সুন্দর হোক সত্য
এ সরকারের নানা প্রয়াস বিশেষ করে দুর্নীতি মুক্ত করার প্রয়াস প্রায় সকল মহলেই আদৃত হয়েছে। তবে এ সরকারে আরেকটি বৈশিষ্ট্য পীড়িত করে। ভাঙন - অবৈধ দখলের অজুহাতে ভাঙা হচ্ছে মানুষের বসত বাটি, ছোটখাটো দোকান বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান। মনে হয় এ সরকারের অন্যতম দায়িত্ব হচ্ছে ভাঙচুর করা। অবৈধ স্থাপনা সরানোর অজুহাতে বসতিহীন, বেকার হয়েছেন প্রচুর মানুষ।
বাড়ছে ক্ষোভ, ছিনতাই, সহিংসতা। গ্রামের বাড়ীতে যাচ্ছিলাম। রাস্তার দুপাশের ধ্বংসস্তুুপ দেখে কেমন যেন কৌতুক অনুভব করলাম। যেসব ভুমি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবী সংস্লিষ্টদের তারা সেসব ভুমি ফেলে রেখেছেন অবহেলায়। কোন কর্মপরিকল্পনা নেই।
তাহলে গরীব মানুষগুলোর জীবিকায় এমন আগ্রাসন কেন? অর্থহীন? নাকি অর্থনীতিকে অর্থহীন করার গোপন প্রচেষ্টা!
সেদিন আরেকটি ব্যাপার জানলাম চট্টগ্রামের চাকতাই খালের দুপাশে ভাঙার উৎসব দেখে। চাকতাই খালের দুপাশে উচ্ছেদ অভিযান চলছে। এখানে অবৈধ উচ্ছেদ বলতে পারছিনা। কারন, উচ্ছেদ অভিযানে কোন নিয়মনীতির অবকাশ রাখা হয়নি। শুনতে পাই, খালের দুপাশে রাস্তা তৈরী হবে।
অতি শুভ প্রয়াস। রাস্তা তৈরী হবে, তাতে আপত্তি নেই কারো। কিন্তু এই রাস্তার প্রকার নিয়ে চলছে এক হেয়ালি। প্রথমে বলা হলো ৪ ফুট খালি করে দিতে হবে খালের পাশে পায়ে হাটা পথ হবে। যাদের নিজস্ব মালিকানাধীন জমি আছে তারাও এ প্রস্তাবে অসম্মত হয়নি।
কিন্তু এ পরিমান ভাঙা হওয়ার পর দেখা গেলো আবার বলা হলো ১০ ফুট ভাঙতে হবে। অতঃপর সর্বশেষে বলা হলো ২০ ফুট খালি করে দিতে হবে। এটা অবশ্য ভালো প্রস্তাব। সুতরাং ভাঙা চলছে। কিন্তু এখানে বৈধতা অবৈধতার কোন বালাই রাখা হলোনা।
যাদের সঠিক কাগজপত্র রয়েছে তাদের কাগজগুলো অগ্রাহ্য করে চলছে ভাঙোৎসব - এবং এক্ষেত্রে সব বৈধ মালিকদেরও অবৈধ আখ্যা দেয়া হলো। এখন অনেক ভূমি মালিকের এত পরিমাণ অর্থ নেই যে মামলা করবে। এক জায়গায় দেখা গেল এক ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিকে গায়ের জোরে অবৈধ দখল বলে সিটি কর্পোরেশন উচ্ছেদ নোটিশ দিয়েছে ৭দিনের সময় দিয়ে। কিন্তু সে সময়ও তাদের না দিয়ে জোর করে ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে সেসব ভবন যা অনুমোদিত নকশানুসারে তৈরী। অথচ এইসব ভূমি অধিগ্রহনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ হয়েছে।
কিন্তু এইসব অর্থ হাতানোর উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে চলছে নিপীড়ন। সংবাদপত্রগুলোকে নিষেধ করা হয়েছে এই দুর্দশার কথা প্রকাশ করা হতে।
আর ভাঙার কবলে পড়ে বস্তিবাসীদের পূনর্বাসনের কথা অনেক শুনেছি টিভিতে। কিন্তু বাস্তবে কি?? তাদের কি পূনর্বাসন হয়েছে? এ সংক্রান্ত কোন সংবাদও আজকাল দেখিনা। সেটার কারণ কি জানিনা।
হয়তো নিষেধ!! একসময় বলা হয়েছিলো কোন অজুহাতে ভাঙচুর চলবেনা গ্রামের হাট বাজার গুলোতে। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে কেউ কেউ তাদের পুরোনো ব্যবসাস্থল একটু পিছিয়ে নিয়ে আবার কোনরকমে জীবিকা নির্বাহের আশায় গড়ে তুলেছিল নতুন দোকান। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গেলো আবার ভাঙতে শুরু করেছে তারা সেসব।
সব দেখে মনে হয় এটা ভাঙচুর সরকার। ভাঙার বিপরীত অবস্থা হচ্ছে গড়া।
মানে পজিটিভ কিছু। যেমন দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি ঠেকানো। কিন্তু সরকার এ ব্যাপারে কিছু করতে পারেনা। কারণ, সরকার ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে উঠেছে সিলেট যাওয়ার গাড়ীতে। সরকারের কোন সমন্বিত প্রচেষ্টা নেই এর বিপরীতে।
বরং এমন কিছু পদক্ষেপ সরকার নিয়েছে যা এ উর্ধ্বগতিকে আরো গতি দিয়েছে। এরকম অনেক ব্যাপারেই মনে হচ্ছে সরকার চালানোর যোগ্যতা বর্তমান ক্ষমতাধরদের নেই। কিন্তু এখন সমস্যা হচ্ছে কেউ মুখ খুলতে পারছেননা নানা অসঙ্গতি থাকা সত্ত্বেও। গণতন্ত্র!!! আহা গণতন্ত্র!!! আমাদের গণতন্ত্র যদি খোঁড়া না হতো!!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।