আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এনার্জি ড্রিংকের আড়ালে ভয়ঙ্কর মাদক ব্যবসা :: ঝুকিতে যুব সমাজ।

ভালকে সমর্থন এবং খারাপকে বর্জন করতে শিখুন ।

এনার্জি ড্রিংসের আড়ালে অতিমাত্রায় অ্যালকোহল মিশিয়ে মাদক বিক্রি হচ্ছে রাজধানীসহ সারা দেশে। বৈধতার অজুহাত আবার অবৈধভাবে এ ধরনের ড্রিংস অবাধে বিক্রি করে একটি মহল পরিকল্পিতভাবে বছরে পাঁচ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। অন্যদিকে যুবসমাজ মাদকাসক্ত হওয়ার কারণে এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে গোটা সমাজে। এ নিয়ে অভিভাবকদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।

সূত্রমতে, বর্তমানে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের হাট-বাজার থেকে শুরু করে অলিগলিতেও খোলামেলাভাবে অ্যালকোহল মিশ্রিত তথাকথিত এনার্জি ড্রিংস বিক্রি হচ্ছে। অনেক সময় এ ধরনের ড্রিংস বিক্রিতে সহযোগিতা না করলে অনেককে হুমকির মুখে পড়তে হয়। পেশাগতভাবে অনেকে নানা সমস্যায় পড়েন। অনেক বিক্রেতা জানিয়েছেন, তারা বাধ্য হয়ে তথাকথিত ওই এনার্জি ড্রিংস বিক্রি করছেন। জানা গেছে, নিয়মানুযায়ী এসব এনার্জি ড্রিংসে অ্যালকোহল থাকার কথা নয়।

এর পরও একটি মহল পরিকল্পিতভাবে এনার্জি ড্রিংসে অ্যালকোহল মেশাচ্ছে। আবার কেউ কেউ বৈধতার মোড়কে অতিমাত্রার অ্যালকোহল মেশাচ্ছে প্রতিটি ড্রিংসের কৌটায়। বিশেষ ব্র্যান্ডে অধিক অ্যালকোহলের কথা জেনে যুবসমাজ ওইসব এনার্জি ড্রিংসের দিকে মারাত্মকভাবে ঝুঁকে পড়ছে। তারা অবাধে কেনারও সুযোগ পাচ্ছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে দেশব্যাপী গড়ে তোলা হয়েছে বিশেষ বিক্রয় নেটওয়ার্ক।

সূত্রমতে, বিদেশি এনার্জি ড্রিংসে কোনো অ্যালকোহল থাকে না। থাকে বিয়ারের মতো ড্রিংসে। তা-ও পরিমাণ থাকে নির্দিষ্ট হারে। বৈধভাবে প্রস্তুত বিয়ারের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত অ্যালকোহল থাকে। ক্ষেত্রবিশেষে আট শতাংশ।

কিন্তু বাংলাদেশে কিছুক্ষেত্রে চার দশমিক ছয় শতাংশ অ্যালকোহল লেখা থাকলেও প্রকৃতপক্ষে তাতে অ্যালকোহলের মাত্রা থাকে আরও বেশি। অনেক সময় আট থেকে ১২ শতাংশ পর্যন্ত অ্যালকোহল মিশিয়ে বাজারজাত করা হয়। নিয়মানুযায়ী বাজারজাত করা ড্রিংসে অ্যালকোহল আছে কি না, তা পরীক্ষার দায়িত্ব সরকারি একাধিক সংস্থার। কিন্তু রহস্যজনক কারণে এসব ড্রিংসে কী পরিমাণ অ্যালকোহল মেশানো রয়েছে তা পরীক্ষা করা হয় না। পরীক্ষা করলে সরকারের রাজস্ব অনেক বেড়ে যেত।

কারণ পাঁচ শতাংশ অ্যালকোহল মেশানোর জন্য প্রতিটি ৩৩০ মি.গ্রা বিয়ার ক্যানের জন্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানকে ৯.৫৫ টাকা শুল্ক দিতে হয়। এর বেশি অ্যালকোহল মেশানো হলে আনুপাতিক হারে শুল্কের পরিমাণ বাড়বে। এদিকে, কিছুদিন আগে একটি গোয়েন্দা সংস্থা নেশাজাতীয় দ্রব্যের ওপর একটি প্রতিবেদন সরকারের উচ্চপর্যায়ে পেশ করে। এতে উল্লেখ রয়েছে, দেশে প্রস্তুত একটি ড্রিংসে নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি অ্যালকোহল মেশানো হচ্ছে। এ কারণে যুবসমাজ এই ড্রিংসের প্রতি ঝুঁকছে।

এতে আগামী দিনে মাদকাসক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি অনেকের জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ অতিরিক্ত অ্যালকোহল মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ওই প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ওইসব পানীয় নিয়মানুযায়ী কেবল নির্দিষ্ট ডিলারদের বিক্রির কথা থাকলেও তার কোনো ধার ধারছে না প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানটি। তার পরও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো রহস্যজনক কারণে এক্ষেত্রে অনেকটাই নীরব। এদিকে, প্রকৃত চিত্র জেনেও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর এবং বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে না।

কারণ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে তারা উল্টো হুমকির মধ্যে রাখেন। সূত্র জানায়, এসব ড্রিংস বিক্রির জন্য বর্তমানে একটি বিশাল নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছে। এই নেটওয়ার্কটির কাজ হলো উচ্চমাত্রার অ্যালকোহলযুক্ত বাংলাদেশে প্রস্তুতকৃত ড্রিংস বিক্রি করা। বিদেশ থেকে এ ধরনের অ্যালকোহলযুক্ত এনার্জি ড্রিংস বা বিয়ার আমদানির ক্ষেত্রে ট্যাক্স প্রদান করতে হয়। অথচ দেশে উৎপাদিত ড্রিংসের জন্য কোনো ট্যাক্স দিতে হয় না, যা দেওয়া হয় তা-ও নামমাত্র।

এদিকে বেশ কয়েকজন চিকিৎসক জানিয়েছেন, এ ধরনের এনার্জি ড্রিংসের আড়ালে অতিমাত্রার অ্যালকোহল (১২-১৪ শতাংশ) স্বাস্থ্যের জন্য বড় ধরনের হুমকি। এগুলো নিয়মিত পান করলে মানুষের কিডনি ও লিভারের বড় ধরনের সমস্যা ছাড়াও জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে। ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তে পারে যুবসমাজ। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ঢাকা অঞ্চলের উপ-পরিচালক মুজিবুর রহমান পাটোয়ারী জানান, লাইসেন্সে উল্লেখিত শর্তের বাইরে বেশি পরিমাণ অ্যালকোহল মেশালে সে অনুপাতে শুল্ক দিতে হবে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে। তবে নিয়মবহির্ভূত কাজ করলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অবৈধ মাদকদ্রব্য উদ্ধার টিমের সহকারী কমিশনার সাদিরা খাতুন জানান, সম্প্রতি এ ধরনের বেশকিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনের মুখোমুখি করা হবে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে Click This Link

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.