আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টয়লেট মেন! (রম্য)

হাতের লেখা ভালো, চেহারা ভালো না রিকোয়েস্ট উঁনাদের প্রতি যাহাদের ঢেঁরশসম রমনীর আঙ্গুলীকেও মাদার গাছের ডাল মনে হয়, সকল স্বাদ মিটিয়ে নারীকুল আজ ‘তিতো’ হয়ে গেছে যাদের গদ্য কাব্যে, প্রচন্ড শীতের একাকিত্বের অসহায়ত্বে যারা দুবাইয়ের কম্বলের বিকল্প খুঁজেন না, দোহাই তাদের..... এই কলামে উঁনাদর প্রবেশ সংরক্ষিত! আমি বোধহয় তখনও ৫৫ পেরুতে পারি নাই। কুমারীর সীথিতে সিধুর তোলার অযোগ্যতায় নিজেকে ক্ষণেক্ষণে অপমান করিতাম, বলিতাম- ভাগ শুয়োর, গঙ্গায় পূজোর বাদে মেয়ে লোকের ঘাটের জল চেখে সাধ মিটা! মনের বাক্য মুখে না আসায় লোকে আমায় অমন দূর্নাম দেয়নি কখনো। ভাবেওনি এ চোখে কিসের খোয়াব ও যুবকের। নিয়তির নিয়মের মুখে থুথু ছিটায়ে থে থে করে দেশ মাড়িয়ে আজ দুবাই! চোক্ষে আমার সিধুর তোলার খোয়াব! নেই মাতা যে শিশুর সে শিশুর ঘরও বা কি বণও বা কী! ৭০ দশকের বাংলা সিনেমার সব হিরোইনের বুক চাপা কস্টের দিগুন চেপে দিন কাটাইতেছিলাম এ বালূময় প্রান্তরে! কী দিন কী রাত; অন্ধের কী আসে যায়। মোঁচয়ালা ক্যারেলা বাইনচো....গো ফ্যাতরা মার্কা সালুনে দম বন্ধে দুমুঠ ভাত আঙ্গুল চিপি দিয়ে ঢুকাইয়া যার রাত যায়- দিন যায়- সকাল আসে, তার আবার আশা কিসের! এ ব্লগ সুধীজনের তাই জানাই আছে ‘গায়ে যা সয় মনে তা সব লয় না’।

‘‘কান্না নারীর ছামান’’ তাই তাহা এড়িয়ে গিয়ে বেদম কস্টে আশা বাচাইয়া রাখিয়া গত কাইল মেস হল হইতে বাহির হইয়া তিন ব্লক বিশিস্ট হুন্দাই অফিসের পাইপিং- বি ব্লকে নিজের আসনে বসিয়া ঝিম মারিয়া ভাবিতে ছিলাম, ‘‘মরুভুমিতে বুঝি ম্যাডামদের চাকুরী করার কানুন নাই’’! মুলত এই অধমের যতখানি কাম তাহা বি ও সি ব্লকেই সীমিত। অনার্স এর দ্বিতীয় বর্সে বিজনেস ম্যাথ এ ৪ পাইলেও ম্যাথ সম্পর্কে যে কোনই জ্ঞান ছিলনা তাহা কিন্তু নয়। যেহেতু লোকে বলে মেইন অফিসে ৩ ব্লক সেহেতু পাইপিং সেকশন ও এ্যাডমিন সেকশন মিলে ২ ব্লক হইলে নিশ্চয়ই ১ ব্লক অবশিস্ট থাকে! অটোমেটিক হিসেব! জ্ঞান সীমিত হইলেও সি ব্লকের নামও জানা ছিল-‘ সি ব্লক, উহাকে সিএম সেকশন’’ বলিয়া জানে লোকে। হেড অফিসের ক্ষুদ্র লাল টিপ সমেত ক্ষুদ্র কাজ গুলো সারিয়া ফের সাইট অফিসে ফেরার প্রত্যয়ে বাহিরে সাটেল ট্রিপের অপেক্ষায় ছিলাম। যান্ত্রিক এ যুগে প্রকৃতিকে না ডাকলেও প্রকৃতি মোদের ভোলেনা।

