জোট সরকারের ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার সময় চলে আসছে, এখনও অনেক বিষয়ের সিদ্ধান্ত অনির্ধারিত। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা নিয়ে আন্দোলন চলছে, আওয়ামী লীগের সংস্কার প্রস্তাবের পক্ষে জোট সরকারের সমর্থন নেই। হয়তো এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সংস্কার ব্যাতীতই নির্বাচন শুরু হবে।
তবে সমস্যা তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়, সমস্যা জোটের ভেতরের দ্্বন্দ্ব, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রবক্তাদের সাথে জামায়াতের আদর্শগত বিরোধ, জাতীয় পার্টির সাথে জামায়াতের বিরোধ, বি এন পির নিজেদের ভেতরে জামায়াতের সাথে জোট বাধা নিয়ে অসন্তোষ, এবং অনেক জায়গায় এই সব দ্্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এসেছে। অনেক কটি জায়গায় শিবির ছাত্র দল মুখোমুখি হয়েছে।
এবং ছাত্র দলের ধারনায় শিবির তাদের রাজনীতি সঙ্কুচিত করে দিচ্ছে এবং জামায়াতের সাথে জোট বাধায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ দলটা বি এন পি।
জামায়াতের ভোট ব্যাংকে ভোটারের সংখ্যা মোট ভোটারের 5% এর মতো। সংখ্যাটা 40 লক্ষের সামান্য বেশী। জাতিয় পার্টির ভোটার ব্যাংকের সংখ্যা 7%। এর বাইরে আওয়ামী লীগের ভোটার ব্যাংক সবচেয়ে বড়, প্রায় 33 থকে 35% শতাংশ ভোটার আওয়ামি লীগকে ভোট দিবে, বি এন পির ভোট ব্যাংকে মোট ভোটারের 32%।
এই ভোটার সংখ্যার বাইরে প্রায় 20% ভোটার আছে যাদের ভোট নির্বাচনের ফলাফলে প্রভাব ফেলবে। বি এন পি জোট বেধে এই ফ্লোটিং ভোটারের দ্্বারা যা বিচু্যতি সম্ভব তা কামনোর চেষ্টা করছে। যদি জাতিয় পার্টি, জামায়াত, ইসলামী শাসনতন্ত্রের সাথে জোট বাধতে পারে তাহলে ভোটারে 46% বি এন পির হবে।
তবে নির্বাচনের ফলাফলের চেয়ে এই পরিসংখ্যানের ভালো দিকটা হলো দেশের অধিকাংশ মানুষই এখনও জামায়াত বিরোধি মনোভাব ধারন করে, 40 লক্ষ মানুষকে সমর্থক হিসেবে পাওয়ার পর এই সমর্থক সংখ্যা বাড়ানোর জন্য জামায়াত নিয়ন্ত্রিত আসলে জামায়াতের নেতারা কর্মিদের বিভিন্ন অনৈতিক সুবিধা দিচ্ছে, অবশ্য নেতা কর্মিদের অর্থ সংস্থানের দায়িত্ব সব দলই করে থাকে, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের নামের অর্থ বরাদ্দ নিয়ে তার সিংহভাগ নিজস্ব কর্মিদের হাতে তুলে দেওয়ার রেওয়াজ পুরোনো। পার্টি করে পয়সা কামানো যায় বলেই দেশে ক্যাডার ভিত্তিক পার্টি বাড়ছে।
তবে ত্রান বরাদ্দ নিয়ে সেই ত্রানের সিংহ ভাগ নিজস্ব কর্মিদের হাতে তুলে দেওয়া সব সময় ক্ষতিকর একটা বিষয়। সাথিয়া য় থকে নির্বাচিত মতিউর রহমান নিজামীর অর্থ বরাদ্দের বিষয়টা প্রকাশ্যে এসেছে, এমন অভিযোগ আসলে সকল নির্বাচিত জামায়াত প্রতিনিধির বিরুদ্ধে উঠছে। তারা তাদের কাছে বরাদ্দ ব্যায়ের অধিকাংশই শিবির কর্মিদের হাতে তুলে দিচ্ছে।
জামায়াত অবশ্য সৎ লোকের শাসন নিয়ে বেশ লম্বা চওড়া কথা বলে অভ্যস্থ,তাদের সততা বোধ হয় এখানেই যে তারা নিজের কর্মিদের মানোন্নয়নের চেষ্টা করে, নিজেদের আত্মিয়দের বিভিন্ন সরকারী টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার বিষয়টাও অবশ্য জন সেবা। শিবির কর্মি বলে তাদের অমানুষ মনে করার কোনো কারন নেই, তারাও মানুষ, তাদেরও সেবা করা প্রয়োজন, এই কথাটা নির্লজ্জের মতো বলেছেন, জামায়াতের আমির এডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান, এবং তাকে নৈতিক সমর্থন দিয়েছেন, শাহ মোহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস।
খুব একটা খারাপ বিষয় না। নিজের দলের লোকদের দেখে রাখলে তারা ভোটের সময় কাজ করবে।
অন্য একটা ভালো লাগা বিষয় হলো, এই 40 লক্ষ লোকের বাইরে অন্তত 7 কোটি 60 লক্ষ মানুষ আছে যারা জামায়াতকে পছন্দ করে না, এই প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষেরাই ভবিষ্যতে দেশের কর্ণধার হবে, এবং ইসলামী শাসন ব্যাবস্থা প্রবর্তনের নামে জামায়াতের সামপ্রদায়িক রাজনীতির বিরোধিতা করবে।
যদিও 40 লক্ষ বেজন্মাদের জন্য খারাপ লাগলেও আশা করা যায় কোনো একদিন তাদের অর্ধেকের মোহমুক্তি ঘটবে এবং তারা সুস্থ জীবনে ফিরে আসবে। বাকি অর্ধেকে ক্লিনিক্যাল কেস ওদের সংশোধন সম্ভব না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।