I want to make me as a blog writter. প্রতিদিনের ন্যায় সকাল বেলা পত্রিকা রুমে গিয়ে পত্রিকায় চোখ বুলাই। অনেক কয়েকটি পত্রিকাই প্রতিদিন দেখা হয়ে থাকে। পত্রিকা পড়তে ভালই লাগে। কারণ একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে পত্রিকা পড়াকে আমার কর্তব্য বলেই আমি মনে করি। পত্রিকায় আওয়ামীলীগ সরকারের সাফল্য দেখলে অনেকটাই মনে স্বস্তি আসে।
মনে হয় দেশটা খুব দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কিছু বিষয় মনে খুবই দাগ কাটে। তার মধ্যে একটি হল যখন পত্রিকায় হেডলাইন হয় ছাত্রলীগের অপকর্ম নিয়ে। পাশাপাশি দেখা যায় যে পত্রিকার সম্পাদকীয় পাতাতে একপাশে থাকে সরকারের সাফল্য নিয়ে দেশের বিভিন্ন গুনীজনের কলাম আর অন্য পাতায় থাকে ছাত্রলীগের অপকর্মের দৃষ্টান্ত নিয়ে কিছু বাস্তব চিত্র। ঠিক আজকেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে টেন্ডার নিয়ে স্থানীয় ঠিকাদারদের সাথে ছাত্রলীগের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, আহত ২০ জন এই শিরোনাম করেছে একটি পত্রিকা। শুধু এটাই দৃষ্টান্ত নয়। কয়েকদিন আগে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ফলে জীবন দিতে হল একটি দশ বছরের শিশু কে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকরা এসিড দগ্ধ হলেন ছাত্রলীগের হাতে। একটি গরিব পরিবারের অবলম্বন বিশ্বজিৎ কে কেড়ে নিল ছাত্রলীগের ভয়ানক থাবা।
সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে আগুন লাগিয়ে শিক্ষাগনকে কলুষিত করা হল ছাত্রলীগের নেতৃত্বে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকরা ভয়ানক নির্যাতনের শিকার হলেন ছাত্রলীগের লাঠি পেটায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবু বক্কর ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের যোবায়েরের মত আরও অনেক মেধাবী প্রাণ পৃথীবীর মায়া ত্যাগ করতে বাধ্য হল ছাত্রলীগের কোন্দলে। এরকম আরও অনেক ঘটনা রয়েছে আওয়ামীলীগ সরকারের চার বছরের সাফল্যে। আর এ সব ঘটনা সংঘটিত হয়েছে ভর্তি বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, টেন্ডার দখল,আধিপত্য বিস্তার, হল দখল ইত্যাদি কে কেন্দ্র করে।
এখন প্রশ্ন তাহলে কি এই ছাত্রলীগ অন্য কোন গ্রহ থেকে এসেছে? কেননা তারা যে ভাবে তান্ডব চালিয়ে যাচ্ছে তাতে করে তাদের পৃথিবীর মানুষ বলা কঠিন। কেননা দলীয় নির্দেশনা, প্রধানমন্ত্রীর আহব্বান,বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিঃস্কার, সংগঠন থেকে বহিঃস্কার, গ্রেফতার কোনটিই কাজে আসছে না। কাজে আসবে কি ভাবে? কেননা তাদের শাস্তি গুলো হয় খুব অল্প মেয়াদে। কারণ তারা ছাত্র। সরকার দলীয় ক্যাডার।
বিভিন্ন তদবিরের মাধ্যমে তারা এসব শাস্তি থেকে পার পেয়ে যায়। আর এর পেছনে কাজ করে সরকারের কিছু প্রভাবশালী মহল। সার্বিক ভাবে দেখা যাচ্ছে ছাত্রলীগ যা করছে তাতে করে তারা সংগঠনটির ঐতিহ্যকে ও সরকারের সাফল্য কে ম্লান করে দিচ্ছে।
ক্ষমতাসীন সরকার ও সরকার দলীয় সংগঠন এবং প্রতিনিধিদের কাছে দেশের উন্নয়ন হবে জনগণ এটাই আশা করে। তাদের দ্বারা ক্ষতি হোক এটা পৃথিবীর কোন দেশের মানুষের কাম্য নয়।
তাই সরকারের উচিত তাদের চার বছরের সাফল্য কে ধরে রাখতে, সামনের নির্বাচন কে কেন্দ্র করে জনপ্রিয়তা কে যেন ছাত্রলীগ গলা টিপে হত্যা করতে না পারে সেদিকে দৃষ্টিপাত করা। আর এসব অপকর্ম ও পারস্পারিক সংঘর্ষের কিছু কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে যে সংগঠনে অপেক্ষাকৃত কম মেধাবিরা প্রবেশ করছে, সংগঠনের সব শাখার কমিটিতে গণতান্ত্রিক ভাবে কমিটি না হয়ে তদবিরের মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি গুলো দেয়া হচ্ছে, অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা যাচ্ছে না, ছাত্র রাজনীতি আদর্শ থেকে চ্যুত হয়ে যাচ্ছে সে দিক গুলো লক্ষ্য না রাখা। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মর্যাদা রক্ষা করতে, সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীর ও মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, আর যেন কোন যোবায়ের, আবু বক্কর,বিশ্বজিৎ ও দশ বছরের বালকের মত কোন শিশু কে প্রাণ দিতে না হয় সেজন্য এখনি ছাত্রলীগের লাগাম টেনে ধরুন, ছাত্রলীগ কে সংস্কার করুন, তাদের মাঝে আদর্শিক চেতনা কে উজ্জিবিত করার চেষ্টা করুন। তা না হলে যুদ্ধাপরাধিদের বিচারের মত সরকারের বড় বড় অর্জন গুলো কুয়াশায় ঢেকে যাবে এবং দেশের মানুষের কাছ থেকে অনেক দুরে থাকতে হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।