আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্যাংককে লাল-সবুজের পতাকা

আমি কয়েক বছর ধরে ব্যাংককপ্রবাসী। ৪ সেপ্টেম্বর ছিল আমার ছেলে আবীরের স্কুলে (রামকামহ্যাং অ্যাডভেন্ট ইন্টারন্যাশনাল স্কুল) আন্তর্জাতিক ডের কর্মসূচি। এখানে বসবাসরত বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের ছেলেমেয়েরা এখানে পড়ে। স্কুলে এই দিন পালনের উদ্দেশ্য; বিভিন্ন দেশের জীবনযাপন ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানা এবং বিভিন্ন দেশ ও দেশের মানুষকে সম্মান প্রদর্শন করা। ছাত্রছাত্রীদের এটা বোঝানো, তারা বিভিন্ন দেশ ও সংস্কৃতি থেকে এলেও তাদের ভেতরে আসলে কোনো পার্থক্য নেই।

তারা সবাই মানুষ। কালো-সাদা ও ধনী-গরিব বলে কোনো ভেদাভেদ নেই। সেদিন আমিও গিয়েছিলাম স্কুলে ছেলের সঙ্গে। ঢুকতেই দেখি ছেলেমেয়েরা কেউ নিজ দেশের পোশাক পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। নানা রঙের পোশাক।

আবার কেউ নিজ দেশের পতাকা নিয়ে ছুটোছুটি করছে। কেউ দেশের জাতীয় পশুর প্রতীক-সংবলিত পোশাক পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। স্কুলটা বিভিন্ন দেশের পতাকা এবং রং দিয়ে সাজানো হয়েছে। অনুষ্ঠানের প্রথমেই ছিল প্যারেড। শিক্ষার্থীরা দেশ হিসেবে ভাগ হয়ে এতে অংশ নেয়।

প্রথমে আসে আমেরিকা। ফ্ল্যাগ হাতে একজন সামনে। তার পেছনে দুজন আমেরিকার জাতীয় পোশাক পরা। তাদের পেছনে আমেরিকান অন্যান্য ছাত্রছাত্রী। তারা যখন মূল মঞ্চের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল, তখন আমেরিকার জাতীয় সংগীত বাজানো হলো।

এরপর একে একে ব্রিটেন, ফ্রান্স, আফ্রিকা, ত্রিনিদাদ, টোবাকো, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, চীন, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম, লাওস। তারপর বাংলাদেশ। এরপর ভারতসহ অন্যান্য আরও কয়েকটি দেশ। প্যারেডে বাংলাদেশের পালায় লাল-সবুজের পতাকা নিয়ে সামনে একজন। তার সঙ্গে একজন; পাঞ্জাবি পরা একটা ছেলে।

তার হাতে বাংলাদেশের জাতীয় ফুল শাপলা। পেছনে অনেকটা ভারতীয় স্টাইলে জামা পরা একটা মেয়ে। তার সঙ্গে বাংলাদেশের রয়েল বেঙ্গল টাইগার সেজে আরেকজন। তাদের পেছনে বাংলাদেশি পতাকা হাতে অন্যান্য ছাত্রছাত্রী। তারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ বলে চিৎকার করছিল।

যখন হেঁটে মঞ্চের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল, তখন বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ বেজে উঠল। আমার চোখ দিয়ে তখন জল পড়ছে, কোনোভাবেই আটকাতে পারলাম না চোখের জল। কত দিন পর বিদেশের মাটিতে নিজ দেশের পতাকা দেখছি আর জাতীয় সংগীত শুনছি। নিজের দেশের প্রতি মায়া মনে হয় একেই বলে। আমারও মনে হচ্ছিল, ওদের সঙ্গে আমিও ‘বাংলাদেশ বাংলাদেশ’ বলে চিৎকার করি।

ছেলের স্কুলে আন্তর্জাতিক দিনের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আবারও বুঝলাম নিজ দেশ, জন্মভূমির সঙ্গে আসলেই কোনো কিছুর তুলনা হয় না। নিজ দেশ নিজ সন্তান ও মায়ের মতো। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.