নামের সাথে কামের কিছু মিলতো থাকবোই
এখানে মুক্তিযুদ্ধ-জামায়াত,যুদ্ধপরাধী ইত্যাদি বিষয়ে সবার মতামত পড়লাম। রাজনীতি বা মুক্তিযুদ্ধ নিয়া লেখার যোগ্যতা আমার নাই, কিন্তু ইতিহাস থেকে যতটুকু জানি এবং আমার যুক্তি যা বলে তা এখানে তুলে ধরছি। ভুল হলে সংশোধন মুলক লেখা চাই। ব্যক্তিগত আক্রমন নয়।
সেদিন চ্যানেল আই এর তৃতীয়মাত্রা দেখছিলাম।
জাতীয়পার্টির একজন নেতা ছিলেন যিনি ব্যক্তিগত জীবনে মুক্তিযোদ্ধা এবং জামায়াতের কামারুজ্জামান। এখানে যে ধরনের লেখা দেখতে পাচ্ছি সেদিন প্রায় এধরনের আলোচনাই হয়েছিল। পার্থক্য হচ্ছে কামারুজ্জামান যে উত্তরগুলো দিয়েছিল তা "আস্তমেয়ে" দিতে পারেনি। সবার সুবিধার্থে আমি তাদের আলোচনার সারমর্ম তুলে ধরছি।
স্বাধিনতা যুদ্ধে জামায়াত চায়নি দেশ ভাগ হয়ে যাক।
আর এ কারনে তারা দেশ বিভাজনের বিপ েছিল। কিন্তু মেজরিটি পিপল যে দিকে মত দিয়েছিল জামায়াতেরও উচিৎ ছিল তা মেনে নেয়া যদিও তা দেশের জন্য খারাপ হোক। এটা জামায়াতের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ভূল।
জামায়াতের মা চাওয়ার প্রশ্নে বললেন- যে কোন রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন সময়ের প্রেেিত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে হয় যা পরবতর্ীকালে ভুল প্রমানিত হতেও পারে। উদাহরন হিসেবে বললেন শেখ মুজিবের বাকশাল কায়েম, রীবাহিনী গঠন, 4টি বাদে সকল পত্রিকা বিলুপ্ত, সকল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ, রীবাহিনী কতৃক হত্যা, দমন নিপিড়ন ছিল ভূল সিদ্ধান্ত।
যা মুলত শেখমুজিবের একনায়কতন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ। যার জন্য আওয়ামী লীগ আজ পর্যন্ত মা তো দুরের কথা দুঃখ প্রকাশ পর্যন্ত করেনি। বরং তারা আজও মনে করে সেটা ঠিক ছিল। মুল কথা হলো এটা ছিল উভয় দলের রাজনৈতিক ভুল।
স্বাধিনতা যুদ্ধে জামায়াতের নরহত্যা, ধর্ষন, লুটপাটের ব্যাপারে বললেন জামায়াতের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ যদি সত্যি হতো তাহলে স্বাধিনতা পরবতর্ী সকল সরকার ছিল মুক্তিযুদ্ধের পরে সরকার।
তারা চাইলেই তাদের বিচার করতে পারতো যদি তাদের বিরূদ্ধে অভিযোগ থাকতো। যুদ্ধাপরাধী হিসেবে জামায়াতের যে সকল নেতার নাম বলা হয় তারা এখন অনেকেই এলাকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। তারা দোষী থাকলে আর যাই হোক তার এলাকার লোক ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে সংসদে পাঠাতো না। জামায়াত যদি সত্যি যুদ্ধাপরাধী হতো তাহলে মতিয়া চৌধুরী নিজের গাড়ীতে করে নিজামী-মুজাহিদকে সাথে করে হাসিনার বাড়িতে মিটিং করতোনা। এরশাদ পতনের পর হাসিনা-খালেদা গোলাম আযমের বাসায় এসে দোয়া নিয়ে যেতনা।
এবার আমার ব্যক্তিগত একটা মতামত দেই। মতামতটা সাইদী সম্পর্কে। সাইদী জামায়াতে ঢুকেছে 86 বা 87 সালে কিন্তু এর আগে পর্যন্ত তার বিরূদ্দে কেউ সামান্যতম অপবাদও দেইনি। কেউ একবারও বলেনি সে স্বাধিনতা বিরোধী। বরং তাকে হুজুর ডেকে তার হাতে হাত মিলানোর জন্য সবাই ছিল অস্থির।
জামায়াতে ঢুকে সে হয়েছে একাত্তরের ঘাতক।
শুধু বিরোধীতার জন্য বিরোধীতা নয়। এর সাথে প্রয়োজন যুক্তি ও প্রমান। আজ শেখ হাসিনা মেজর জিয়াকে বলে- " কোথাকার কোন জিয়া যে একটাও গুলি ফুটিয়েছে কিনা সন্দেহ"। মুক্তযুদ্ধের একজন সেক্টর কমান্ডার সম্পর্কে কেউ এরকম মন্তব্য করতে পারে তা আমার জানা ছিলনা।
বিএনপি ভুল করেও শেখমুজিবের নাম মুখে আনেনা। শেখমুজিব গনতন্ত্রের মুখে লাথি মেরে বাকশাল কায়েম করেছিলেন। এ সবই ইতিহাস। এটা সত্য ইতিহাস থেকে আমাদের শিা নিতে হবে কিন্তু তার মানে এই নয় যে ইতিহাসের কারনে আমরা সর্বদা পিছনেই পড়ে থাকবো। 71 এ ভুমিকার কারনে একজন নিন্দিত হতে পারে কিন্তু তার বর্তমান কাজ দেখবোনা? 71 এর মুক্তযোদ্ধা যদি বর্তমানে চোর হয় তাহলে কি সে চুরির অপরাধে জেলে যাবেনা? 71 এ ভুমিকার কারনে মাফ পেয়ে যাবে? সবচেয়ে বড় কথা আপনি বিচার করুন কারা দেশের জন্য সত্যিকারের কাজ করে যাচ্ছে।
অতীত থেকে আমরা শিা নিব কিন্ত অতীত আকড়ে ধরে পড়ে থাকবোনা। আজ আওয়ামী-বিএনপি এর মধ্যে দা-কুমড়া সম্পর্ক অথচ উভয়ই মুক্তিযুদ্ধের পরে শক্তি। এরা নিজেদের মধ্যে মারামারি করে দেশটাকে রসাতলে নিয়ে যাচ্ছে। আধুনিক প্রজন্ম যারা রয়েছে তাদের দেশের নেতৃত্বে এসে দেশটাকে সমৃদ্ধশালী করা আমাদেরই দায়ীত্ব, অবান্তর ঝগড়া করা নয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।