কবে নির্বাচন হবে এই নিয়ে উত্থিত সন্দেহের নিরসন হয় নি এখনও। সেনাবাহিনীত সহায়তায় বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার যখন জানুয়ারীর 12 তারিখে ক্ষমতার অধিগ্রহন করে এর পরপরই বাজারে গুজব ছিলো নু্যনতম 2 বছর মেয়াদে তারা থাকবে। তবে আওয়ামী লীগের নেতৃ শেখ হাসিনা জুনের ভেতরে নির্বাচনের দাবী জানিয়েছেন আর বি এন পির প্রধান খালেদা জিয়া দাবি জানিয়েছেন জুলাইয়ের ভেতরে নির্বাচনের।
বোধ হয় বাংলাদেশেও পাকিস্তানী গনতন্ত্র আমদানী হবে। সেখানে বর্তমানের পারভেজ মোশাররফ গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন।
তিনি সফল বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রিয় গনতন্ত্র প্রবর্তিত হয়েছে সেখানে। স্বৈরতন্ত্র বিরোধী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেহেতু প্রকাশ্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা অব্যাহত রেখেছে- তাই পাকিস্তান গনতান্ত্রিক।
বাংলাদেশ গনতান্ত্রিক হয়ে উঠবে- মইন উদ দৌলার ঝটিকা সফর ও মত বিনিময় সভায় সবাইকে গনতন্ত্রের সুফল পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস- ফখরুদ্দীন সাহেব গণতন্ত্র পুনঃ প্রতিষ্ঠা করবেন, দেশটাকে গনতন্ত্রের পথে নিয়ে গিয়ে একটা নিয়মতান্ত্রিকতা স্থাপন করে অবশেষে নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন।
তবে প্রশ্নটা আসলে এখানেই, কখন তাদের মনে হবে বাংলাদেশের অপুষ্ট শিশু গনতন্ত্র স্বাবলম্বি হয়েছে- অর্ধেক পৃথিবী দুরের লাঠির সহায়তায় তাকে দাঁড়াতে হবে না। কখন তাদের মনে হবে একটা শৃঙ্খলা জন্ম নিয়েছে- রাজপথ তৈরি হয়েছে- গনতন্ত্রের রাজপথ তৈরি শেষ এখন গাছের ফল কুড়ানোর সময়।
বিভিন্ন রকম রাজনৈতিক সংশোধনের প্রস্তাবনা আছে তাদের বিবেচনায়। জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরি উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা- দীর্ঘ মেয়াদি এবং অর্থ অপচয়কারী- শুরু হলে সমাপ্ত হতে 1 বছর লাগবে। এ বিষয় নিয়ে একটা কমিটি গঠিত হয়েছে শুনেছিলাম, তারা পর্যালোচনা করে দেখবে আসলে ছবি সহ ভোটার তালিকা- ছবি সহ জাতীয় পরিচয় পত্ড় কিংবা ভোটার তালিকা- বাংলাদেশে কি প্রয়োজন?
আয়োজন করে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের কথা ভাবছেন- নির্বাচন কমিশনকে স্বয়ংসম্পূর্ন করার কথা ভাবছেন। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনে নিজস্ব আইন রক্ষা কারী বাহিনী হিসেবে সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করতে পারবে এমন বিধান রাখারও প্রস্তাবনা আছে। নির্বাচন আচরণ বিধি প্রণয়ন ও প্রয়োজনে সংশোধন করা হবে।
প্রার্থীর 8 তথ্য নিয়ে ডঃ কামাল হোসেনের ইমোশোনাল ব্ল্যাক মেইলিংএ চটক ছিলো তবে বিষয়টা অনৈতিক। অনুভুতি ডিয়ে আদালতকে প্রভাবিত করা খুব বেশী ফিল্মি আচরণ হয়ে যায়- এট আইনের উপর হস্তক্ষেপ করা। প্রার্থীর 8 তথ্য হয়তো গনতন্ত্রের জন্য ভালো হতে পারে তবে " আমার মৃতু্যর পর জানাযায় যাবেন না" এমন হুমকি দেওয়ার বিষয়টা শিশুতোষ ইতরামো।
ভোটার তালিকা প্রণয়ন করতে গিয়ে আজিজ সাহেবের নেতৃত্বে চলা নির্বাচন কমিশন 130 কোটি টাকা অপচয় করেছেন। নির্বাচন কমিশনার 3 জন এবং নির্বাচন কমিশন সচিবকে এর জন্য দায়ী বিবেচনা করা যয়া।
রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি সাধনের জন্য এই অপচয়ের 5 শতাংশ জরিমানা করা প্রয়োজন তাদের।
কোন রাষ্ট্রিয় ভবনের কাঁচে ঢিল ছুড়লেও 5 বছরের জেল হতে পারে। আগুন লাগালে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের বিধান আছে- এই 130 কোটি টাকায় দেশের সবগুলো সরকারী দপ্তরের জানালার কাঁচ লাগানো সম্ভব। সম্ভব পর্যটন মন্ত্রনালয়ের মতো একটা স্থাপনা নির্মাণ।
আজিজ সাহেব আদালতের স্থগিতাদেশ অমান্য করে যেসব রাজনৈতিকের প্রভাবের এমন করলেন তাদেরও দুষ্কমের্র সহযোগী বিবেচনা করা প্রয়োজন।
বিগত 5 বছরে মন্ত্রি পরিষদের ব্যয়ের খতিয়ান থেকে জানা যায় সবচেয়ে বেশী বিলাসী জীবন যাপন করেছেন অর্থমন্ত্রি সাইফুর রহমান- তার খরচের পরিমান ছিলো সবচেয়ে বেশী- সবচেয়ে কম খরচ করেছেন শিল্পমন্ত্রি মতিউর রহমান নিজামী।
সাংসদদের খরচের খতিয়ান দেখলেও হয়তো অপব্যয়ী সাংসদদের তালিকা পাওয়া যাবে। ব্যক্তিগত সম্পদের হিসাাব যেমন গুরুত্বপূর্ন, আমার মনে হয় নির্বাচিত সাংসদদের ব্যয়ের খতিয়ানও তেমন গুরুত্বপূর্ন একটা বিষয়।
