আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিচিত্রতা: সমকামিতা

স্মৃতিচারণ ও এলোমেলো ভাবনা। বেশিরভাগই জগাখিচুড়ি।

সমকামিতা নিয়ে একজন কিছুদিন আগে ব্লগে লিখে অনেকের চক্ষুশূল হয়েছেন। সত্য কথা হলো আমরা এই বিষয়টির পক্ষে হই বা বিপক্ষে, সমকামিতা উন্নত দেশে আছে, থাকবে ও সমকামীদের প্রতি এসবদেশের সুশীল সমাজের ব্যাপক সমর্থন রয়েছে। আমার জানা মতে বাংলাদেশেও অনেক সমকামী রয়েছেন, যারা সমাজ ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের কথা চিন্তা করে নিজেদের এই বিশেষ পরিচিতিটা গোপন রেখেছেন।

যাই হোক, এদেশে থেকে সমকামিতা নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অপ্রীতিকর পরিসিহতির মুখোমুখি হয়েছি, অনেকের সাথে দীর্ঘ আলোচনা করেছি, এমনকি অনেক সমকামী ব্যক্তিত্বের সানি্নধ্যে এসেছি প্রফেশনের খাতিরে। এদের সম্পর্কে আমার একটাই মূল্যায়ন, তা হলো বিশেষ বৈশিষ্ট্য বাদে এরা আমাদের মতোই মানুষ ও ক্ষেত্রবিশেষে এদের কর্মনৈপূণ্য আমাদের চেয়ে অনেক বেশি। এদেশে কপের্ারেট লেভেলের অনেক চাকরিতে সমকামীদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা চোখে পড়ার মত। অনেক চাকরিদাতাই এদের প্রধান্য দিয়ে থাকেন কারন একটাই তা হলো কাজের প্রতি এদের একাগ্রতা। যখন ইউনিভার্সিটিতে পড়তাম, তখন আমার একটা কোর্স নিয়েছিলেন একজন শিক্ষক, যিনি ছিলেন গে।

শুধু আমি কেন? আমার সাথে ওই কোর্স করা সবাই এক বাক্যে স্বীকার করবেন যে তার মত শিক্ষক খুবই বিরল। প্রফেশনের প্রতি তার ডেডিকেশন চোখে পড়ার মত। আমরা সবাই তাকে খুব শ্রদ্ধা করতাম এবং এখনও করি। তবে মজার ব্যাপার হলো পড়াশুনার ব্যাপারে কোন সমস্যা হলে আমরা সাধারণত শিক্ষকদের জন্য নিধর্ারিত রুমে যেতাম। কিন্তু উনার ব্যাপারে আমরা ছেলেরা একটু অস্বস্তিবোধ করতাম।

উনি অবশ্য সেটা জানতেন ও বুঝতেন, তাই কোন ছেলে ফোন করলে উনি কখনই উনার রুমে যেতে বলতেন না। উনি সবসময় নিজেই ক্লাসে চলে আসতেন। গে-রা সাধারনত লাজুক, নম্র ও বিনয়ী হয়। অন্যদিকে লেসবিয়ানরা হয় রাফ অ্যান্ড টাফ। বছর দু'য়েক আগে আমি ট্রেনে করে বাসায় আসছিলাম ইউনিভার্সিটি থেকে।

পথিমধ্যে এক স্টেশনে ট্রেন থামতেই এক উঠতি বয়সী ফাজিল ছেলে সাইকেল নিয়ে দুপ-দাপ করে ট্রেনে উঠতে গিয়ে ট্রেনের দরজার কাছে থাকা দুই লেসবিয়ানের একজনকে ধাককা মেরে বসে। বেচারা স্যরি বলার সময়টুকুও পায়নি তার আগেই মেয়েটির পার্টনার কষে লাথি হাঁকিয়ে বসে। লাথি খেয়ে বেচারা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লে মেয়েটি খেঁকিয়ে উঠে "ইউ পিস অফ শিট......আর ইউ ওয়েটিং ফর মোর?" বলাইবাহুল্য ছেলেটি আর কথা না বাড়িয়ে কেটে পড়ে ওখান থেকে। এখানে "গে" শব্দটা অনেকসময় গালি হিসাবে গণ্য হয়। খুবই অপমানকর একটা ব্যাপার হলো কোন ছেলেকে যদি কোন মেয়ে বলে বসে "ইউ আর সো গে"।

অনেকটা আমাদের দেশে কাউকে নপুংসক বা হিজড়া বলার সমপযর্ায়ের। আর একটি মেয়ের কাছ থেকে এরকম মন্তব্য শোনা রীতিমত একটি ছেলের পৌরুষের উপর আঘাত। যাইহোক সব শেষে একটা ঘটনা বলে আমি শেষ করব। আমার কর্মক্ষেত্রে দুই লেসবিয়ান আছে। একজনের নাম লুসি, অন্যজন হলো জেনিফার।

ঘটনাক্রমে এরা দুইজন হলো জুটি। এদের মধ্যে জেনিফারকে দেখলে মনে হয় সে একজন মানবী। কিন্তু লুসির নাম ছাড়া আর কোন শনাক্তকরন বৈশিষ্ট্য নেই। তবে দু'জনেই খুব ভালো মানুষ, অফিসের সবাই তাদের খুব পছন্দ করে। একদিন আমি কথা বলছি সিকিউরিটি সুপারভাইজার, গ্যারির সাথে, তখন দেখি লুসি আর জেনিফার কাজ শেষে বাসায় যাচ্ছে।

ওদের দেখে গ্যারি আমাকে বলে "10 ডলার বাজি, লুসি কখনও কোন ছেলের সাথে বিছানা শেয়ার করেনি। " আরে মুসিবত। আমি গ্যারিকে বলি এটা সম্ভব না। আমি বাজি -টাজির মধ্যে নাই। গ্যারি তখন আমাকে বলে "কাম অন।

ডোন্ট বি এ চিকেন"। এবার গেল মেজাজ খারাপ হয়ে। বললাম "ওকে। আই এম ইন। শি স্লেপ্ট উইথ অ্যা গাই এট লিস্ট ওয়ান্স ইন হার লাইফ"।

উপসিহত বাকি লোকজন মজা পেয়ে যায় ও দৌড়ে গিয়ে লুসিকে ধরে নিয়ে আসে। লুসিকে জিজ্ঞাসা করতেই জানা গেল সে কখনই কোন ছেলের সাথে বিছানা শেয়ার করে নি। আমি মনে মনে নিজের 14 গুষ্টি উদ্ধার করতে থাকি আর বলি "যাহ শালা!! গেল 10 ডলার। " পুনশ্চ: পুরা টাকাটা লস হয়নি। ওই দিন বিকালে গ্যারি আমাকে পাবে নিয়ে গিয়েছিল।

আমার জন্য বরাদ্দ ছিল কোক আর গ্যারির জন্য বিয়ার।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।