আমি বাঙালি এবং বাংলাদেশী খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎিসা এ পাঁচটি মৌলিক চাহিদা নিয়ে মানুষরে এখনো সংগ্রামরে শেষ নেই। দেশটি স্বাধীন করে আমরা কী পয়েছি? ভিক্ষা করে মানুষরে এখনো যদি জীবকিা নির্বাহ করতে হয় তাহলে আমাদরে দেশের নাগরিকদরে জীবন ও জীবকিার কী উন্নতি হচ্ছে নাকি অবনতি হচ্ছে । আমরা কি জনপ্রতনিধি, মন্ত্রী বা সরকাররের কাছ থেকে শুধু দেশের উন্নয়নরে বড় বড় কথা শুনছি নাকি বাস্তবে এর কোনো প্রতফিলন আছ?
ভিক্ষাবৃত্তি পেশা মানুষ বেছে নেয়ার মূল কারণ দারিদ্র। বন্যা, নদীভাঙ্গন, জলোচ্ছ্বাসসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষ সবকিছু হারিয়ে কাজের আশায় গ্রাম থেকে শহরে ছুটে আসছে। কাজ না পেয়ে সহজতম আয়ের পথ ভিক্ষাবৃত্তি বেছে নিচ্ছে।
এর ভেতর কেউ স্বেচ্ছায় স্বপ্রণোদিত হয়ে ভিক্ষা করছে, কেউ অসহায় হয়ে ভিক্ষা করতে বাধ্য হচ্ছে। এতিম, ভবঘুরে, অসুস্থ ব্যক্তি, বয়োজ্যেষ্ঠ ও স্বামী পরিত্যক্তা মহিলারা শুধু বেঁচে থাকার তাদিদেই ভিক্ষা করছে। এর বাইরে কিছু লোক এই পেশাকেই ব্যবসা হিসেবে বেছে নিয়েছে। ভিক্ষুকদের কাছে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা বলে থাক, করা ভিক্ষা ছাড়া তাদরে কোনো রকম উপায় নইে। গ্রাম-গঞ্জে কোনো কাজ নইে।
তারা দায়ে পড়ইে এমন অপ্রয়ি কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে রাজধানী ঢাকার চারদিকে তাকালেই দেখা যায় ঠিকানাবিহীন ভাসমান ভিক্ষুকদের ভীড়। এসব মানুষ এ সমাজেরই বাসিন্দা। সারা শহর জুড়ে সা¤প্রতিক সময় বেড়ে গেছে ভিক্ষুকদের সংখ্যা। রাজধানী হিসেবে বিশ্ব মানচিত্রে ঢাকা সত্যি ব্যতিক্রম। আকাশচুম্বী অট্টালিকা আর ৫তারা হোটেলের পাশেই ঠিকানা বিহীন ভাসমান মানুষের আশ্রয়স্থল বস্তিঘর।
এটা তো ঠিক এ দেশে অধিক জনসংখ্যার চাপে কে কী করবে র্অথাৎ কীভাবে জীবিকা নির্বাহ করবে তার কোনো ঠিক ঠিকানা নইে। ফলে এখানে যেমন রয়েছে অনেক নীতি র্গহিত র্কমকাজ-, সুদ-ঘুষ, র্দুনীতি ধনীদের শোষণ, নিপীড়ন তেমন রয়েছে অনেক দরিদ্র মানুষ এর নিত্যদিনের আহাজারি। হতদরদ্রি-নিঃস্ব মানুষ যাদরে কোনো উপায় থাকে না তারা নিতান্তই বাধ্য হয়ে ভিক্ষাবৃত্তিকে বেছে নিয়েছে । ভক্ষিাবৃত্তি নিয়ে চলে নানা রকম বাণজ্যি। এসব বাণজ্যিরে মধ্যে অনকেইে বসে বসে বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতে দেখা গেছে।
কেউ কেউ প্রথম দিকে হয়তো শখ বা সুকৗেশলে জীবকিার জন্য ভক্ষিাবৃত্তি শুরু করলওে পরে ভালো আয় হওয়ায় (এক রকম বিনা পুঁজির বিনা ঝুঁকির ব্যবসা) এটাকে স্থায়ী পেশা হিসেবে গ্রহণ করে নয়ে। দৃষ্টি প্রতবিন্ধী, বুদ্ধি প্রত বিন্ধীসহ নানা রকম প্রতবিন্ধী বা অল্পবয়সী অসহায় বা বয়স্ক মানুষদরে অপহরণ করে বা সামান্য র্অথে ক্রয় করে দালালরা ভিক্ষা করার জন্য নানা জায়গায় বসিয়ে দিয়ে থাকে। ভালো মানুষরে অঙ্গহানি ঘটাতে তারা দ্বধিাবোধ করে না। অতি নিষ্ঠুরভাবে দালালচক্র হাত পা ভঙ্গে বিকালঙ্গ বানিয়ে এ কাজে লাগিয়ে থাকে। সংশ্লষ্টি দালালচক্ররে কৌশলে বা তাদরে কথামতো রাস্তার মোড়ে মোড়,মসজদিরে সামন, লোকালয়, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববদ্যিালয়, কবরস্থান, ঈদগাহ এর প্রবেশ পথসহ নানাস্থানে র্জীণ-র্শীণ সাজসজ্জায় ভিক্ষুক বা ভিক্ষুক বেশে সাহায্যরে জন্য প্রেরণ করা হয়।