তাদের বরাদ্দকৃত বাজেটের অতিরিক্ত যেকোন খরচ উপযুক্ত কারন ব্যতিরকে তাদের কাছ থেকে আদায় করতে হবে। যথোপযুক্ত খরচের বিষয়ে বলার কিছু নেই তবে সরকারী সম্পদ অপচয়ু রোধ করার জন্য প্রতিবছর তাদের খরচের খাতওয়ারী বিবরণ প্রকাশ করা প্রয়োজন।
এমন বিধি রাখা প্রয়োজন, যদি প্রমানিত হয় তারা অপচয় করছেন তবে তাদের বেতন থেকে কিংবা ব্যবসা থেকে কিংবা যেকোনো প্রকারেই হোক সেটা আদায় করবে সরকার। যদি তারা রাষ্ট্রিয় কোষাগারে অপচয়ের সমপরিমান অর্থ ফেরত না দেন তাদের জেল জরিমানার বিধান রাখা প্রয়োজন, একই সাথে তাদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার বিধানও রাখা প্রয়োজন। দূর্নীতিবাজ সাংসদ অগ্রহনযোগ্য তবে অপব্যয়ী সাংসদ আরও ভয়ংকর।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যর্থ মুল্যনিয়ন্ত্রনে। তবে মুল্য নিয়ন্ত্রনে তাদের ব্যর্থতার একটা কারন হলো তাদের পরিকল্পনাহীনতা।
পরিকল্পনাহীনতায় ভুগছে বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তাদের উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যর্থতার অনেকাংশই তাদের উপযুক্ত পরিকল্পনার অভাব। ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদ করার পর তাদের পুনর্বাসনের কোনো প্রকল্প নেওয়া হয় নি। এটা কবে নেওয়া হবে এ বিষয়ে নির্দেশনা নেই। রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য কোনো পরিকল্পনা নেই তবে তাদের উক্তিতে আছে এই সব ভাবগম্ভীর কথা।
তারা পরবর্তি নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করবে না কথা বানিজ্য করবেন এটা বোধ হয় ঠিক করে উঠতে পারেন নি।
বিভিন্ন উপদেষ্টা অবশ্য এখন উদ্বোধন শুরু করেছেন। সবচেয়ে এগিয়ে স্কয়ার গ্রুপের তপন চৌধুরী তিনি গত 2 সপ্তাহে অন্তত 3টা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথীর পদ অলংকরণ করেছেন, করেছেন কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন। গলফ খেলা উদ্বোধনে তার ভুমিকা কি আমি জানি না।
আইন উপদেষ্টা ফাঁসির আদেশপ্রাপ্ত জঙ্গিদের সাংবাদিকদের সামনে হাজির করবেন না।
তাদের ফাঁসির আদের বহাল রেখেছে এবং আগামী 1 মাসের ভেতরে তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হবে। তবে সংবাদ সম্মেলন করার এবং নিজস্ব কথা প্রকাশের অধিকার আছে তাদের। অবশ্য জরুরী আইনের অপব্যবহারের দৃষ্টান্ত রাখছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টারা। তারা পুবর্রীতি মেনে বিভিন্ন প্রকল্পের গাড়ী ব্যবহার করছেন।
রাজনৈতিক অস্থিরতার কারনেই আসলে মুল্যস্ফীতি ঘটছে এমনটা দাবী কিংবা জনরব ছিলো তবে সেটা ভিত্তিহীন প্রমানিত হয়েছে এখন।
মানুষের আয় বাড়ছে না ব্যয় বাড়ছে। প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের টিকে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। ব্যবসায়ীদের ভেতরে শুধু উচ্চপর্যায়ের ব্যবসায়ী ছাড়া আর কেউ উপকৃত হচ্ছেন না এই ব্যবস্থায়।
নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত সাহেব পূর্বে যেসব বড় বড় বানী দিয়েছেন তা এখন গিলে ফেলেছেন পরিস্থিতির কারনে। তারা ঠিক কবে নির্বাচন সংক্রান্ত কাজ শুরু করবেন তা নিশ্চিত না আমি।
আদৌ হবে কিনা তাও নিশ্চিত না। তবে কোনো এক অজানা কারনে বিপুল সংখ্যক রাজনীতিবিদ সংসআকের জন্য অনির্দিষ্ট সময় দিতে আগ্রহী। চলছে চলুক না, সমস্যা কি? এমন ভাব তদের। এর ভেতরেই ডিপ সি পোর্ট তৈরীর বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার। বিরাষ্ট্রিকরণ ও চট্রগ্রাম বন্দরের অধিকার বিদেশী কোম্পানীর কাছে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
এডিপি বিভিন্ন সময়ে উপস্থিত থাকছে এসব সিদ্ধান্ত গ্রহনের সময়।
ইউনুস সাহেবের দোষ দিয়ে কি লাভ হবে। ইউনুস সাহেব আসলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার যা করছে বর্তমানে তাই করতে চেয়েছেন। ইউনুস সাহেবের আলাদা করে রাজনৈতিক দল গঠনের প্রয়োজন নেই। যে দেশের শাসক বর্তমান তত্ত্বাবধায় সরকার তার ভরাডুবির জন্য আসলে কোনো রকম রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রয়োজন নেই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।