যুক্তি,তথ্য,কমন সেন্স এবং প্রমাণের উপর বিশ্বাস রাখি
আমাদের দেশে আইন আছে কিন্তু আইনের প্রয়োগ নেই। আবার অনেকের মধ্যে সচেতনতার অভাবও রয়েছে। আমাদের দেশে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন বলে একটি আইন আছে যা আমরা অনেকেই জানিনা। কিন্তু এই আইনটি বেশ কার্যকরি। এখন কথা হচ্ছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনটি কি এবং কিভাবে আমরা সাধারণ মানুষ এর সুফল পেতে পারি।
আমাদের দেশে আমরা যতরকম সার্ভিস বা পণ্য কিনি সেগুলো বিক্রেতারা সঠিকভাবে আপনাকে দিচ্ছে কিনা বা আইন মেনে তারা আপনাকে আপনার প্রাপ্য বুঝিয়ে দিচ্ছে কিনা এসব বিষয়ে যেকোন ধরনের প্রতারণার স্বীকার হলে আইনি সুবিধা পেতে আমরা এই আইনের আশ্রয় নিতে পারি। ২০০৯ সালের ৬ এপ্রিল ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন করা হয়।
আপনি সার্ভিস নিতে গেলে বা পণ্য কিনতে গেলে যে কোন প্রতারণা,ছলচাতুরি,অতিরিক্ত মুল্য আদায়,মাপে কম,ভেজাল ইত্যাদির প্রতিকার পেতে গেলে এই আইনের সাহায্য নিতে পারেন। এছাড়াও আপনি কোন সার্ভিস নিচ্ছেন কিন্তু কোম্পানি আপনাকে ঠিকমত সেটা দিচ্ছে না বা আপনার সাথে বাটপারি করছে এসবের জন্যও আপনি এই আইনের সুবিধা পেতে পারেন।
কোথায় অভিযোগ করবেন?
ভোক্তা অধিকারবিরোধী কোনো কাজ সংঘটিত হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তাকে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (১ কারওয়ান বাজার) অথবা প্রতিটি জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের বরাবর অভিযোগ করতে হবে।
এ অভিযোগ অবশ্যই লিখিত হতে হবে। এ ক্ষেত্রে মুঠোফোনে খুদে বার্তা (এসএমএস), ফ্যাক্স, ই-মেইল বা অন্য কোনো উপায়ে অভিযোগকারীর পূর্ণাঙ্গ নাম, বাবা ও মায়ের নাম, ঠিকানা, ফোন, ই-মেইল, ফ্যাক্স (যদি থাকে) এবং পেশা উল্লেখ করে আবেদন করতে পারেন প্রতারিত ক্রেতারা। এ জন্য কোনো ধরনের ফি দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। তবে কেনাকাটার প্রমাণ হিসেবে অভিযোগকারীর কাছে দোকানের রসিদ থাকতে হবে। ভেজাল, মেয়াদোত্তীর্ণ বা নকল পণ্য বিক্রিসহ বিভিন্ন অভিযোগের ক্ষেত্রে পণ্যের নমুনাও দিতে হবে।
আমরা হয়তো অনেকেই আলসেমির জন্য বা আইনের সুবিধা পাওয়া যাবেনা এই ভেবে অভিযোগ করিনা বা ভাবি অমুকতো বড় কোম্পানী। আমি কি সেই সুবিধা পাব? কিন্তু দেখা গেছে যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বেশ গুরুত্ব দিয়ে অভিযোগগুলো দেখেন। আপনি আইনের সুবিধা পান বা না পান অন্তত অভিযোগ করবেন। সচেতনতার অভাব এবং না জানার ফলে বিক্রেতারা প্রতিনিয়ত আমাদের ঠকান। আরো জেনে রাখুন,কোনো ভোক্তা প্রতারিত হয়ে অভিযোগ করলেই প্রতিকার পাবেন।
অভিযোগ প্রমাণিত হলে অধিদপ্তরই মামলা করবে। মামলার খরচ, পণ্যের মান পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যয় কোনো কিছুই তাঁকে বহন করতে হবে না। সবকিছুই করবে সরকার।
সবার কাজে লাগতে পারে তাই একটা তথ্য দিচ্ছি:
॥ মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করিবার দণ্ড ॥
ধারা ৪৪ > “কোন ব্যক্তি কোন পণ্য বা সেবা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অসত্য বা মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করিলে তিনি অনূর্ধ্ব এক বৎসর কারাদণ্ড, বা অনধিক দুই লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন৷
মজার একটি তথ্য হচ্ছে,অভিযোগ যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে অভিযুক্ত বিক্রেতাকে যে পরিমাণ অর্থ জরিমাণা করা হয়, তার ২৫ শতাংশ অভিযোগকারীকে প্রণোদনা হিসেবে দেয় অধিদপ্তর।
আপনাদের যদি কেউ এরকম প্রতারণা শিকার হন বা বাংলাদেশের যেকোন পন্য বিষয়ে প্রতারিত হন তাহলে আপনারা ভোক্তা অধিকার আইনের সাহায্য নিতে এখানে যোগাযোগ করে দেখতে পারেন -
“জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
১ কারওয়ান বাজার(টিসিবি ভবন-৮ম তলা), ঢাকা-১২১৫
ফোন ।
ফ্যাক্স: ৮৮-০২-৮১৮৯৪২৫, ৮৮-০২-৮১৮৯০৪৫, ৮৮-০২-০১৭১৩-৪৩৬৩৬০
ই-মেইল:
http://www.dncrp.gov.bd/
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।