বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুর্নীতিবাজদেরকে অপসারন করুন ঢাকার যানজট সহ্যের সব সীমা অতিক্রম করে গেছে। জ্যামের নতুন অনুষঙ্গে যোগ হয়েছে হাতিরঝিলের বিলাসী সড়ক ও বনানীর উড়াল সেতু। জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় দিনে ঢাকার যাত্রীরা তা কিছুটা হলেও উপভোগ করছেন। ঢাকার দক্ষিন-পশ্চিম সংযোগ শুরুর পর যে কী ভয়াবহ দৃশ্য হবে তা ভেবে অনেকেই আতঙ্কিত। এমনিতে মগবাজার চৌরাস্তা, রেলগেট জ্যামে আটকে থাকতে হয়।
এরপর হাতিরঝিলের বিলাসী জট যোগ হওয়ায় ঢাকা-মগবাজার থেকে (ঢাকা-ময়মনসিংহ রোড) বনানী পর্যন্ত এবং কারওয়ান বাজার-ফার্মগেট থেকে বনানী পর্যন্ত যে কত মহাজটে কত ঘণ্টা আটকে থাকতে হবে তা ভেবে ঢাকা যাতায়াতকারীরা মহা আতঙ্কে রয়েছেন। মাঝে মধ্যে ক্ষমতাসীন শাসকসমাজ ঢাকার যানজট নিরসন ও পরিবহন সুবিধার বাহারি এবং আকাশছোঁয়া রঙিন মহাপরিকল্পনা ও স্বপ্নের মায়াবি কাহিনী শোনায়। এতে সাধারণ মানুষ কয়েক দিন সেসব রঙিন স্বপ্নের মধ্যে ভাসতে থাকেন। কখনো ফুটওভারব্রিজ, কখনো উড়াল সেতু, কখনো পাতাল সড়ক, কখনো পাতাল ট্রেন কিংবা বুলেট ট্রেনের হাজার হাজার কোটি টাকার মহাস্বপ্ন। শুনতে ভালো লাগে।
দেখতে কেমন লাগবে কী জানি। ব্যবহারে কেমন হবে তা আমাদের ভাগ্যের ব্যাপার। যা হোক বড় বড় অভিজাতজন তো বহু পরিকল্পনা দিয়েছেন, দিচ্ছেন তা হয়তো আমরা না পেলেও আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম পাবে; তাদের ভাগ্যে তা জুটুক আপাতত এটুকুই আমরা চাই। তবে কবিগুরুর জুতো আবিষ্কারের রেশ ধরে আমি একজন সাধারণ মানুষ একটুখানি পরামর্শ দিতে চাই। মতাসীন ও সংশ্লিষ্টজনদের এতে বেশি কিছু লাভ না হলেও আমরা যারা বর্তমানে ঢাকায় বেঁচে আছি, সে এক কোটি মানুষের হয়তো অনেক লাভ হবে।
আমরা জানি না কর্তৃপক্ষের কাছে এই পরামর্শ পৌঁছবে কি না।
প্রস্তাবটির ইঙ্গিত পাই একজন অটোরিকশা চালকের কাছ থেকে। পরবর্তীকালে আমি অনেকের সাথে আলোচনা করি। অনেকেই বিষয়টি সমর্থন করেন। কিন্তু সবাই একটি আশঙ্কার কথা শুনিয়ে আমাকে বারবার আশাহত করেছেন, এত বড় সুযোগ সুবিধা জনগণকে দেয়ার জন্য কেউ প্রস্তুত হবে না।
কারণ এতে তাদের তেমন লাভ নেই। তাই এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নেও কেউ আগ্রহী হবে না। তার পরও আমি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রস্তাবটি পেশ করলাম। তিনি দৃঢতার সাথে নিজে কাজটি করার সিদ্ধান্ত নিলে এটি হয়তো সম্ভব হতেও পারে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শকদের কাছে বললে কেউ কাজটি সহজে করতে দেবেন না।
প্রস্তাবটি হলো বিদ্যমান যে রেললাইন নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা, গাজীপুর পর্যন্ত আছে, এর দুই ধারে রেল বিভাগের বহু জমি পতিত বা বেদখল হয়ে আছে। তা উদ্ধার করে রেললাইনের দুই ধারে দু’টি বিপরীতমুখী সড়ক করে দিতে হবে। ওই দ্বিমুখী সড়ক দিয়ে বাস-ট্রাক ও গাড়ি চলবে। আর মধ্যখানে রেললাইন দিয়ে চলবে ট্রেন। যেসব জায়গায় রেল ক্রসিং রয়েছে সেসব ক্রসিংয়ে আপাতত আন্ডারপাস বা ওভারপাস তৈরি করে দিলেই চলবে।
এতে সময় লাগতে পারে মাত্র ছয় মাস। ফলে ঢাকার যানজট অন্তত ৬০ ভাগ কমে যাবে। সড়ক যদি তৈরি না করা যায় তাহলে বিকল্প হিসাবে একটি অতিরিক্ত রেল লাইন নির্মাণ করে জয়দেবপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত প্রতি আধ ঘন্টা বিরতিতে নিয়মিত ট্রেন সার্ভিস চালু করা যায়। পরবর্তীকালে মহাপরিকল্পনা নিয়ে রেললাইনের ওপর দিয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে গাজীপুর পর্যন্ত উড়াল (মনোরেল) রেললাইন এবং পাতাল রেললাইন করার কাজ শুরু করা যেতে পারে।
এর ফলে বর্তমানে আমরা যারা বেঁচে আছি যানজটমুক্ত অবস্থায় কিছুটা চলাচল করতে পারতাম এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মও তা থেকে সুবিধা পেত।
এর সাথে ঢাকার চার দিকে নৌপথ চালু করে নদীর দুই ধারে সড়কপথের বেষ্টনী তৈরি করে দিলে ঢাকা বিশ্বের এক অপরূপ বাসোপযোগী মহানগরে রূপান্তরিত হবে।
প্রধানমন্ত্রী কাজটি করার জন্য দৃঢ উদ্যোগ নিলে তা এ বছরের শেষ দিকে নির্ধারিত নির্বাচনের আগেই শেষ করতে পারবেন। বর্তমান যোগাযোগমন্ত্রীকে খুবই উদ্যোগী মনে হয়। তিনি যদি প্রধানমন্ত্রীকে নিঃস্বার্থ সহযোগিতা করেন তা হলে হয়তো এই মহাকর্মটি সহজে হয়ে যেতে পারত।
ডক্টর শাহ মুহাম্মদ আবদুর রাহীম ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।