আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যে গ্যালারীতে আমার প্রথম ছবি প্রকাশ পেয়েছিল

নিজেকে নিয়ে কিছু একটা লেখার চেষ্টা, এখোনো করে যাচ্ছি . . .

দেশের কোন স্বানামধন্য গ্যালারীতে আমার ছবি এখনও প্রকাশ পাইনি । তবে সেদিনই সবচেয়ে বেশী খুশী হব যদি কখনও এসব গ্যালারীতে আমার ছবি উন্মুক্ত হয়। ছোটবেলা থেকেই কাগজে ছবি আকার নেশা ছিল। আকর্ষনটা বেশী ছিল পেন্সিল স্কেচের প্রতি যদিও প্রথম ছবি আকা হয় স্লেটে খড়ি মাটি দিয়ে। পরিনতি হবার পথে প্রথম যেদিন খাতা পেন্সিল হাতে এল সেদিন থেকেই বোধ হয় শুরুই হয়েছিল ছবি আঁকা।

ঘরের দেয়াল, মেঝে থেকে শুরু করে দরজা, জানালা সব জায়গাতেই চিত্রাংকন প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে চললাম। সীমাবদ্ধটা প্রথমে ঘরের খাতায় থাকলেও ধীরে ধীরে তার বি¯তৃতি ঘটতে থাকে। ঘরের পরিমন্ডল পেরিয়ে স্কুলের ডেস্ক, ব্লাক বোর্ড, হোম ওয়ার্কের খাতায় আপন মনেই নিজ প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে লাগলাম। এতদিন ছিল ছোট্ট পরিসরে যা সীমাবদ্ধ আমার এ প্রতিভা স্বমন্ধে কারও জানার সুযোগ তেমন হয়নি, যারা জানত তারা প্রায়ই ক্লাস মেট। ওদের উৎসাহও ছিল চোখে পড়ার মত।

ওরা প্রায়ই বলত আমাকে আমার এ প্রতিভা সবাইকে জানাতে হবে, দেখাতে হবে, কিন্তু সুযোগ কোথায় ! সময়ের গন্ডি পেরিয়ে তখন ১০ম ক্লাসের ছাত্র, ততদিনে মানুষের ছবি আঁকার হাতও এসে গিয়েছে। সেটা নগ্নই হোক আর নগ্ন ছাড়াই হোক। আমার প্রথম ছবির আত্মপ্রকাশ কোন স্বনামধন্য গ্যালারীতে হয়নি, সেরকম কোন জাকজমকও অনুষ্ঠানও ছিলনা কিন্তু এটা হলফ করে বলতে পারি ছবিটি আত্মপ্রকাশের পর উক্ত স্থানে পদচারনা ছিল অন্য যেকোন সময়ের তুলনায় সবচেয়ে বেশী, আলোড়নটা এমন ছিল যা সামাল দিতে অবশেষে আমাকে হিমশিম খেতে হয়েছে। স্থানই বলি আর গ্যালারীই বলি প্রথম ছবিটি যেখানে প্রকাশ হয় উক্ত স্থানটি আর কোথাও নয়, স্থানটি ছিল আমার স্কুলের “টয়লেট”। আমার ভক্তরা উক্ত স্থানকেই বিশেষ বিবেচনায় এনে সেখানেই আমার সৃষ্টিশীল কর্মের আত্মপ্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয়, ওদেরকেও অগ্রাহ্য করতে পারিনি এক প্রকার ইচ্ছা, অনিচ্ছার দোলাচালে থেকেও “টয়লেট”-এর দেয়ালে “কাটা কম্পাস” দিয়ে খোদাই করে ছবিটি অংকন করি।

ভারতীয় সংস্কৃতির বিভিন্ন নগ্ন মূর্তিরই একটি ছিল “টয়লেট”-এ আঁকা আমার ছবিটি। তখনকার সময়ে ছবিটি বেশ সাড়া পেয়েছিল। ছবিটি প্রকাশের পর থেকেই নিয়মিত, অনিয়মিত দর্শকের আনাগোনায় “টয়লেট” বেশ সরগরম হয়ে থাকল। বেশ উৎসাহও পেয়েছিলাম। যদিও কেউ তখনও জানেনি আমারই আঁকা ছবি, শর্তটা ছিল এমনই।

“মাম্মা জব্বর হইছে ...” “সাব্বাশ মামু, আগাইয়া লন,আমরা আছি আপনার লগে” “ওয়ান মোর, ওয়ান মোর” “আব্বে যা দিতছ, ভিঞ্চি দেখলে তো .........” এরকম আরো কত মজার ম্যাসেজ। অবশেষে টিচারদের ভয়ে নিজের নামটা প্রকাশ করতে না পারলেও তখন সে সময়ে “টয়লেট” গ্যালারীতে আমার এ ধরনের চিত্র অংকন আত্মপ্রকাশের ঘটনায় বেশ মজা পেয়েছিলাম। যেদিন শেষ স্কুল থেকে বিদায় নিয়েছিলাম সেদিনও শেষবারের মত দেখতে গিয়েছিলাম, ছবিটি তষনও খোদাই করা ছিল। অনেকদিন পর যখন আবার সার্টিফিকেট তুলতে যাই তষনও পর্যন্তু“টয়লেট” গ্যালারীতে আর ছবিটি দেখতে পাইনি, ততদিনে পুরোনো প্লাস্টার তুলে নুতন করে রং করা হয়ে গিয়েছে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.