আমাদের একটা মানুষের সমাজ লাগবে খিষ্ট্রের জন্মেরও প্রায় ৩০০ বছর আগে ৩য় মৌর্য সম্রাট অশোক জন্মলাভ করেন। তার শাসনামলেই মৌর্য সাম্রাজ্য বিপুল বিস্তারি রুপলাভ করে। তবে এজন্য তাকে করতে হয়েছে অসংখ্য যুদ্ধ বিগ্রহ, এর মধ্যে কলিঙ্গের যুদ্ধের কথা ভুলে যাবার কোন উপায় নাই। ধারনা করা হয়ে থাকে প্রায় ১ লক্ষ মানুষ(সে সময়ে গোটা ভারতবর্ষে লোকসংখ্যা ছিল ১০ কোটির নিচে)২৬২ খিষ্ট্রপূর্বাব্দে সংগঠিত এ যুদ্ধে মারা যান। পরবর্তীতে মৌর্য সম্রাট অশোক চরম অনুতপ্ত হন এবং বৌদ্ধ ধর্মের অহিংসা মতবাদে ব্যাপক ভাবে আকৃষ্ট হন।
তদুপরি এই মৌর্য সাম্রাজ্য অশোকের মৃত্যুর পর টিকে ছিল ৫০ বছরেরও কম সময়। রোমিলা থাপারের লেখা এ হিস্টরি অফ ইন্ডিয়া বইতে এ ঘটনার বিস্তারিত আলোকপাত করা হযেছে। ইতিহাসে এমন ঘটনা অসংখ্য, শক্তির প্রচন্ডতায় চরম অত্যাচার নির্যাতন করেও অসংখ্য সাম্রাজ্য তাদের পতন ঠেকাতে পারেনি।
২০১৩ সাল, একটি গণযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে স্বাধীন হওয়া দেশে রাষ্ট্রীয় ছত্রছায়ায় শক্তিমদমত্ত নিরাপত্তা বাহীনির নির্যাতনে মারা যায় শামীম রেজারা। জনগনের দাবী আদায়ের মিছিলে গুলি করে প্রতিবাদকারীকে পঙ্গু করে দেয় বর্বর রাষ্ট্রীয় বাহীনি, লিমনকে বিনা অপরাধে গুলি করে তাকেই সন্ত্রাসী!! বানিয়ে মামলার পর মামলা দেয় রাষ্ট্রীয় সংঘবদ্ধ বাহীনি।
সেই দেশের রাজধানীর একটি বিশেষ এলাকায়(মিরপুর) রাত বাড়লে মানুষ যাতায়াত করতে ভয় পান। না ছিনতাইকারী বা ডাকাতের ভয়ে না ডি.বি.,পুলিশের অযথা জেরা হেনস্তার ভয়ে। বাসে যাতায়াতকালে ভাড়া নিয়ে ক্যাচালের জের ধরে সম্পূর্ণ "দিন আনে দিন খায় টাইপ" লোককে ধরে রাষ্ট্রীয় বাহীনি উরুতে শটগানের গুলি করে ডাকাত বানিয়ে চালান দেয়। সেই দেশে সন্ত্রাসী নয়, ডি.বি পুলিশের চাদাবাজি রুখতে ট্যাংক লড়ি মালিকরা ধর্মঘট ডাকতে বাধ্য হন। জনগনের বিপক্ষে করা বিভিন্ন চুক্তি বিরুদ্ধে সভা করতে চাইলে রাষ্ট্রীয় বাহীনি সে সমাবেশে নাশকতার গন্ধ পান, অনুমতি দেয়া সুদুর পরাহত।
সেই রাষ্ট্র সেই সরকার তার বিরুদ্ধ সকল শক্তিকে দমন করবার লক্ষ্যে অপরিসীম ক্ষমতাশালী আর রক্তপিপাসু করে তোলে নিরাপত্তা বাহীনিকে। ক্রমাগত সে দেশের মানুষ রাষ্ট্রীয় বাহীনির কাছেই সবচে অনিরাপদ বোধ করে। ইতিহাসের শিক্ষা, ওই রক্তপিপাসু বাহীনি শেষে তার পরিচালনাকারীদেরই আঘাত করে।
কলিঙ্গ রাজ্যের এক মহিলা সম্রাট অশোককে জিজ্ঞাসা করেছিল " আমার তো কেউ নেই, স্বামী পিতা পুত্র সবাই তো যুদ্ধে মারা গেছেন তবে আমি আর বেচে থাকব কেন?" । সম্রাট অশোকরা এর উত্তর দিতে পারেন না, তারা বুদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেন, দান খয়রাত করেন, মসজিদ মাদ্রাসা মন্দির বানান সওয়াবের লক্ষ্যে।
কিন্তু যে মানুষের প্রিয়জন হারায় তাদেরকে তাদের প্রিয়জনদের ফেরত দিতে পারেন না কোন দিন।
সেই স্বজন হারা মানুষদের, বঞ্চিত মানুষদের সংগঠিত সংগ্রাম আজকের ২০১৩ সালেও অসম্ভব জরুরী। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।