আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাঙালী পুরুষের নৃত্যের রঙ

যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে

বাঙালী পুরুষ নৃত্যকলাকে স্ত্রীলিংগবাচক শব্দ হিসাবে জ্ঞান করতে অভ্যস্ত। কথিত আছে স্বর্গের নৃত্য পটিয়সী দেবীরা পৃথিবীতে তাদের পুজা চালুর জন্য সর্বপ্রথম মর্তালোকে নৃত্যের সূচনা করেছিলেন। যুগযুগ ধরে এ প্রচলন স্বত্বেও পুরুষ যখন দেবীর চরণে পুস্পাঞ্জলী অর্পনে নৃত্যরূপে সমর্পিত হতে পারে নি তখন বাঙালী পুরুষকে অভিশাপ দিয়েছিলেন। সেই থেকে বাঙালী নৃত্যকে দেখে এসেছে বিষদৃষ্টিতে এবং যে পুরুষ নৃত্যকলাতে পারদর্শী তাকে রমনীসুলভ আখ্যা দিয়ে তার পুরুষত্বকে ব্যাঙ্গ করেছে। এই অবিবেচনাপ্রসূত বিষেদগারে অতীতকালে নৃত্যশিল্পী পুরুষের কাছে বিবাহ দেবার মত কন্যা পাওয়া যেত না।

উপরন্তু জুটতো সমকামী পুরুষের ভালোবাসার আহবান। বাঙালী পুরুষ নিজে নাঁচতে অনভ্যস্ত বলে নৃত্য বিষয়ক আগ্রহ ও জ্ঞান তাদের একদম শূণ্য স্তরে। সংস্কৃতিকভাবে নারীরা নৃত্যের বিষয়ে ধারণা পেয়ে আসে বয়োজৈষ্ঠ্য কোন নৃত্যশিল্পীর থেকে। কিন্তু বাঙালী পুরুষ নৃত্যরত রমনীর শরীরের যে ভাষা দেখে তা অনেক বেশী জৈবিক, গল্প বা মেসেজ কোনটাই তারা বোঝে না, বা আছে বলে ভাবতেও চায় না। বাঙালী পুরুষ নৃত্যবিষয়ক জটিল একটা সামাজিক ও ধর্মীয় মতদ্বৈততার মধ্যে বসবাস করলেও এর আবেদনের কাছে বশ মেনে যায়।

কিন্তু নিজেদের জীবনে নৃত্যের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবনে সক্ষম হয় না। বাঙালী পুরুষের নৃত্য ভীতি চুড়ান্তরকমের। এর জন্য প্রথাগত শিক্ষা ও অনেক চর্চাসাধ্য একটা শিল্পকলা বলে তারা অনুমান করে। নৃত্যের সাথে শরীর ও মনের সংযোগ সাধন বিষয়ে তাদের অজ্ঞতা রয়েছে। শরীরের সমস্ত প্রকাশকে তারা জৈবিক বলে অবমূল্যায়িত হবার আশংকায় ভোগে বলে নৃত্যের সাথে মননের সুললিত সুর শুনতে অপরাগ।

বাঙালী পুরুষের বডি ল্যাংগুয়েজ তাই অনেক বেশী নিজস্বতায় উৎফুল্ল নয়, যখন তারা নিজেদের প্রকাশের কোন শরীরী গেসচার করে তখন তা তেমন শৈল্পিক হয় না, হয়না তেমন মনমুগ্ধকরও।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.