আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শিমুলের মাসকাওয়াথ প্রভাবঃ ধুসর গোঁধুলীর ওভাররেটিং!

যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে

ধুসর গোধুলীর প্রতিক্রিয়া সাহিত্য অনেকবেশী ভাগাবেগে মুন্ডিত। ঠিক কোটেড রাইটার অফ দ্যা রাইটার্স বিশেষণে যে রাইটারদের পাঠক হতে না পারাটাই স্পষ্ট করে লেখককূলদের অপমানিত করে বসে আছে সেটাও বোধকরি এখনও বোধগম্য হয়নি তার। এটা হচ্ছে নিতান্তই ভালোলাগা প্রকাশ করার জন্য লাগসই ও সঠিক শব্দসমষ্টি খুঁজে না পেয়ে, আকাশ থেকে চিল ধরে এনে কবিতার মিল করে নেয়ার মত কেতারদুরস্ততা। সাহিত্য মানে সব আহমদ ছফা, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস হতে হবে, আর হুমায়ুন, মিলন, প্রনব, আনিসুল হলে সেটা বাজার কাটতি, অন্তসারশূন্য হবে এটা একমাত্র স্ট্রাগলারদের স্বান্ত্বনাসূচক স্বপক্ষসমর্থন। “কে কার বিজ্ঞাপন দিবে সেটা কৌশিক আহমেদ কিংবা আমি ধুসর গোধূলি ঠিক করার কে?” যদি এই হয় উপলব্ধি তবে পাঠক আর লেখকের সেতুবন্ধনের জায়গাটাই হয়ে যায় নড়বড়ে, ব্রিজ অন দ্যা ডেড রিভার! বেস্ট সেলার বুক তকমা জুরে বসার আগের ইতিহাস হয়ে যায় অপঠিত, অইতিহাস গ্রন্থিত।

একটা প্রয়াসকে স্থান দিতে অন্য সৃজনশীলতাকে ঝেটিয়ে বিদায় করা। এখন সাহিত্য মানে অসংখ্য ফ্রেম, প্রযুক্তি আর সমসাময়িক উপকরণের ঘনিষ্ট নিবিড়তাও। ডায়লগ প্রক্ষেপন, ভিজুয়াল উপস্থাপনের অন্যান্য অনুসংগ যেমন ক্যামেরা, লাইট, স্পট, অভিনয় শিল্পী তাদের ইন্টিগ্রেশন সাহিত্য পরিধির মধ্যে ঢুকে বসে আছে। একটা কল্পিত স্ট্যান্ডার্ড ধরে রেখে সেখানে অন্য কোন অর্ন্তভূক্তিকে বিষময় দৃষ্টিতে দেখার, নাক ছিঁটকে চলার বক্তব্য উপস্থাপিত হতে দেখলাম কেবল ধুসর গোধুঁলীর লেখায়। ঠিক যেভাবে আমাদের কতিপয় পূর্বপুরুষরা ভাবতো।

এখানে অত্যন্ত অপ্রাসাঙ্গিকভাবে এসে যায় প্রভাব বিষয়ক জটিলতা। প্রভাব কি? প্রভাব হচ্ছে একটা সেট ট্রেন্ড যে বলয় থেকে একজন লেখকের লেখাকে আলাদা করা যায় না। তার নামে যুগ চিন্থিত হয়। ইংরেজী সাহিত্যে মিল্টন, ওয়ার্ডসওয়ার্থ, টেনিসন এমন যুগ সৃষ্টি করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ এমন বলয় তৈরী করেছিলেন।

ত্রিশে তৈরী হয়েছিল নতুন সাহিত্যধারা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে শুরু হলো ভিন্ন এক ধারা যা মানুষের একাকীত্ব, নিস্পৃহতা, শূণ্যতাকে ক্রমশ প্রতিনিধান করতে শুরু করলো। এখনও যুগ, ধারা সন্বন্ধে অজ্ঞাত লেখককূলের রচনায় একধরণের শূণ্যতার বিচরণ দেখা যায়। এটা হচ্ছে যাপিত কালের অবশ্যম্ভাবী প্রভাব, লেখক এই গন্ডির বাইরের নন। যা কিছু দেখে যা কিছু ঘটে তার দৃশ্যসীমায় তার একটা উপস্থাপন হতে থাকে তার কবিতা, গল্প, উপন্যাসে।

এর পরবর্তী যুগে লেখা হয়ে উঠেছে আরো প্রযুক্তিসমন্বয়ে শিল্পিত উপস্থাপনের বিষয়। সেটা লেখকের সৃজনশীলতার মাত্রাকে ব্যাপ্ত করেছে বিভিন্ন দিকে। সেখানে প্র্রভাব নামক একটা বিশেষণে আসীন করার মত লেখক মাসকাওয়াথ কবে থেকে হলেন সেটা শিমূলের ভাবনার সাথে অন্যদের ভাবনার অমিল থাকতেই পারে। শিমূল যেখানে তা প্রমান করার চেষ্টা করেছেন, কনফুসিয়াস, ধুসর গোধূলী যেটাকে সম্মানজনক অবস্থানে উন্নীত করার ভালোলাগায় আচ্ছন্ন হচ্ছেন সেটা একধরণের অতিআবেগীয় সম্পর্কযুক্ত ঘনিষ্টতা ছাড়া আর কিছুই না। কারও নামের সাথে মিল খুঁজে গোত্রভূক্ত করার প্রচেষ্টা সেখানে সেই অনিয়ন্ত্রিত ভালোবাসার প্রকাশ হতে পারে বৈকি! মাসকাওয়াথের লেখা পরিচিত বলেই তার সন্বন্ধে জানার আগ্রহ শেষ হয়ে যায় না।

বিশেষত তার এই প্রভাব বিতরণকারী যুগান্তকারী প্রতিভাটা নিয়ে সন্দিহান হয়ে যাই – এটাকে অনুপ্রেরণাব্যঞ্জক বলবো নাকি প্রভাবিত বলবো একজন সম্ভাবনাময় শিমূলের দীগন্তে – এ দায়িত্ব অন্যান্য পাঠকের হাতে থাকলো, যে কেবল পাঠক বলে পতিত থাকে না ধুসর গোধূলীর কাছে, আমার কাছে আগামী দিনের একজন সম্ভাবনাময় লেখকও!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।