যে ঘড়ি তৈয়ার করে - সে - লুকায় ঘড়ির ভিতরে
পরশু সন্ধ্যার পরে চারুকলায় বাউল গানের আসরটা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বাউলদের বিভিন্ন সেবা (জল খাবার পরিবেশন ইত্যাদি) সারতে সারতে, সাউন্ড সিস্টেমের টিউনিং ইত্যাদি হাবিজাবি শেষ করে মূল গান শুুরু হইতে হইতে প্রায় রাত 9টা।
আমি যতটা ভিড় মনে করছিলাম সেই তুলনায় অনেক স্বাচ্ছন্দের লোকজমায়েত হইছিলো। খুব বেশি গাদাগাদি না। আয়োজনকরা জানাইলো এই মূহুর্তে ঢাকার একমাত্র গানের আসর যেটায় কপের্ারেট স্পনসরশিপ নাই। তাই তারা শ্রোতাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে কনট্রিবিউট করার আহবান জানাইছে।
সব মিলায়ে প্রায় 50 এর বেশি বাউলের জমায়েত হইছে। কুষ্টিয়া ছাড়াও দেশের অন্যান্য জায়গার বাউলরাও আসছে। ছিলো ঢাকা, নারায়নগঞ্জের অতিথিও। চারুকলার ভিতরে গোল পুকুরের ভিতরে গোলচাদর বিছায়ে কেন্দ্রে বসা ছিলো বাউল সাধকেরা। লা ইটিং ছিলো খুব ভালো এবং পরিমিত।
বন্ধু জানাইলো সাধকদের নিজস্ব লেভেল অনুসারে তাদের কাপড়ের রঙ নির্ধারন হয়। কালো, গেরুয়া থেকে শুরু করে শীর্ষ সিনিয়ির সাধকরা গায়ে দেয় সাদা রঙের পোষাক। বেশিরভাগ বাউলই সেইখানে সাদা রঙের লুঙ্গি, পিরান, চাদরে আবৃত ছিলো।
অনুষ্ঠান শুরু হয় আক্রা দিয়ে, যেইটা মূলত যন্ত্রসংগীত। তারপরে এক এক জন বাউল একটা করে গান পরিবেশন করে।
প্রথমে বলে দেওয়া হয় এইটা বাউল গুরু লালনের স্বরণে অনুষ্ঠান তাই সব গানই থাকবে লালনের। গায়কদের অনেকেই অবহেলিত এই শিল্প ও বাউলকথাকে সবার মাঝে পৌছানোর জন্য প্রশংসা করে আয়োজকদের, কৃতজ্ঞতা জানায় নিজেদের ভাষায়।
প্রথমে গান পরিবেশষ করে ফকির ওয়ারেস শাহ। লালনের প্রথম গান, বাদশাহ আলম পনা তুমি দিয়া শুরু হয় গানের আসর। এরপরে একে একে আসেন:
ফকির বজলু শাহ
ফকির আজমল শাহ (ফরিদপুর)
আবদুল কুদ্দুস সাঁজি
শাজাহান মুনসী (মানিকগঞ্জ)
বাউল আকলির মা
বদু শাহ
ফকির হুমায়ুন শাহ
সফি মন্ডল
ওস্তাদ টুনটুন (কুষ্টিয়া)
পাগলা বাবলু
বাউল আবদুল রাজ্জাক
এবং আরো অনেকে
-----------------------
বিশেষ আইনের কারনে রাত 11টায় গেট বন্ধের ঘোষণায় অনেকে উইঠা পড়লে আমিও উঠে পড়ি।
পরের দিন সকালে একটা কাজ থাকায় পুরো রাত হওয়া গানের আসরে থাকা হলো না, ইচ্ছে থাকলেও। শেষের দিকে দারুন সব গান, দারুন সব গলা আসা শুরু হইলো। অনেকের সাথে অতৃপ্তি নিয়া আমিও রওনা হই ঘরের দিকে।
-----------------------
ব্লগারদের ভিতরে দেখা হইলো যীশু, মাশা, বাকীর সাথে। আসছিলো আরো কয়েকজন যেমন রাহা, ব্রাত্য রাইসু সপরিবারে।
তবে সবার সাথে দেখা হয় নাই।
------------------------
আমার ক্যামেরার ব্যাটারী শেষ হয়ে যাওয়া বেশি ছবি তোলা যায় নাই। ফ্যাশ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা, কাছে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞায় খুব মন খুইলা ছবি তোলাও সম্ভব ছিলো না জুম বিহীন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।