ভস্ম হই। মৃত্যুর চুমু আমার কপোল ছুঁয়ে যায়। বেঁচে উঠি আবার। নতুন দিনের আশায়। বেঁচে উঠি বারবার।
গীটার যখন বাজাতে শুরু করি তখন ঢাকায় ক্রেজ চলছে মেটাল মিউজিকের। আসলে শুধু ঢাকায় না বরং সারা বিশ্ব জুড়েই। আমার বন্ধু হাসান, না না আর্কের হাসান নয় - অনেক সম্ভাবনা নিয়ে হারিয়ে যাওয়া হাসান - সে ছিল আমার গীটার শেখার অনুপ্রেরনা। এবং গাইডও বলা যায়।
গীটার ধরেছি আমি বহু দেরীতে।
ইন্টারমিডিয়েটের শেষের দিকে। বাচ্চু জেমসের গানগুলো তখন একটু একটু বাজাতে পারি। আর হাসান মাঝে মাঝে কিছু লেসন দিত। ওর সাথে থেকে থেকে আমি তখন মেটালিকা, আয়রন মেইডেন, মেগাডেথ এইসব শোনা শুরু করেছি। একটু একটু চুল বড় রাখা শুরু করেছি।
সিগারেট টানতে টানতে মোটামুটি চেইন স্মোকারের পযর্ায়ে চলে গেছি।
এমন সময় পরিচয় সবুজ নামের এক ছেলের সাথে। আমার সবসময়ের ফ্যান আমার ছোট ভাই। আমি যাই করি সে সেটাতে মুগ্ধ। আমার ছোট ভাই বোধকরি কারো কাছে গল্প করেছিল যে আমি খুব ভাল গীটার বাজাই।
সেটা সবুজের কানে পৌছালে আমার ভাইয়ের সাথে আমাদের বাসায় আসে। এসে তো সে টের পেল আমি তখনও নাদান। তো সবুজ তখন উলটো আমাকে কিছু জ্ঞান ট্যান দান করল। সবুজ তখনই খুব ভাল বাজাত। আর ও শুনত মূলত ইনসট্রুমেন্টাল জেনেরি।
আস্তে আস্তে সবুজের সাথে ঘনিষ্টতা বাড়ল। তখন সবুজ আমাকে কিছু গান শুনতে দিল জো স্যাটরিয়ানির। আরো কিছু ভাল গীটার প্লেয়ারের মিউজিকের সাথে পরিচয় তখন। কিন্তু জো এর মিউজিক সত্যিই আমার হৃদয় ছুঁয়ে গিয়েছিল।
জো এর গীটারে পর্দাপন 14 বছর বয়সে যখন জিমি হ্যানড্রিক্স নামে একজন গীটার লিজেন্ড মারা যান তখন।
জো ফুটবল খেলছিল - ক্যাপ্টেনের কাছে এসে বলল আমি আর ফুটবল খেলবো না - গীটার বাজাবো। সেই তার শুরু।
বিভিন্ন ধরনের গীটার টেকনিকে জো হচ্ছে অসাধারান। বেশ কিছু নতুন টেকনিকের আবিষ্কারক ও সে। তার ছাত্রদের মাঝে অনেক নামকরা লোকও আছে - স্টিভ ভেই থেকে শুরু করে কার্ক হ্যামেট (মেটালিকা)।
জো এর নামে বিখ্যাত গীটার কোম্পানী আইবানেজের একটি গীটার সিরিজও আছে। এখন সে ক্যালিফোর্নিয়ার কোন একটি কলেজে গীটার বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা দিয়ে থাকে।
জো যখন শুধু গীটার সোলো দিয়ে একটি এলবাম করার চিন্তা করে তখন এটা কিন্তু এক বড়সড় ব্যতিক্রম ছিল। কোন কথা ছাড়া শুধু মাত্র গীটার মিউজিক কতজন শুনবে সেটা ভেবে অনেক প্রডিউসার এগিয়ে আসতে সাহস পাননি। শেষ পর্যন্ত তার ডেমো এলবাম শুনে একজন প্রডিউসার সাহস করে এগিয়ে আসেন।
এরপর বাকিটা ইতিহাস।
আসলে প্রযুক্তির সহজলভ্যতা এবং সস্তায় এলবাম বের করবার ক্ষমতা এই ধরনের পরীক্ষামূলক কাজ করবার সুযোগ করে দিয়েছে। জিমি হ্যানড্রিক্স সহ আরো অনেকে কিন্তু মূলত গীটার শিল্পি ছিলেন। কিন্তু এরকম পদক্ষেপ নিতে পারেননি। তারা জন্মেছিলেন ভুল সময়ে।
জোয়ের বৌ রুবিনা কে নিয়ে কম্পোজ করা বেশ কিছু সফট মিউজিক আছে। অসাধারন সেগুলোর কম্পোজিশন। এর মধ্যে Rubina's Blue Sky Happiness, Always with you, always with me সহ আরো অনেক গুলো রয়েছে। ইদানীং বাংলা কিছু নাটকে জো এর মিউজিক গুলো মেরে দিতে দেখলে খুব খারাপ লাগে।
আমার গীটার হারিয়ে গেছে।
হারিয়ে যায়নি জো স্যাটরিয়ানি। এখনও সুযোগ পেলেই মেতে থাকি জো এর মিউজিক নিয়ে।
ওয়েবসাইট
http://en.wikipedia.org/wiki/Joe_Satriani
http://www.satriani.com/
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।