হেথায় কিছু লিখব বলে চায় যে আমার মন, নাই বা লেখার থাকল প্রয়োজন!
হিমু হুমায়ূন আহমেদের এক অসাধারণ সৃষ্টি। হিমুর সৃষ্টি এবং পথচলা সম্পর্কে হুমায়ূন আহমেদ নিজেই লিগেছেন ময়ূরাক্ষীর তীরে প্রথম হিমু। লেখাটি সম্ভবত কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। আমি এটা সংগ্রহ করেছি বাংলাদেশ ইনফো ডট কম থেকে। আমার কাছে অবশ্য হিমুর বইগুলো তেমন ভালো লাগে না। হিমুর চেয়ে আমার রবং মিসির আলীকেই বেশি পছন্দ। আমার কাছে ভালো না লাগলেও ব্লগে হয়তো এমন অনেক পাঠকই আছেন, যাদের প্রিয় চরিত্র হিমু। তাদের জন্যই এই লেখাটি দেওয়া হল।
পূর্ববর্তী পর্ব থেকে চলমান ...
অধ্যাপক ইউনূস সাহেবের এক যুগ আগে বর্তমান চলমান রাজনীতিতে হতাশ হয়ে আমরা একটা রাজনৈতিক দল করেছিলাম| দলের নাম "হিমু দল"‚ ইংরেজিতে হিমু পার্টি| দলের জন্য হলুদ কাগজে প্যাড ছাপানো হলো| রাত জেগে গঠনতন্ত্র লেখা হলো| তিনটি স্তম্ভের ওপর দল| প্রথম স্তম্ভ সততা| দ্বিতীয় স্তম্ভ সততা| ততীয় স্তম্ভ সততা|
অসৎ রাজনীতিবিদদেরও দলে আনার বিধান ছিল| তারা প্রথমে যাবে বায়তুল মোকাররমে| সেখানকার খতিব তাদের তওবা পড়াবেন| এরপর আসবেন শহীদ মিনারে| সেখানে তাদের সততার পরিমাণ অনুযায়ী কানে ধরে উঠবস করবেন| তারপর সোনা-রুপার পানি দিয়ে তাদের গোসল করিয়ে হলুদ পাঞ্জাবি পরিয়ে দেওয়া হবে| দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় যদি কেউ অন্যায় করেন‚ সঙ্গে সঙ্গে জাহাজে করে তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে নিঝুম দ্বীপে| দ্বীপে পাঠানোর আগে কপালে সিল দিয়ে দেওয়া হবে| সিলে বাংলা এবং ইংরেজিতে লেখা থাকবে- অসৎ - Dishonest.
সৎ মানুষের খোঁজে আমাদের লোকজন ঘুরে বেড়াবে| জীবনে কখনো কোনো অন্যায় করেননি এবং মিথ্যা কথা বলেননি - এমন লোককে বানানো হবে প্রেসিডেন্ট|
সাংসদদের সাইকেল চালনায় পারদর্শী হতে হবে| কারণ তারা সাইকেলে করে অঞ্চল ঘুরে বেড়াবেন| সংসদ চলাকালীন সময়ে তারা শুধু ঢাকায় আসবেন‚ বাকি সময়টা থাকতে হবে অঞ্চলে|
মন্ত্রীরা মন্ত্রীপাড়ায় থাকবেন না| তাদের জন্য লম্বা টিনের চালা করে চৌকি পেতে দেওয়া হবে| হোস্টেলের মতো ব্যবস্থা| তারা সচিবালয়ে হেঁটে যাতায়াত করবেন|
আলাদা কিছু মন্ত্রণালয় খোলার পরিকল্পনা আমাদের ছিল‚ যেমন ভিক্ষুক মন্ত্রণালয়| এই মন্ত্রণালয় শুধু যে দেশের ভিক্ষুকদের সমস্যা দেখবে তা না| বিদেশ থেকে ভিক্ষা আনার ব্যাপারটাও তারা দেখবে| হাসি মন্ত্রণালয়| এই মন্ত্রণালয় দেখবে দেশের মানুষ যেন হাসতে পারে| ইত্যাদি|
হিমু পার্টি গঠনের পর সপ্তাহে একদিন পার্টির বৈঠক বসতে লাগল| আমরা চাঁদাবাজিও শুরু করলাম| পার্টির জন্য চাঁদা তোলা হতে লাগল| মেম্বাররা প্রতি সপ্তাহে যার যা মন চায় চাঁদা একটি কাঠের বাক্সে জমা করতে লাগলেন| মাসের শেষে দেখা গেল‚ নয় শ টাকা হয়েছে| এই টাকায় পার্টির কাউন্সিল মেম্বাররা একটা করে হলুদ পাঞ্জাবি এবং চাদর কিনলেন| দলের টাকা ব্যক্তিগত হলুদ পাঞ্জাবির পেছনে খরচ করার কারণে কাউন্সিল মেম্বাররা আজীবনের জন্য হিমু রাজনীতি থেকে বহিষ্কৃত হলেন| সঙ্গে সঙ্গে হিমু দলও বাতিল হয়ে গেল|
চলবে ...
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।