্গটিই সম্ভ্রান্তের মূল কথা। কিন্তু কালের বিবর্তনে আর ভাষার সন্মোহনী দাপটে সম্ভ্রান্ত শব্দটির মূল অর্থ আজ লোমহর্ষকভাবে পাল্টে গেছে। আমরা এখন শব্দটির মূল নিয়ে মোটেও ভাবি না এবং মূল অর্থে শব্দটিকে ব্যবহারও করি না। অথচ একদিন সম্ভ্রান্ত শব্দটির মাঝে ধন আর ক্ষমতার দাপটই ছিল মূখ্য।
সম্ভ্রান্ত সংস্কৃত শব্দ। আর এটার সংস্কৃত অর্থ হচ্ছে- আবর্তিত, ভীত, উৎকন্ঠিত, হতবুদ্ধি ইত্যাদি। কিন্তু বর্তমানে বাংলায় শব্দটি বলতে আমরা অভিজাত, কুলীন, আশরাফ, মর্যাদাবান ইত্যাদি বুঝি। মজার ব্যবহার হলো জ্ঞানী-গুণী, শিল্পী, সাহিত্যিক আর শিক্ষাবিদদের আমরা শ্রদ্ধা করলেও তাদেরকে আমরা সম্ভ্রান্ত বলি না।
বাংলা ভাষায়, সম্ভ্রান্তের আরেকটি ব্যবহার পাওয়া যায়।
আর তা হচ্ছে সম্যক বা পুরোপুরি ভ্রান্ত। এই দৃষ্টিকোণ থেকে সম্ভ্রান্ত পথিক মানে পুরোপুরি দিকভ্রান্ত পথিক।
(চলবে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।