পরিবর্তনের জন্য লেখালেখি
প্রমত্ত জলের মাঝে বাঁধ ফেলে বৈষম্যের রেখা টেনে দিয়েছি আমরাই । আমরা মানুষেরা এই কাজটা খুব ভালো করেই পারি । মানুষে মানুষে বিভেদ তৈরী করো আর তারপর শোনো আর্তের চিৎকার নির্বিকার অক্ষমতায় ডুবে ।
সারিয়াকান্দি ভালো নেই । জানতাম আগে থেকেই ।
বাসা থেকে আব্বুমনি আর মামনির উৎকন্ঠিত ফোনের পর ফোন বার বার মনে করিয়ে দিচ্ছিলো , বিপদ । চারিদিকে বিপদ। যে পানির নাম জীবন, সে তার অপমানিত দেহ নিয়ে ধেয়ে আসছে ধ্বংসের তীব্র ছোবলে নিষ্ঠুর প্রতিশোধ নেবে বলে ।
কিন্তু, দায়িত্ব বলে কথা । কাজ নিয়ে সারিয়াকান্দি এসেছি ।
বাঁধের উপরে রাস্তা । বাম দিকে শব । সব ধ্বংসের খেলা। ডান দিকে আপাত বন্যামুক্ত কিন্তু শংকিত জীবন ।
কোন বর্ননা দিতে ইচ্ছে করছে না ।
কোন ছবিও দিতে মন চাইছে না। কোন আবেগ ঘন লেখাও লিখতে ইচ্ছে করছে না । কাছে গিয়ে না তাকালে টেলিভিশন আর পত্রিকার খবর পড়ে কোন দিন বোঝা যাবে না , বন্যা মানে কি! এক রাতের ভিতর কি ভাবে ৩০ বছরের তিল তিল করে গড়ে তোলা সংসার নিমেষে শূন্য হয়ে যেতে পারে । কি ভাবে এক লহমায় গৃহস্থ হয়ে যায় ভিখারী!
শুধু বড় বেশি করে মনে পড়ে গেলো , আমি কতটা ক্ষুদ্র । কতটা অক্ষম।
মানুষ গুলোর দুঃখ কষ্ট দেখে বড় জোর খবর দিতে পারি , " এই এই সাহায্য লাগবে"। কিন্তু , এদের কষ্টের কোন স্থায়ী সমাধান কি হতে পারে না? আব্বুর সাথে দিনের পর দিন এই নিয়ে কত আলোচনা করেছি । যাদের কাছে টাকা আর ক্ষমতা আছে , তাদের সদিচ্ছার বড় অভাব ।
মনে পড়ে গেলো , কুন্ঠিত , লজ্জিত , কুঁকড়ে যাওয়া সেই কিশোরের কথা ," আমি ভিখারী নই , একটু সাহায্য করুন, বাবার শরীরে প্যারালাইসিস !" ছেলেটা বোকা । ও জানে না , আমরা সাহায্য করবো না ।
" আমাদের সবার বিবেকে প্যারালাইসিস"।
আমরা সবাই যে , বাঁধের এই পারের মানুষ!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।