রোববার রংপুর জেলা স্কুল মাঠে ১৮ দলের জনসভায় এই দুজন মোহাম্মদ আলী সরকার ও সোলায়মান ফকির বিরোধীদলীয় নেতার হাতে ফুল দিয়ে বিএনপিতে যোগ দেন।
অষ্টম সংসদে মোহাম্মদ আলী রংপুর-২ আসনে এবং সোলায়মান রংপুর-৫ আসনে লাঙল প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। দুই সাবেক সংসদ সদস্যের সঙ্গে তাদের সমর্থকরাও বিএনপিতে যোগ দেন।
২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম সংসদ নির্বাচনে বৃহত্তর রংপুরে বিএনপি কোনো আসনে বিজয়ী হতে পারেনি।
বিএনপি গঠিত হওয়ার পর ১৯৮৯ সালে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বৃহত্তর রংপুরের ২৩ আসনের মধ্যে ১৩টি আসনে নির্বাচিত হয়েছিল ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীরা।
এইচ এম এরশাদের্ শাসন অবসানের পর ১৯৯১ সালের নির্বাচনে তার দল জাতীয় পার্টি বৃহত্তর রংপুরের সবগুলো আসনে জিতেছিল।
২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি বৃহত্তর রংপুরে লারমনিহাট-৩ আসনে আসাদুল হাবিব দুলু ও নীলফামারী-৩ আসনে আমজাদ আলী সরকার নির্বাচিত হয়েছিলেন।
১৭ বছর পর রংপর শহরে খালেদা জিয়ার এই জনসভায় বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী যোগ দেন। রংপুরের আশপাশের জেলাগুলো থেকেও নেতা-কর্মীরা যোগ দেন ১৮ দলের এই জনসভায়।
জনসভা উপলক্ষে জিলা স্কুল মাঠ ও তার আশ-পাশে শতাধিক মাইক বসানো হয়।
জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রতিকৃতি সম্বলিত ডিজিটাল ব্যানার-ফেস্টুনে পুরো মাঠ ও তার আশপাশের এলাকা ছেয়ে যায়।
বিকাল পৌনে ৪টায় তিনি রংপুর জেলা স্কুল মাঠে পৌঁছালে নেতা-কর্মীরা করতালি দিয়ে তাকে স্বাগত জানান। ব্যাপক ভিড় ঠেলে খালেদা জিয়া গাড়িবহরকে মঞ্চের কাছাকাছি নিয়ে যেতে নিরাপত্তা কর্মীদের বেগ পেতে হয়।
খালেদা জিয়া মঞ্চে আসন নেয়ার পর রংপুরের ঐতিহ্যবাহী ভাওয়াইয়া গান ‘ওকি গাড়িয়াল ভাই’ এর সুরে প্রধান অতিথিকে বরণ করে নেয়া হয়। নীলফামারীর সন্তান কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন এই গান গেয়ে শোনান।
খালেদা জিয়া শেষবার রংপুর এসেছিলেন ১৯৯৬ সালের অগাস্টে। ওই সময় জাতীয় সংসদের উপ-নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইতে গিয়েছিলেন তিনি।
এরপর অষ্টম ও নবম সংসদ নির্বাচনের সময় রংপুরের ওপর দিয়ে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও গেলেও রংপুরে কোনো জনসভা করেননি।
প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় ২০০৬ সালের অক্টোবরে লালমনিরহাট যাওয়ার পথে মাত্র ঘণ্টার জন্য রংপুর থেমে কালেক্টরেট ভবনের ভিত্তিস্থাপন করেন তিনি।
বগুড়া থেকে সড়ক পথে বেলা ৩টায় রংপুর পৌঁছে খালেদা জিয়া প্রথমে যান সার্কিট হাউজে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুদু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিবউন নবী খান সোহেল, জেলা বিএনপির আহবায়ক মোজাফফর হোসেন তাকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান।
বগুড়া থেকে রংপুর ১০০ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন অংশে হাজার হাজার নেতা-কর্মী রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
বিরোধী দলীয় নেতাকে স্বাগত জানিয়ে এই পথে নির্মাণ করা হয় শতাধিক তোরণ। আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে আগ্রহীদের ছবি সম্বলিত ডিজিটাল ব্যানার ও প্ল্যাকার্ডও দেখা যায় এই পথের বিভিন্ন অংশে।
খালেদা জিয়ার এই সফর উপলক্ষে পুরো শহরকে সাজানো হয় বর্ণিল সাজে।
জেলার প্রবেশ পথ মর্ডান মোড় থেকে সেনানিবাস চেকপোস্ট পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার পথ বিরোধী দলীয় নেতার গাড়িবহরকে এগিয়ে নিয়ে যায় ৩০ জনের একটি অশ্বরোহী দল।
সার্কিট হাউজ পর্যন্ত দুই কিলোমিটার পথে নানা সাজে সজ্জিত মেয়েরা নেচে-গেয়ে গ্রাম বাংলার বিভিন্ন চিরায়ত দৃশ্য ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমে বিরোধী দলীয় নেতাকে তাদের শহরে অভ্যর্থনা জানান।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।