অতি দক্ষ মিথ্যুক না হলে সত্যবাদিতা উৎকৃষ্ট পন্থা
অনেক দিন পর দিনাজপুরে আসলাম। এখানের মানুষের ভাষা ভুলেই যাচ্ছিলাম। এখানে যারা থাকে তাদের কথার একটা আলাদা টান আছে, একেবারে লোকভাষার মতো না, রংপুরের ভাষার টান যেমন তেমন কথাও বলে কেউ কেউ তবে টাউনের মানুষের কথার মিষ্টতা আলাদা।
যদিও বিশ্বায়নের রোগ ধরেছে এখানে এর পরও অনেক ভাষার আগ্রাসনেও মাঝে মাঝে সেই প্রিয় স্বর শোনা যায়। ' অনেক দিন পর আসছে এখন কি আর যাবার মোনায়" এই কথাটা আসলে আলাদা ভাবে কিছুই প্রকাশ করে না কিন্তু ইচ্ছা না করার প্রতিভাষা হিসেবে 'মন করে না' এর অপভ্রংশ ' মোনায় না' খাস দিনাজপুরের।
তেমন ভাবে আলাদা একটা শব্দ যা অনেক দিন ব্যবহার করি নি তা হলো 'খিলাতে হবে, খিলালি না' অন্য কোনো জায়গায় এই খাওয়ানোর বদলে খিলানো ব্যবহার হয় না। আজকে ও খিলাবে, শালা এমন চুতিয়া খিলালো না। েইসব শব্দ শুনেই বেড়ে ওঠা আমার। এইসব শব্দ শুনে স্টেশন থেকেই মনটা অন্যরকম হয়ে গেলো। দেখা হলো পুরোনো বন্ধুর সাথে।
সবাই ঢাকায় যায়। টাউনের মানুষ যায় রাজধানীতে, ওখানে জৌলুস, জীবনের অয়োজন কিংবা অর্থের প্রকোপ বেশী। এখানে এসে তাই সবার সাথে দেখা এখনও হয় নি, যারা কোনো ভাবেই এরকম রাজধানীর লোভের বাইরে তারাই আছে, আর আছে বলেই এখনও সন্ধ্যায় দেখা হয় বন্ধুর সাথে।
একটা বিষয় সব সময়ের জন্য সত্য, আমাদের সাংস্কৃতিক ধারনার বদল ঘটে , এটা সার্বক্ষনিক বিবর্তন। আমাদের কলেজের প্রথম বর্ষের আচরন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের সাথে মেলে না।
এই বিবর্তনের ধারাটা আবার বিশ্ববিদ্যালয় শেষে আরেক রকম হয়ে যায়। এর পর কর্মজীবনের সাংস্কৃতিক বিবর্তন। তাই হঠাৎ গত কাল ঠিক কলেজের প্রথম দিনের সস্তার সিকতার মুখোমুখি হয়ে বেশ বিব্রত হলাম। একটা সময়ে শাররীক বিষয়াসয় নিয়ে বেহুদা আলোচনা করার অখন্ড অবসর ছিলো এখন তেমন আকর্ষনীয় মনে হয় না এই বিষয়ে আলোচনা, তবে কেউ যদি আনন্দ পায় তাকে সেই আনন্দনিরত করতেও ইচ্ছা করে না যতক্ষন না সেই শরীর ঘনিষ্ঠতার আলোচনা আমাকে ঘিরে শুরু হয়।
উদাসীনতা- অনিচ্ছুকতা এসবের সমাধান না, বরং সুন্দর করে বলতে হয় আসলে এই আলোচনা বিষয়ে আমি এখন আগ্রহী না, এর পরও না শুনলে শরীরঘনিষ্টশব্দাবলী দিয়েই তাকে বুঝাতে হয় আমার অনাগ্রহ।
প্রয়োজন অনুসারে শব্দ সাজাতে হয় আসলে। দিনাজপুরের নমিনেশন পেপার সাবমিট করা হয়েছে- খালেদা জিয়া এখানে এম পি ইলেকশন করবেন, এর জন্য দিনাজপুরে জটিল উত্তেজনা, এর বিরুদ্ধে প্রার্থি ইকবালুর রহিম-আমার সাথে এদের কারোই পরিচয় নেই, আমার সামনে যখন কেউ দেশনেত্রি জননেত্রি নিয়ে আলোচনা করে, ইকবাল ভাই খসরু মিয়া খাটকু চৌধুরি নিয়ে কথা বলে তখন আমার অজ্ঞানতার জন্য লজ্জিত হই। তবে যারা এবার মুলত ভোট রিগিং, ভোটের জন্য প্রচারনা চালাবে, তাদের সুযোগ সুবিধা দেওয়ার জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের বিলিবন্টন বিষয়ক আলোচনা শুরু হয় তখন একটু আগ্রহ জাগে, আসলেই এই নির্বাচন ব্যায় সীমা 5 লাখ হলেও এদের দৈনিক ভাতার যেমন বর্ণনা তাতে কোনো ভাবেই 50 লাখে কুলানো সম্ভব না এই ব্যায়।
ভালোই লাগছে এই নির্বাচন জনিত উত্তাপ। ভালো লাগছে এই ভাষা শুনতে, তাই সেই ভাষা শুনি চায়ের আড্ডায় বসে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।