ন্যূনতম মজুরি, ভাতা, হাজিরা বোনাস, মাতৃত্বকালীন ছুটিসহ নানা দাবি আদায়ে রাজপথে নেমেছিলেন তারা, পরিবর্তে পেয়েছেন বুলেট। রাজধানীর মিরপুরে রোকেয়া সরণিতে পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেডে গুরুতর আহত হয়েছেন ২ পোশাককর্মী। তারা হলেন সখিনা বেগম (৩৮) ও তার মেয়ে শিরিন আক্তার (২১)। গতকাল বুধবার সকালে শেওড়াপাড়ার আউটরাইট ফ্যাশন লিমিটেড পোশাককলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের শেওড়াপাড়ার এক্সিম ব্যাংক হাসপাতালে চিকিত্সা দেওয়া হচ্ছে।
তারা আউটরাইট পোশাককলের অপারেটর।
এদিকে রাবার বুলেটে গুরুতর আহত দুই পোশাককর্মীকে চিকিত্সা দেওয়ায় পুলিশের ভর্ত্সনা শুনতে হয়েছে এক চিকিত্সককে। চিকিত্সক বলছেন, তিনি মানবিক কারণে চিকিত্সা দিয়েছেন। আর পুলিশের প্রশ্ন— কার অনুমতি নিয়ে চিকিত্সা দিলেন? প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আহত দুজনের পা দিয়ে রক্ত ঝরছিল। তারা ব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন।
ঘটনার পরপরই সহকর্মীরা তাদের নিয়ে কাজীপাড়ায় এক্সিম ব্যাংক হাসপাতালে যান। হাসপাতালের তথ্যকেন্দ্র থেকে জানানো হয়, শিরিনের পা থেকে একটি রাবার বুলেট বের করা হয়েছে। বুলেটের আঘাতে সখিনার পায়েও গভীর ক্ষত হয়েছে। চিকিত্সা শেষে তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা দুজন চলে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই সাদা পোশাকে হাসপাতালে আসেন এসআই কামাল হোসেন।
অনেকটা উত্তেজিত হয়ে তথ্যকেন্দ্র থেকে সংশ্লিষ্ট চিকিত্সকের খোঁজ নিতে দেখা যায় তাকে। তথ্যকেন্দ্র থেকে মোবাইল ফোন নম্বর নিয়ে চিকিত্সক মো. আলমগীর সিকদার রনিকে কল করে তাকে বলতে শোনা যায়, আপনি কেন ওদের চিকিত্সা করেছেন? কে আপনাকে এ অনুমতি দিল? পুলিশ তো অনুমতি দেয়নি। কেন অনুমতি নেননি? এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এসআই কামাল বলেন, আমি হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে ফোনে জানতে চেয়েছি ডাক্তার সাহেব থানার অনুমতি ছাড়া কেন আহতদের চিকিত্সা করেছেন, আর কিছু নয়। কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেননি বলেও দাবি করেন তিনি।
শিরিনার মা সখিনা বেগমের ডান পায়ের হাঁটুর নিচের কিছু অংশ পুড়ে গেছে।
বাড়ি ফেরার সময় তারা পুলিশের পাল্টা হামলার মধ্যে পড়ে যান বলে জানান শিরিনার ছোট বোন শিমু। শিমুর ভাষ্য, বিভিন্ন দাবিতে রাস্তা অবরোধের পর কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়। তখন মা সখিনা ও বোন শিমুকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন শিরিনা। ফেরার সময় পুলিশের ধাওয়ার মুখে পড়েন তারা। পরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়লে এর স্প্লিন্টার ঢুকে যায় শিরিনার দুই পায়ে।
সূত্র: দৈনিক আমাদের সময় ৩০ মে, ২০১৩
E-mail:
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।