আমি কাক নই, আমি মানুষ...
মেরামতের দুই বছরের মাথায় কালুরঘাট সেতু আবার ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতটি উপজেলা, পার্বত্য জেলা বান্দরবান, সীমান্তবর্তী টেকনাফ ও পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সাথে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যোগাযোগ সহজ করতে ১৯৩০ সালে কর্ণফুলী নদীর উপর কালুরঘাট রেলওয়ে সেতু নির্মাণ করে। প্রথমদিকে এটিকে শুধু রেল পারাপারের উপযোগী করে চালু করা হয়। পরে অন্যান্য যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। সেতুটি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
এক পর্যায়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসীর তীব্র আন্দোলনের মুখে নব্বই দশকে অস্থায়ীভাবে শাহআমানত সেতুটি স্থাপন করা হয়। বিদেশ থেকে পুরনো মালামাল এনে রাতারাতি এটি নির্মিত হয়। ১৯৯১ সালের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে বন্দর জাহাজ শক্তিমানের ধাক্কায় সেতুটি ধসে পড়ে। নড়বড়ে এ সেতুটিকে জোড়াতালি দিয়ে যানবাহন চলাচলের চেষ্টা করা হয়। সরকার ২০০০ সালে এটির উপর দিয়ে যান চলাচলে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করে এবং কালুরঘাট রেল সেতুটিতে বড় ধরনের মেরামত কাজের উদ্যোগ গ্রহণ করে।
সে উদ্যোগটি দীর্ঘ দিন ধরে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আটকে থাকে। অবশেষে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে বড় ধরনের মেরামত কাজ শেষে ১২ জুন ২০০৫ সালে কালুরঘাট সেতুটি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। এ সময় সরকার পক্ষ থেকে সেতুটি কয়েক বছরের স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে দাবি করা হলেও সে সময় জনগণ নিম্নমানের কাজের অভিযোগ তোলে। কে শোনে কার অভিযোগ। এই ধরনের নির্মান কাজে সব পক্ষের মধ্যে একটা সমঝোতা থাকে।
এই সমঝোতাটি তৈরী হয় জনগনের স্বার্থের বিরুদ্ধে। সরকারি কোষাগার থেকে টাকা খরচ হয়ে যায়। সেসময়ে দূর্নীতিবাজ সমঝোতাকারিদের কেউ রুখে দিতে পারেনি। মাত্র দু বছরের মাথায় এলাকার জনগনকে মাশুল গুনতে হচ্ছে। জীবনের ঝুকি নিয়ে তাদের কর্ণফুলি নদী পার হতে হচ্ছে।
রেল কর্তৃপক্ষ এ সড়ক দিয়ে অধিকাংশ গাড়ি পারাপারের সম্ভাবনা রয়েছে মর্মে ৬ কোটি ২৭ লাখ টাকায় মুন ব্রিক মেনুফ্যাকচারিং কোম্পানিকে সেতুটি এ অর্থবছরের জন্য ইজারা দেয়। বর্তমানে কালুরঘাট সেতুটির নাজুক অবস্থার কারণে বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের ভাটিসহ ছোট-বড় অধিকাংশ যানবাহন শাহআমানত সেতু দিয়ে পারাপারে ভিড় জমাচ্ছে। ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাথে যেকোনো সময় দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগে বিপর্যয় নেমে আসার আশঙ্কা রয়েছে।
দু:খজনক হচ্ছে একটি সড়কের বিকল্প হিসেবে যে সড়কটি তৈরী করা হলো তার মজবুতি আরো বেশি নড়বড়ে। এ পরিস্থিতি কোন রকমে মানা যায়না।
আমরা মনে করি ওই অঞ্চলের মানুষের স্বার্থে দুটি সেতুকেই নতুন করে নির্মান করতে হবে। এক্ষেত্রে একটি সেতুকে ভালো রকমে মেরামত করে অন্য সেতুটি স¤পূর্ণরকমে পুননির্মান করা হোক। সবার আগে জনগনের জীবনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হোক। আশা করি নতুন করে যে নির্মান কাজ করা হবে সেখানে জনগনের স্বার্থ রক্ষিত হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।