হঠাৎ আন্ধারমে নাম্বারও ওয়ান এর কল অনুভব করিলাম। সি ব্লক সামনে পড়ায় দৌড় দিয়া ১ম বারের মত সি ব্লকের টয়লেট খুজিতে ব্যস্ত হইয়া ডাইরেক স্টপ খাইয়া গেলাম! আজ ১ বছরের চাকুরীতে এ প্লান্টের ছোট খাটো সব অফিসই কামে-বেকামে ঘোরাঘুরি ফিনিসি। অফিসে গেছি টয়লেটে যাই-নাই এমন ঘটনা ঘটার নয় বলিয়া ঘটেও নাই কখনো। জাপানীগোর ন্যায় (নোয়াখালী ভাইবেন না আবার) বাইঙ্গ মাছ মার্কা আমার চউক দুটো আশচোরযে তাউল্লায় ঠেকিবার পালা! যেন ৪ সন্তানসহ পুরনো প্রেমিকায় আমার বেডরুমের আশ্রয় চায়! অসুখীর সুখ মনেও সয় না; চোখেও না। আমার কান্না আসি যায়; ক্ষণেক্ষণে! কারে বুঝাই সে সুখের কথা! আমার সম্মুখে যে টয়লেট উহার দরজায় দিব্যি চকচকা টাইমস নিউ রোমান ফন্টে লেখা- টয়লেট মেন! উইমেন না থাকিলে মেন লেখার প্রশ্নই আসেনা! এক ঝটকা মারিয়া বলিলাম, ‘‘ ছোড়দো ও সাইট আফিস!’’ খুশিকে অস্তমিত করিয়া সি ব্লক তল্লাশিতে বেদম ব্যস্ত হইয়া উঠিলাম।

যতখানি অভদ্রতায় আমার দেশের বদনাম হয় ঠিক ততটুকু ঢাকিয়া রাখিয়া তলপিতলপায় ব্যস্ত হইয়া পড়িলাম। প্রথমে ইকুয়েপমেন্ট টেবিল, বিজনেস টেবিল, ইন্স্ট্রুমেন্টাল, মেকানিক্যাল....! আশা ছাড়িনাই! ৩০মিনিট অবধি তল্লাশিতে ব্যর্থ হইয়া ভাবিলাম উনারা বোধহয় বাহিরে ‘‘বাতাশ খায়’’। একখানা টেবিলের চেয়ারে গোলাপি রংয়ের সুয়েটার দেখিয়া ভাবিলাম ‘‘পুরুষে এই রং পড়লেতো বলদে লড়ায়’’- নিশ্চয়ই এইখানেই বিদেশি আপা হইবে। কারণ বলদের কালার রিএ্যাকশান সম্পর্কে আপারা ধারণা রাখেননা। (ছোট্ট নোট: আমার এক বন্ধু জাহাঙ্গীরনগরের ক্যাম্পাসে গার্ল ফ্রেন্ট লইয়া ডেট দিবার কালে এক বলদের কাছে হাতে-নাতে লড়ান খায়।

ফের জাহাঙ্গীরনগরের নাম শুনলে ঐ লাল স্যালোয়ারওয়ালী আপা নাকি রাগে বন্ধুরে এক সপ্তাহেও আর ধরতে দিতেন না। ) কোমলা কালারের সুয়েটার দেখিয়া দীর্ঘক্ষণ ওয়েট করিয়া যাহা দেখিলাম তাহাকে দৃশ্য বলেনা। আমরা চার ভাই ও আব্বা মিলিয়ে মোট ওজনের চেয়ে দুইগুন বেশি ওজনওয়ালী এক অশ্লীল চেহারার মহিলা নিজ রংয়ের বিকিরণ দ্বারা তাহার নিকটবর্তী দুই মিটার পর্যন্ত অন্ধকার করিয়া সিএম সেকশনের ম্যানেজারের সাথে হাসিতে হাসিতে আসিতেছেন। এমন মর্মস্পশী দৃশ্যে আমি ব্যথিত হইলাম এবং পরক্ষলেই ম্যাডাম ও ম্যানেজারকে দেখিয়া ‘‘সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার’’ টাইপের একখানা বিষয় মাথায় আসিল। যদি করিয়ানরা রিসাইকেলিং এ বিশ্বাস করে তবে নিশ্চয় হাবসান এর প্রজেক্ট শেষে ঐ ম্যাডামের ইউসকৃত লয়লেট প্যান খানা সিএম ম্যানেজারে বাথট্যাব হিসেবে ইউস করিবেন যেখানে হাত-পা ছড়াইয়া গড়াগড়ির পরও কিছু খালি জায়গা থাকিবে এবং সেখানে তিনি ইচ্ছা করিলে আদরের নাতনীরেও গোসলে নামাইতে পারিবেন! পুনশ্চঃ জাহাঙ্গীরনগরের প্যারার শেষ লাইনে ‘‘ ধরতে দিতেন না’’ এর আগের একটি শব্দ বাদ পড়িয়া গিয়াছে।

আমার হিসেবেতো শব্দটা ‘‘হাত’’ হইবার কথা! যদি কেউ ভুল পড়িয়া থাকেন শুধরাইয়া লইয়েন প্লিজ! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।