সময়কে কাধে নিয়ে চলো বন্ধু
একটা সময় ছিল যখন মানুষ চিঠি লিখতো। এইতো চোখে দেখা সে দিনগুলো গত হয়েছে কয়েক বছর হল। মিলেনিয়াম উৎসবের পর যখন মুঠোফোন আমাদের দূরত্বকে আরো কাছে নিয়ে আসলো তারপর থেকে চিঠি লেখার প্রচলন ধীরে ধীরে কমে গেছে।
পোস্ট অফিসগুলোতে এখন চিঠির বদলে পার্সেল, টাকা পয়সা লেনদেন হয় বেশি। এখন আর রানার ছুটে বেড়ায় না।
আমার মনে পড়ে যখন আমি স্কুলে পড়তাম সেই নব্বইয়ের দশকের শেষভাগে তখন আমরা বন্ধুরা ডাকটিকিট সংগ্রহ করার প্রতিযোগিতায় মেতে থাকতাম।
পুকুরে সাতার শেখা, বিকেলে মাঠে যাওয়া, পরীক্ষা শেষে ঘুড়ি নিয়ে ছুটে বেড়ানো অনেক কিছুই ছিল সেই দূরন্ত ছেলেবেলায়। এসবের মাঝে আমাদের কিছু বিশেষ শখ ছিল। যেমন ডাকটিকিট জমানো, গল্পের বই পড়া, হাতের তৈযষপত্র বানানো এসব। ডাকটিকিটের কথা মনে পড়ে গেল আজ বহুদিন পর।
আমার একটি ডায়রি ছিল যেখানে শুধুই ডাকটিকিট সংগ্রহ করতাম।
বোর্ড বাজারে একটা দোকান ছিল যেখান থেকে ডাকটিকিট খুজে নিতাম। সেখানে বিভিন্ন দেশের ডাকটিকিট পাওয়া যেত। আমাদের সব বন্ধুরা বিভিন্ন দেশের ডাক টিকিট জমানো ডায়রি নিয়ে যখন আড্ডা দিতাম তখন বেশ হিংসে হতো একে অন্যের ডায়রি দেখে।
কার কাছে কয়টা দেশের ডাক টিকিট বেশি ছিল সেটাই যেন এখানে বড় এথাকার একটা ব্যাপার ছিল।
তবে লন্ডন, ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড, ইউএসএ, সৌদি, ওমান, বাহরাইন, মিশর, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, ইন্ডিয়া, পাকিস্তান সহ আরো কয়েকটি দেশের ডাকটিকিট ছিল সহজলভ্য। কারণ এসব দেশে আত্মীয়স্বজনরা যেতেন আর তাদের পাঠানো চিঠি থেকে ডাকটিকিটটা আলাদা করে নিজের কাছে নিতাম।
এখন সেই টিকিটে চিঠি পাঠানোর যুগও নেই। ডাকটিকিটও আর পাওয়া যায় না। এখনকার পোলাপান নেট থেকে সার্চ দিয়ে ওই দেশ সম্পর্কে জেনে নেয়।
যা আমরা আগে পেতাম ভ্রমন কাহিনী থেকে।
ডাকটিকিটের ক্ষেত্রে বিচিত্র কিছু ছবি, আনকমন ইমেজগুলো যাদের কাছে থাকতো আমরা ভাবতাম সে কত বড়লোকরে বাবা। তার আত্মীয়রা কত দূর দেশে থাকে যেখানে সব বাংগালিরা যেতে পারে না।
ডাকটিকিট বা ষ্টাম্প সংগ্রহের সবচেয়ে ভালো দিকটি হল সংগ্রহশালায় যে দেশের টিকিট সংগ্রহ করা হতো তার সম্পর্কে জানার একটা আগ্রহ তৈরী হত। কিশোরদের মাঝে যারা দেশ, রাজধানী ও মুদ্রার নাম বলতে পারতো তাদের সংগ্রহকেই বেশি সমৃদ্ধ মনে হত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।