এসব কাজে মানে ভিক্ষা চাওয়ার বাচনভঙ্গি তারা আগ থকেইে প্রশিক্ষন দিয়ে থাকেন। তারা নানা রকম কৌশলে মানুষরে মনে দয়ামায়া জন্মানোর মতো ভাষা রপ্ত করে থাকে। জটলি রোগ, মৃত মা-বাবা, রোগরে অপারশেন, র্দুঘটনায় অঙ্গহানি চকোলেট বিক্রি লিফলেট বহনসহ বিভিন্ন্ পন্থা নখর্দপণে। অনেক ভিক্ষুক র্অথ উর্পাজন করলে ও তার সিংহভাগ র্অথ মালকিকে দিতে বাধ্য থাক। তাছাড়া বসে বসে র্অথ উর্পাজনরে জন্য এ কাজে অনকে দালাল বা ভক্ষিুককে র্সদার সাধারণ ভক্ষিুকদরে প্রতি খুবই অমানবকি আচরণ করে থাকে।
এমনও ভিক্ষুক এর মালকি রয়েছে তার অধীনে দশ থকে বিশটা ভক্ষিুক সারাদনি ভক্ষিা করে থাক। মালিক তাদরে যৎসামান্য ভরণ-পোষণ দিয়ে এটাকেই জীবিকা হিসেবে গ্রহণ করে মোটা অঙ্করে র্অথ উর্পাজন করে যাচ্ছে। ভিক্ষুকরা কোনো রকমে বেঁচে থাকার মতো আহার ও বাসস্থানরে ব্যবস্থা করা হয়ে থাক। যৎসামান্য চিকিৎসা র্পযন্ত করা হয় না। অনকে সময় রোগরে ব্যথাকে আরো তীব্র করে রাস্তায় চৎিকার করতে বলা হয় যাতে মানুষ বেশি বেশি ভিক্ষা দেয়।
শহরের প্রত্যেক থানায় রয়েছে ভিক্ষুকদের আলাদা আলাদা সংঘবদ্ধ গ্র“প। দিনের বিভিন্ন সময়ে ক্যাব, সিএনজি, অটোরিক্সা, রিক্সা এবং ট্রলিতে করে ভিক্ষুকদের বিভিন্ন স্পটে নামিয়ে দেওয়া হয়। তারপর দুর থেকে পর্যবেক্ষণ করা হয় কার্যক্রম। স্থান ভেদে এদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয়। স্পটের গুরুত্ব ও ভিক্ষুকের দক্ষতা এখানে বিশেষভাবে কাজ করে।
তবে সাধারণ ভাবে ১০০ টাকায় ৫০ টাকা আবার কোন কোন ক্ষেত্রে ৪০ টাকা বা ৪৫ টাকা ভিক্ষুকরা পেয়ে থাকে, বাকী টাকা পায় ভিক্ষুকদের গডফাদার এবং বিভিন্ন স্পটের পুলিশ। ভিক্ষুকদের এই নেটওয়ার্ক সাধারণত যে স্থানগুলো বেছে নিয়ে ভিক্ষা করে তা হলো ঃ ঢাকা শহরের বিভিন্ন ফুটপাত, ব্যস্ততম শপিং সেন্টারের সম্মুখদ্বার, সকল ওভারব্রিজ, সিনেমা হলের সম্মুখদ্বার, সকল বাস টার্মিনাল, লঞ্চ টার্মিনাল, রেলষ্টেশন, ট্রাক স্ট্যান্ড, ফাইভ স্টার হোটেল সংলগ্ন এলাকা, বিভিন্ন রাস্তার সংযোগস্থল ও মোড়, রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের প্রবেশদ্বার, নগরীর সব বিনোদন পার্ক এবং বিভিন্ন ব্যাংক বীমা প্রতিষ্ঠানের সামনের রাস্তা
ভিক্ষাবৃত্তিতে ঢাকা শহরে বছরে প্রায় ৩০ কোটি টাকার আয় করে সংঘবদ্ধ ভিক্ষুকের দল। ঢাকার বিভিন্ন স্পটে প্রতিদিন ভিক্ষুকরা মাথাপিছু আয় করে ১০০ থেকে ৪৫০ টাকা। রাজধানীতে সংঘবদ্ধ ভিক্ষুকের সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার জন। ফার্মগেট এলাকায় ভিক্ষা করে ১৫ থেকে ২০ জন।
এদের গড়ে প্রতিদিনের আয় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। মাসিক আয় ৯ হাজার টাকা বছরে আয় হয় ১ লাখ টাকার ওপরে। নিউমার্কেট এলাকায় একজন ভিক্ষুকের বছরে আয় প্রায় ৯০ হাজার টাকা। হাইকোর্ট মাজার এলাকায় একজন ভিক্ষুকের আয় ৭২ হাজার টাকা, আজিমপুর এলাকায় ৬৩ হাজার টাকা, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ৫৪ হাজার টাকা। [/sb
