আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অমানবিক!

(প্রথম আলোর এই লেখাটি পড়ে নিজের চোখের পানিকে আর ধরে রাখতে পারছিলাম না । আর সেই সাথে মহান আল্লাহর কাছে বার বার সিজদায় মাথা নত করতে ইচ্ছা করতেছে , কারণ আমাকে অন্তত গাছের সাথে বেধে রাখতে হয় না আমার মায়ের । এই লেখাটি পড়ার পর থেকে মনে হচ্ছে আমাকে আল্লাহ অনেক কিছুই দিয়েছে তারপরেও কেনো আমি ভাবি যে আমার কিছুই নেই !!! আমার আর কিছুই চাইনা আল্লাহ আমাকে তুমি যথেষ্ট দিয়েছো , আমাকে তোমার শুকরিয়া আদায় করার তাওফিক দান করো । সমাজের বিত্তবানদের প্রতি ছোট একটি রিকুয়েস্ট , দয়া করে আপনারা এই অসহায় মায়ের পাশে একটু দাড়ান। ) ***### সকাল হলেই ছেলেকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েন আমিনা বেওয়া (৫০)।

বাড়ির অদূরে একটি বাঁশঝাড়ে গাছের সঙ্গে ছেলেকে বেঁধে তবেই যান কাজে। কাজ শেষে সন্ধ্যায় ছেলেকে নিয়ে আবার বাড়িতে ফেরেন। অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে যা জোটে, তা-ই ছেলেকে নিয়ে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। প্রায় ১০ বছর ধরে এভাবেই চলছে আমিনার। স্বামীহারা সংসারে ছেলে হেফায়জুল ইসলামই (২০) একমাত্র সন্তান।

কিন্তু সাত রাজার ধনকে নিয়ে তাঁর দুঃখের শেষ নেই। হেফায়জুল যে বাক্ ও মানসিক প্রতিবন্ধী। নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার মীরগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম শিমুলবাড়ী গ্রামে থাকেন আমিনা। নিজস্ব জমিজমা বলতে কিছুই নেই। থাকেন অন্যের বাড়িতে।

প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১০ বছর বয়স থেকে ছেলেটি বেশি অসুস্থ। একটু ছাড়া পেলেই তেড়ে যায় অন্যের দিকে, নষ্ট করে খেতের ফসল। এ নিয়ে প্রতিবেশীদের অভিযোগের অন্ত নেই। তাই বাধ্য হয়ে আমিনা এ পথ বেছে নিয়েছেন। সম্প্রতি শিমুলবাড়ী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার ধারে বাঁশঝাড়ের ভেতরে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে হেফায়জুলকে।

যখন-তখন তিনি গাছের চারদিকে ঘুরছেন। ক্লান্ত হয়ে এলে গাছে মাথা ঠেকিয়ে দেন। কোনো কিছুর টের পেলে আবার জেগে ওঠেন। আকাশপানে তাকিয়ে থাকেন ফ্যালফ্যাল করে। গ্রামের বাসিন্দা সুজাউল ইসলাম জানান, ১৬ থেকে ১৭ বছর আগে হেফায়জুলের বাবা মারা যান।

নিজেদের কোনো সহায়-সম্বল নেই। তাই ছেলের অস্বাভাবিক আচরণের কারণে আমিনাকে প্রায়ই প্রতিবেশী ও গ্রামবাসীর বকাঝকা শুনতে হয়। তা ছাড়া একটু ছাড়া পেলেই হেফায়জুল পানিতে নেমে যান। এ কারণে বাধ্য হয়ে আমিনা ছেলেকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে কাজে যান। সুজাউল বলেন, যদিও বিষয়টি অমানবিক, কিন্তু ছেলেটির মায়ের কিছু করার নেই।

ছেলের কথা জানতে চাইতেই আমিনা অশ্রুসজল হয়ে ওঠেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ছেলেক বান্ধি থুবার সময় কান্দোং (কান্না আসে) আর বান্ধি থং (তবু বেঁধে রাখি)। ’ তিনি জানান, অসুস্থ ছেলেকে এভাবে বেঁধে রাখতে খারাপ লাগলেও তাঁর কিছু করার নেই। থাকেন অন্যের জমিতে। ছেলের কারণে সেই আশ্রয়টুকুও হারালে উপায় থাকবে না।

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান ব্লাস্টের নীলফামারী শাখার আইনজীবী রোখসানা আনজুম বলেন, বিষয়টি অমানবিক। কিন্তু এখানে মাকে দোষারোপ করলে চলবে না। বরং ওই সমাজের মানুষ, জনপ্রতিনিধি ও প্রতিবন্ধীদের পুনর্বাসন নিয়ে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের এগিয়ে আসতে হবে। ***### প্রথম আলো মীর মাহমুদুল হাসান, ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।