হেথায় কিছু লিখব বলে চায় যে আমার মন, নাই বা লেখার থাকল প্রয়োজন!
হিমু হুমায়ূন আহমেদের এক অসাধারণ সৃষ্টি। হিমুর সৃষ্টি এবং পথচলা সম্পর্কে হুমায়ূন আহমেদ নিজেই লিগেছেন ময়ূরাক্ষীর তীরে প্রথম হিমু। লেখাটি সম্ভবত কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। আমি এটা সংগ্রহ করেছি বাংলাদেশ ইনফো ডট কম থেকে। আমার কাছে অবশ্য হিমুর বইগুলো তেমন ভালো লাগে না। হিমুর চেয়ে আমার রবং মিসির আলীকেই বেশি পছন্দ। আমার কাছে ভালো না লাগলেও ব্লগে হয়তো এমন অনেক পাঠকই আছেন, যাদের প্রিয় চরিত্র হিমু। তাদের জন্যই এই লেখাটি দেওয়া হল।
পূর্ববর্তী পর্ব থেকে চলমান ...
হিমুদের প্রধান কর্মকাণ্ড রাস্তায় রাস্তায় হাঁটা| কাজেই যুক্তিসঙ্গতভাবেই তাদের নামে একটা রাস্তার নাম হতে পারে| হিমু সড়ক কিংবা হিমু এভিনিউ| সেই সম্ভাবনা কীভাবে তৈরি হলো তার গল্প বলি|
আমার মাথায় একবার ভূত চাপল অতি আধুনিক রেসিডেন্সিয়াল স্কুল করার| স্কুলটা হবে কুতুবপুরে আমার গ্রামের বাড়িতে| আদর্শ স্কুল - যা হবে এ দেশের রোল মডেল| আমি বেলাল বেগ নামের এক উদ্যোগী এবং স্বপ্নস্রষ্টা মানুষকে যাবতীয় দায়িত্ব দিলাম| স্কুলের জন্য জমি কিনতে শুরু করলাম|
বেলাল বেগ ঢাকা-কুতুবপুর ছোটাছুটি করতে লাগলেন| মেহের আফরোজ শাওন স্কুলের ডিজাইন করতে বসল| আমাদের সবার মধ্যে বিপুল উৎসাহ| এর মধ্যে বেলাল বেগ আমাকে নিয়ে গেলেন এলজিইডি অফিসে| সেই অফিস প্রধান কামরুল ইসলাম সিদ্দিকীও একজন কর্মযোগী মানুষ| তাকে বলেকয়ে স্কুলের রাস্তাটা পাকা করানো যায় কি না|
কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী সাহেব আমাদের বসিয়ে রেখে বেশ কিছু মিটিং সারলেন| বসে থাকতে থাকতে আমি নিজে ক্লান্ত এবং কিছু পরিমাণে বিরক্ত| যতবার চলে আসতে চাই বেলাল বেগ আমার হাত চেপে ধরেন| নিচু গলায় বলেন‚ আরেকটু অপেক্ষা করুন| আমাদের "কন্যাদায়"|
এক সময় অতি ক্লান্ত মুখে সিদ্দিকী সাহেব এলেন| বেলাল বেগ নানা যুক্তি দিয়ে তাকে বোঝাচ্ছেন স্কুলের জন্য পাঁচ কিলোমিটার পাকা রাস্তা যে কত জরুরি| সিদ্দিকী সাহেব খুব যে মন দিয়ে তার কথা শুনছেন এরকম মনে হলো না| এক সময় তিনি বেলাল বেগের কথার মাঝখানেই তাকে থামিয়ে দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন‚ হিমু ব্যাপারটা কী বলুন তো?
আমি গেলাম হকচকিয়ে| সিদ্দিকী সাহেব বললেন‚ আমার বড় ছেলেটা কিছুদিন হলো হিমু হয়েছে| হলুদ পাঞ্জাবি পরে ঘুরছে|
আমি হেসে ফেললাম| হিমু ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করলাম| সিদ্দিকী সাহেব বললেন‚ আপনারা খাবার না খেয়ে যেতে পারবেন না| বাসা থেকে টিফিন কেরিয়ারে করে আমার জন্য খাবার আসে আসুন তিনজন মিলে খাব| হয় যদি সুজন তেঁতুল পাতায় নয়জন|
খাবার টেবিলে সিদ্দিকী সাহেব বললেন‚ এক মাসের মধ্যে যদি রাস্তাটা পাকা করে দেই তাহলে কি চলবে?
আমি হতভম্ব| এক মাসে রাস্তা| এও কি সম্ভব? ভদ্রলোক সম্ভব করলেন| এক মাসের আগেই রাস্তা পাকা হয়ে গেল| আমি ঠিক করলাম‚ রাস্তার নাম দেব "হিমু সড়ক"| কারণ রাস্তা পাকা করার পেছনে ‘হিমু’র সামান্য হলেও ভূমিকা আছে|
হিমু সড়ক নাম রাখা হলো না| অ—লের লোকজন মিটিং করে রাস্তার নাম রাখল ফয়জুর রহমান আহমেদ সড়ক| ফয়জুর রহমান আহমেদ আমার বাবা| সেই অর্থে রাস্তা হলো হিমুর দাদাজানের নামে| এইটাই বা খারাপ কী?
চলবে ...
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।