আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিষের দাবড়ানি, মাঝখানে এক বাইদানি

বেঁধেছে এমনও ঘর শুন্যের ওপর পোস্তা করে..

বাইদানিরা আগে থাকতো নায়, উঠছিলো গাঁয়, কেউকেউ এখন আসছে ঢাকায়। সাপখেলা রাইখা তারা সাপ দিয়া ভয় দেখায় আর পয়সা খায়। ছোট্ট সাপের বাঙ্ হাতে তিন বাইদানি দেখিয়া আমি ভয় খাইলাম, ফুটপাত ছেড়ে রাস্তা ধরলাম। আমি ফুটপাত ছাড়লে কি হবে, বাইদানি আমারে ছাড়েনা। একহাত দিয়া জামা খামচায়ে ধরে অন্য হাতে সাপের বাঙ্ উচু কইরা জপতে থাকে, 10 টাকা দে, 10 টাকা দে।

আমি মোচড়াই ঐ বাইদানির সাপের মতোই, বাইদানি ছাড়েনা। বরং প্যাচ দিয়া ধরে তার ঐ সাপের মতোই। তার বদন বরাবর আমার আখিপাত ঘটে নাই অদ্যাবধি। না পেরে পকেটে হাত ঢুকাই, দেখি 10 টাকা নাই। 20 টাকার নোট বাইর করে তার হাতে দিলে সে বুঝে উঠতে পারেনা যে ঘটনা কি? এমন সময় আমি প্রথম তার পানে চাই।

আল্লাহর কসম এমন বাড়ি আমি জীবনেও খাই নাই। কালো পেড়ে হলুদ শাড়ির ঘোমটায় আধো ঢাকা মুখটা কোন মানুষের না, একটা পরীর-পাঁখির-ফুলের-চাদের-জোছনার, না দেখা কোন বিহবল নূর অথবা ব্যাখ্যাতীত কোন অচিনতার। 20 টাকার নোটটা নিয়া তার বিভ্রান্তি চলমান থাকতে থাকতেই নিজের বিহবলতার ঘোর কাটাতে আমি বলে উঠি, রাইখা দাও, টাকা তো সাপ দেইখা দি নাই কইন্যা, টাকা দিছি তোমারে দেইখা। এইবার বাড়িটা সে-ই খায় যে-টা আমি খাইছিলাম। মিলি সেকেন্ডের মতো টাইম আমার চোখে চোখ দিয়া আবার নামাইয়া নিয়া ঘুরে সে রওনা হয়।

আমি তাকাই তার পেছন দিকে। সে এবং কাটাবন মোড়ের ল্যাম্পপোস্ট যখন পরস্পরকে মোকাবেলা করছিলো তখনই একতাল অন্ধকার ঝপ কইরা আইসা আমার ঘাড়ের উপরে চড়ে। হায়রে তার বিষ! তারপর সারাটা রাইত সে আমারে দাবড়ায় একেবারে শেষ রাতের স্বপ্ন অবধি। আমি চিউচিউ করে একবার শুধু বলতে পারি, মুই কি হরছি? এইবার আস্ত এট্টা আছড়ানি দিয়া তারপরে আমারে নিংড়ানি দেয় ভিজা কাপড়ের মতো করে। আমি মনে মনে কান্দি আর কই, বাইদানি রহম কর, আমারে রহম কর।

ঝাইড়া বিষ নামায়ে দাও। বাইদানি রহম করে। পরনে লাল শাড়ী, কোমরে পিছা শুধু হাতে সাপের বাঙ্রে বদলে বীণ। কোথায় যেন শব্দ হয় রিনঝিন, রিনঝিন। বাইদানি শব্দ কইরা হাসে আর বলে, ডর দেহাইতে আসি নাই, বিষ নামাইতে আইছি।

বীণ বাজে কিন্তু বিষ আর নামেনা। বীণের আওয়াজে অস্থির বিষ আমার গায়ের মধ্যে মোচড়ায়, আর বিষাক্ত দাতে আমারে কামড়ায়। আমি অবাক হয়ে বাইদানির পানে চাই। সেখানে কৌতুক মেশানো হাসি। এইবার সে হাসে হো হো করে।

বিষ নামানোর মন্ত্র তো দি নাই। ক্যান দিমু? তুমি না রসের ব্যাপারী?

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।