এছাড়া গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়া, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, গাবতলী, মহাখালী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাদ মোড়, সিটি কলেজ মোড়, মতিঝিল, ইত্তেফাক মোড়সহ প্রায় ৫০টি স্পট রয়েছে।
এদের গত আয় ২০০ টাকা হলে বছরে প্রায় ৩৬ কোটি টাকা আয় করে। এই টাকার প্রধান ভাগীদার ভিক্ষুক নেটওয়ার্ক গডফাদার ও পুলিশ। বাকি টাকা ভিক্ষুকরা পেয়ে থাকে}
সামাজিক দায়বদ্বতা শিক্ষা সভ্যতায় আমরা যতোটা প্রতিদিন এগিয়ে যাচ্ছি ঠিক ততটাই প্রতিনিয়ত ভেঙ্গে পড়ছে আমাদের সনাতন সামাজিক অবকাঠামো। এক সময় সমাজ ব্যবস্থায় দাদা-দাদি, নানা-নানীদের বৃদ্ধ বয়সে অসহায় অবস্থায় নাতী নাতনীরা দেখাশোনা করতো। বর্তমানে কাজের চাপে আধুনিকীকরণের তোড়ে সেই সুযোগ অনেকটা কম।
আবার আমাদের দেশে বৃদ্ধদের পরিচর্যা করার জন্য কোনো ক্লিনিক বা আশ্রয় কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি বললেই চলে। গ্রামীন সমাজে অসহায় পরিবারগুলোর ক্ষেত্রে এই সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে এ সমস্যা মোকাবেলার জন্য অশিতিপর বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও ভিক্ষাবৃত্তির দিকে ঝুকে যাচ্ছে। সামাজিক বন্ধন একক পরিবারের যতদ্রুত ভেঙ্গে পড়েছে তা থেকে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য কোনো যথাযথ উদ্যোগ নেই। জীবনের শেষ বয়সে যে মানুষগুলো ভিক্ষা দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করেছে তারা রাজধানীতে সবাই নেটওয়ার্কের শিকার। সারা দিনের অর্জিত অর্থের প্রায় অর্ধাংশ নিয়ে যায় এ নেটওয়ার্কের সদস্যারা।
সারাদিন পরিশ্রম শেষে এ অসহায় মানুষগুলো উন্নত সমাজ ব্যবস্থাকে বিদ্রƒপ করা ও অভিশাপে দেয়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। ভিক্ষুকদের অধিকাংশ এমন পরিবেশে ভিক্ষা করছে যার সংস্পর্শে এলে নগর জীবনের বিপরীতে চিত্রটি সহজেই উপলদ্ধি করা যায়। পারিপার্শ্বিক দিক থেকে এরা যা পেয়ে থাকে তা কেবল তিক্ত অভিজ্ঞতা ছাড়া আর কিছুই নয়।
গতকাল যে পরিবারটি পৈতৃক ভিটায় সুখে-শান্তিতে দিন যাপন করতো আজ তারা পথের মানুষ। বয়সের ভারে ন্যুজ এ মানুষগুলোর বেঁচে থাকতে হয় অন্যের দয়ায়।
রাজধানীর এই ভিক্ষুক, ঠিকানাহীন এই মানুষগুলো কি এ সমাজের বাসিন্দা নয়? ভিক্ষুকবৃত্তিতে আসার পেছনে কারা দায়ী তা খুঁজে বের করে সাবধানে ব্যবস্থা করতে হবে।
ভাসমান অসহায় ভিক্ষুকরা এই শহরের মানুষ। ছিন্নমূল এই মানুষগুলোর বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। সরকার ভিক্ষুকদের জন্য আলাদাভাবে ভিক্ষুক আশ্রয় কেন্দ্র খুলে এদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে পারে। এই ভিক্ষুকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বাঁশ বেতের কাজ শিখিয়ে স্বাবলম্বী করে তুলতে পারে।
সরকারের পাশাপাশি এনজিওগুলো সহযোগীতা করতে পারে। সরকার, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও বিত্তবান মানুষের সম্মিলিত সহযোগীতার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।