বাংলাদেশ নিয়ে ভাবনা, প্রত্যাশা ও সম্ভাবনার সংগ্রহমালা
রাজনীতির মাঠে শেষ কথা বলে কিছু নেই। গত ক'দিন থেকে যা ঘটল তা মুক্তচিন্তায় বিশ্বাসী প্রতিটি মননকে খুব জোরালভাবে নাড়া দিচ্ছে। বাংলাদেশে হঠকারী রাজনীতির ট্র্যাডিশন ভাঙ্গা অতো সহজ না তা আবারও প্রমানিত হলো। ক'দিন থেকে রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে পোস্ট করছি না। তবে বেশ কিছু ই-মেইল পেয়েছি এনিয়ে সুস্পস্ট বক্তব্য দেওয়ার জন্য।
বলুন তো নির্বাচনে এবার কাকে ভোট দেবেন? জামাত বিএনপি'র 4 দলীয় মোর্চাকে না আওয়ামী-খেলাফতী 14 দলীয় মোর্চাকে? ক্রাইটেরিয়া কিভাবে নির্ণয় করবেন?
আমাদের দেশের রাজনৈতিক চরিএের দেউলিয়াত্ব আবারও প্রমানিত হলো। ধর্মান্ধ শক্তিকে পাশ কাটিয়ে রাজনৈতিক উওরণ একেবারে অসম্ভব বলে যে ধারণা বদ্ধমূল হয়েছে তাকে চ্যালেঞ্জ করার মতো বিশ্বাসযোগ্য ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির অনুপস্থিতি সুস্থ রাজনীতির ধারাকে অবলীলায় গ্রাস করছে। তাই একাওরের খুনী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিপরীতে ধমর্ীয় শক্তিকে বগলদাবা করে আওয়ামী জোট নির্বাচনে বৈতরণী পার হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। এখানে রাজনৈতিক এথিক্স বলে কোন কিছু কাজ করে না। বাংলাদেশে ইসলামী আন্দোলন যে একটা নতুন মাএা পেয়েছে তা কি কেউ অস্বীকার করতে পারবে? ধর্মভিওিক দলগুলোর উপচে পড়া যোগান কি তাই প্রমান করে না? অবশ্য আমার মতে, খুনীর বিনিময়ে চোরকে পাশে টানলে অপরাধের মাএাটা খুব লঘু বলে স্বস্তি পাওয়ার কোন সুযোগ নেই।
তবে আওয়ামী লীগের এই বৈপ্ল্ল্লবিক অবস্থানে কিন্তু জামাতীরা স্বস্তি খুঁজে পাচ্ছে না দেখে অনেকেই তাজ্জব বনছেন। আওয়ামীদের মনে ইসলামী ভাবনার উদয় হচ্ছে আর ইসলামী ফতোয়ার ঝান্ডার নীচে ইসলামীকরণ খুব সহজ হবে এধারণা কিন্তু জামাতীদের মনে হচ্ছে না। ধর্মভিওিক রাজনীতির ঘরানার মানুষগুলোর আচরণে যে সতীন সতীনের চিরায়ত দ্বন্দ্ববোধ কাজ করে তা আবারও প্রমানিত হলো।
ধর্মভিওিক রাজনীতি নিষিদ্ধকরণ যে আগামী দিনগুলোতে সচেতন জনতার আন্দোলনের ভিওি হওয়া প্রয়োজন তা অনেকেই হাড়ে হাড়ে টের করতে পারছেন। ধর্মভিওিক রাজনীতির সুবিধা হচ্ছে যে এর রাজনৈতিক ব্যবহারটা বেশ আবেগপ্রসূত এবং সুলভে ব্যবহারযোগ্য।
ধর্মের ঝান্ডা উড়িয়ে ঔপনিবেশীকরণ হয়েছে, রাজনীতির মাঠ দখল হয়েছে আবার সন্ত্রাসী কার্যক্রমও চলেছে। জেহাদী প্রেরণা পেতে খুব বেশী দূর যেতে হয়নি। হয়তো সেই কারণে আওয়ামী লীগও সেই সুযোগ হাতছাড়া করতে চায়নি।
বিশ্বের প্রথম ভাষাভিওিক ধর্মনিরপেক্ষ রাস্ট্রব্যবস্থা হিসেবে বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ ধর্মভিওিক অপশক্তির কাছে হার মেনেছে তার উদাহরণ তো নতুন নয়। তাই বিসমিল্ল্লাহ যোগ করলে আর রেডিও টিভিতে আজানের ধ্বনি শুনলে আমরা আবেগাপ্লুত হয়ে যাই।
এতে আমাদের ধর্মবোধের প্রকাশের চেয়ে ধর্মান্ধ ধর্মব্যবসায়ীদের সিম্বলিক বিজয় বলে লম্ফন শুরু হয়ে যায়। কিন্তু ধর্মভিওিক রাজনীতি যে ধর্মবোধ বিস্তার করে না বরং রাজনীতিতে ধর্মের ইন্ডেন্টিং ব্যবসা জারি রাখে তা বিশদ করে বলার কোন দরকার নেই। ধরুন আওয়ামী-খেলাফতী মোর্চার আড়ালে যদি ইসলামী রাস্ট্র বলে বাংলাদেশকে ঘোষণা দেয় তাতে আশ্চর্য হওয়ার কোন কারণ দেখি না। কিন্তু এর সুফল যে মৌলবাদী জামাতীদের জন্য সুখকর হবে না তা তারা ভাল করেই জানে। ইসলাম কিন্তু পরাজিত শক্তির রাজনৈতিক অধিকার দেয় না।
একাওরের পরাজিত শক্তি হিসেবে জামাতীরা যদি তাদের রাজনৈতিক অধিকার হারায় আর লাখো শহীদের রক্তঋণ শোধ করতে বাধ্য হয় তাহলে জামাতের যুদ্ধাপরাধী অনেক নেতারাই ছালচামড়া হারাবে। তাই আপাতত ইসলামী রাস্ট্রের প্রেসকি্্রপশন জামাতীদের জন্য তেমন একটা মঙ্গল ডেকে আনবে না।
ধর্মান্ধ শক্তিকে বগলদাবা করে আওয়ামী মোর্চার নির্বাচনী উওরনের লিপ্সা ও যুদ্ধাপরাধী জামাতীদের ঘাড়ে চড়িয়ে জাতীয়তাবাদীদের অগ্রযাএার মধ্যে অবস্থানগত ব্যবধান অতি সামান্য। ধিক্কারের মাএায় পার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু ধিক্কার থেকে নিস্কৃতি পাওয়া সম্ভব নয়। তাই প্রশ্ন, এবারের নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন? আমার নিজের অবস্থান তুলে ধরবো জানুয়ারীর তিন তারিখের পর।
তার আগ পর্যন্ত আপনারা ভাবতে থাকুন ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।