আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অকস্মাৎ আরোগ্য লাভ:

বাংলাদেশ নিয়ে ভাবনা, প্রত্যাশা ও সম্ভাবনার সংগ্রহমালা

সবাই খুব টেনশনে ছিল। রোগ পুরনো। আরোগ্যের আশা কেউ করেনি। সবাই ভেবেছে দু:সহ যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে রুগী বিদায় নেবে। অনেক চিকিৎসক বলেছিলেন, যে ক'দিন বাঁচে।

রোগ তো শুধু একটা ছিল না। কথায় বলে না, সারা অঙ্গে ব্যথা, ওষুধ দেব কোথা? রোগ ছড়িয়ে পড়েছিল সারা শরীরে। ক্ষত দেখা যাচ্ছিল সর্বএ। ভাইরাস আর ব্যাক্টেরিয়া রুগীর সারা শরীর কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল। শরীরের অর্গানগুলোও নাকি নস্ট হয়ে গিয়েছিল।

আমরা সবাই খুব বিমর্ষ। আমরা পরিণতি জানতাম, কিন্তু তার পরেও আমরা আশা বেঁধে ছিলাম যে রুগী আরোগ্য লাভ করবে। তারপর যা হলো তা খুবই নাটকীয়। সবাই যখন হাল ছাড়লেন, তখন হঠাৎ করে আমাদের প্রিয় জলপাই মামা এসে দোরগোড়ায় হানা দিলেন। আমরা জানতাম আমাদের জলপাই মামা বড্ডো ক্ষমতাধর।

তার রয়েছে নানান কানেকশন। তারপরেও তার শত ব্যস্ততার মাঝে মুমুর্ষ এই রোগীর জন্য তিনি কোমড় বেঁধে মাঠে নামবেন এটা কেউ ভাবেনি। মার্কিন মুল্লুক থেকে ডাক্টার আসলেন, সার্জনরাও আসলেন। কনসালটেন্টরা আসলেন। রুগীর চারপাশ ঘিরে তার চিকিৎসা করলেন।

হার্ট সার্জারী হলো। কিডনী সার্জারী হলো। ব্যাক্টেরিয়া আর ভাইরাসদের এন্টিবায়োটিকের কড়া ডোজ দিয়ে রুগীর শরীর থেকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করা হলো। বাইরের থেকে রক্ত ইনফিউশন করা হলো। বিদেশী ডাক্টার আর কনসালটেন্টরা বললেন, যতো সাহায্য লাগবে আমরা দেবো।

কিন্তু রুগীর আরোগ্য চাই। রুগীকে ইনকিউবিটরে রাখা হলো। বাইরের জীবাণুরা আর পরাজীবিরা যাতে রুগীকে আবার আক্রান্ত না করতে পারে। এভাবে কতোদিন রুগী বাঁচবে কেউ জানে না? অবশ্য আমাদের ঘরের সবার মুখে হাসি। জলপাই মামার উচ্ছসিত প্রশংসা।

তার সত্যি কোন তুলনা নেই। এ বাড়ীর অন্ন খেয়ে বড়ো হয়েছেন, তাই নিমকের দাম দিচ্ছেন। আমরা উল্ল্লসিত। রুগী নিজে নিজে শ্বাস নিতে পারছে। একটু একটু হাঁটতেও পারছে।

আমরা রুগীর শরীর থেকে অপসারিত টিউমার আর পরিত্যক্ত অর্গানগুলো দেখে আনন্দে কাঁদছি। আমরা অনেকে হাত তুলে জলপাই মামার জন্য দো'আ করছি। মামা, তুমি শত বছর বাঁচো। এরকম খুশীর সময়ে রান্না ঘরে ঢুকে মাকে জিগ্যেস করলাম, "মাগো রুগীর চিকিৎসা তো হচ্ছে। কিন্তু তারপর জলপাই মামা আমাদের ঘর থেকে কবে বিদায় নেবে? আবার নয় বছর লাগবে না তো জলপাই মামার তার নিজের বাড়ীতে ফিরতে"? মা আঁচল টেনে চোখের পানি মুছে বলেন, "বাবা তাতো জানি না"।

মায়ের চোখের উদাস দৃস্টির মধ্যে এতোটা অনিশ্চয়তা আর কখনো দেখিনি...আমাদের সকল আনন্দের মাঝেও বেদনার অব্যক্ত পংক্তিগুলো কি শুধু চোখের আড়ালেই বাস করে...? নিয়মিত পড়ুন বাংলা গ্রুপ ব্লগিং [link|http://deshivoice.blogspot.com/|

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।