আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভীষণ মর্মান্তিক ...( মৃতু্যর সময় কতই না অনিশ্চিত!!!!!!!)

[অন্যর দোষ না খুঁজে আগে যদি সবাই নজের দোষটা খুঁজত তাহলে বোধহয় সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেত]............... [পথের শেষ নেই, আমার শেষ আছে, তাইত দ্বন্দ্ব] http://mamunma.blogspot.com/

"কক্সবাজার আসছি, তোর ওখানে থাকব", মোবাইলের ওপাশ থেকে কথা গুলো ভেসে এলো তাজিকের কণ্ঠে। চিটাগাং অনলাইনের(সি ও এল) সিইও তাহমীদ আনোয়ার তাজিক। বললাম, " আমি তো ঢাকায়, রাতে রওয়ানা দেব, সকালে পৌঁছাব। " বলল," ঠিক আছে সকালে দেখা হবে, আমরা তিনজন আসছি । আমি , সিদ্দিক আর রাজীব।

থাকার জন্যে রেষ্ট হাউসে বলে দে..." বলে দিলাম ফোন করে কক্সবাজারে রেষ্ট হাউসে। 13 জানুয়ারী বিকেল 5:15 এর মত সময় হবে তখন ঘড়িতে। কঙ্বাজারে আরেক বন্ধু সুমন আমার রুমে আমার সাথে থাকে , জিপিতে আছে। ফোন ধরল ঘুমাতে ঘুমাতে। সুমন কে ওরা আমার আগেই কল দিয়েছিল।

সুমন কে আরও বলে দিলাম রেস্ট হাউস এ ওদের কে নিয়ে যেতে। সময় কাটছিল বাসায় একা একা চিন্তায়; আব্বু অসুস্থ , ও অবস্থাতেই আপুর বাসায় গেছে সবাই । রাতে 10:50 এ বাসে উঠতে হবে। একটু নেট এ ঢুকলাম। কদিন সময়ই পাইনি।

ব্লগের কৌশিক দার সাথে কথা হলো ...এবং কিছুক্ষণ পরেই সুমন ফোন দিল। ঘুম কেটেছে তখন। বলল," ওরা কখন রওয়ানা হয়েছে রে? সিদ্দিকের মোবাইল বন্ধ পাচ্ছি, তাজিকের নম্বরটা এসএমএস করে পাঠা। " একটু পরেই সুমনরে কল এল। আটটার মত বাজে তখন মোবাইলের ঘড়িতে ।

কিছু বুঝে ওঠার আগেই অকস্মাৎ কানে এল সুমনের কণ্ঠ থেকে যন্ত্রের মত তরঙ্গে দুর্ঘটনার খবর। মাথায় ঠিক ক্যাচ করতে পারছিলাম না প্রথমে। কিন্তু স্পষ্ট শুনলাম। ওদের প্রাইভেট কারে চকোরিয়ার কাছে কোথাও মারাত্মক একসিডেন্ট ঘটেছে। সিদ্দিক স্পট ডেড।

ওহ নো। সুমন বলল ও কঙ্বাজার থেকে রওয়ানা দিচ্ছে ওফিসের গাড়ী নিয়ে চকোরিয়ার দিকে। ভ্যাবাচ্যকা অবস্থা , বুঝতে পারছিনা কি করব। শাহরিয়ার কে জানালাম। তাজিকের বাসায় বা অফিসে বললাম জানায়ে দিতে।

ফোন করলাম সিদ্দিকের মোবাইলে , উদ্ধারকারী স্থানীয় কোন একজন কথা বলল। ঐ ব্যক্তিই সুমন কে জানায়। জানলাম আরেকটু তার কাছ থেকে। ফোন করলাম তাজিকের বাসার নম্বর জানতে পারে এমন আরোও দুএকজন কে। ... ...ভীষন মন খারাপ নিয়ে যখন বাসে উঠছি সুমন খবর দিল রাজীব ও মারা গেছে।

আার তাজিককে চিটাগায় মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে। ... কি করুন , দুটি তরতাজা প্রাণ নিমেষে ঝরে গেলো। কি মর্মান্তিক। কি হৃদয়বিদারক। উহ! সিদ্দিক , কি প্রচন্ড মেরিটোরিয়াস একটি ছেলে ।

স্ট্যান্ডার্ট চার্টাড ব্যাংক এ জব করত। এইতো কদিন আগেই ঘুরে গিয়েছিল আমার এখান থেকে। বিশ্বাস করতে মন চায়না। আজ সে নেই। রাজীবের সাথে দেখা হয়নি ভার্সিটি লাইফের পরে আর।

বাইরে গিয়েছিল এম এস করতে শুনেছিলাম। ...আর কোন দিন রাজীবের সেই মায়া মায়া নিরীহ চেহারাটা দেখবনা। কত অল্প সময়ে কত কিছু অলটপালট হয়ে যায়। আল্লাহ তায়ালা ওদের দুজনের মাগফেরাত দান করুন , দোয়া করি। তাজিকের অবস্থা শুনলাম একটু ভাল ।

কিন্তু বুঝতে পারছিনা কতটা। সবাই দোয়া করবেন যে এখনও বেঁচে আছে সেই তাজিক যেন সুস্থ সবল হয়ে বেঁচে থাকে। 5 দিন পরে ব্লগে লিখছি। কিন্তু তাও এই করুন ঘটনা। লিখতে গিয়ে বারবার কেঁপে কেঁপে উঠছে হাত।

চোখ ছলছল। সারারাত গাড়ীতে কেটেছে উজাগর রাত। চোখ পুরো বন্ধই হচ্ছিল না বাসে। রাতে 2টায় সুমন চকোরিয়া হতে ফিরেছে কক্সবাজার। ওর মুখে শুনলাম দুর্ঘটনার ভয়াবহতা আরও খানিক।

সিদ্দিকের বিভৎস চেহারার ভয়াবহ বর্ননা। জানলাম চকোরিয়ার সেই দীর্ঘ স্পিড ব্রেকার বসানো জায়গাটাতেই ঘটেছে দুর্ঘটনা। তাজিক ড্রাইভ করছিল। হঠাৎ ব্রেকে গাড়ী ঘুরে যায় আর তখনই সামনে থেকে বোরাক বাস ..... কি ভীষন কষ্ট ...ওরা যে আমার এখানে রেষ্ট হাউসে থাকবে বলেছিল... এই করুনন কাহিনী পোষ্ট করার পরই দেখলাম মিথিলা মনির দুঃখজনক মুতু্যর খবর। ...আচ্ছা একসংগে এত মৃত্যুর খবর কেন শুনতে হয়? 14ই জানুয়ারী2007 সকাল 9:40


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।