একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত বিএনপির সাবেক মন্ত্রী আবদুল আলীমের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করা হবে যে কোনো দিন। দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গতকাল বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ মামলার রায় অপেক্ষমাণ (সিএভি) রেখেছেন। একই সঙ্গে জামিন বাতিল করে আলীমকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ট্রাইব্যুনাল-১ এ বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর মামলার রায়ও অপেক্ষমাণ রয়েছে।
আদেশের সময় ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন আলীম।
পরে তাকে কারাগারে নেওয়া হয়। আলীমের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যাসহ মোট ১৭টি অভিযোগ আনা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, মামলার রায়কে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। জামিনে রাখলে তিনি ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হতে পারবেন না, এমন আশঙ্কায় জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সুবিধাসহ তার স্বাস্থ্যগত বিষয় বিবেচনা করে অন্যান্য সুবিধা দেওয়ার জন্যও কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যত অভিযোগ : আবদুল আলীমের বিরুদ্ধে ১৭টি অভিযোগে গত বছর ১১ জুন বিচার শুরু হয়। প্রথম অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল তার নেতৃত্বে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থানার দমদমা গ্রামের মেহেরউদ্দিন চৌধুরীর বাড়িতে হামলা চালায় রাজাকার বাহিনী। এরপর বাড়ির মালামাল লুট করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার পর মেহেরউদ্দিন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশত্যাগে বাধ্য হন।
দ্বিতীয় অভিযোগ- ১৯৭১ সালের ২৬ এপ্রিল আলীমের নেতৃত্বাধীন রাজাকার বাহিনীসহ পাকিস্তানি সেনারা জয়পুরহাটের কড়ইকাদিপুর এলাকার চকপাড়া, সোনারপাড়া, পালপাড়া ও যুগীপাড়ার হিন্দু অধ্যুষিত গ্রামে হামলা চালান।
সেখানে লুটপাট ও অগি্নসংযোগের পর তারা অনেককে আটক করেন। কাদিপুরের বিভিন্ন স্থানে মোট ৩৭০ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তৃতীয় অভিযোগ- একাত্তরের আষাঢ় মাসের প্রথম সপ্তাহে আলীমের পরামর্শ ও প্ররোচনায় এবং চিরোলা গ্রামের শান্তি কমিটির সদস্য রিয়াজ মৃধার সহযোগিতায় ১১ জন পাকিস্তানি সেনা নওপাড়া, চরবরকত ও চিলোরা গ্রামের আনুমানিক ৫০০ জনকে আটক করেন। এরপর আলীমের দেওয়া তালিকা দেখে আওয়ামী লীগ, মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের আত্দীয় ২৮ জনকে রেখে বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই ২৮ জনকে পিছমোড়া করে বেঁধে আফাজের বাড়ির মাটির ঘরে নিয়ে গুলি করা হয়।
তাদের মধ্যে ২২ জন নিহত হন। ছয়জন বেঁচে যান। চতুর্থ অভিযোগ- মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে একদিন আলীম একটি ট্রেনে করে পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ে পাঁচবিবি বকুলতলা রেললাইনের কাছে নামেন। এরপর তারা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে কোকতারা, বাগজানা ও কুটাহারা গ্রামে হানা দিয়ে বাড়িঘরে লুটপাট চালান এবং আগুন ধরিয়ে দেন। সেখান থেকে ১৯ জনকে ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়।
পঞ্চম অভিযোগ- একাত্তরের বৈশাখ মাসের শেষ দিকে জয়পুরহাটের দক্ষিণ পাহুনন্দা মিশন স্কুলে আলীমের নির্দেশে ও প্ররোচনায় ৬৭ জন হিন্দুকে হত্যা করা হয়। এরপর স্থানীয়দের ডেকে এনে স্কুলের পশ্চিম পাশে বাঙ্কার খুঁড়িয়ে ওই ৬৭ জনের লাশ মাটিচাপা দেওয়া হয়। ষষ্ঠ অভিযোগ- একাত্তরের মে মাসের প্রথম দিকে জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে আবদুস সালাম, আবদুল কুদ্দুস, সমির উদ্দিন মণ্ডল, আবুল হোসেন মাঝি, আজিম হোসেন মাঝি, আবদুর রহমান, এবারত আলী মণ্ডল, আবদুস সাত্তার ও ফজলুর রহমানসহ ১০ জনকে আটক করা হয়। এরপর পাক সেনাদের হাতে তুলে দিলে তারা পাঁচবিবি থানার বাগজানা পুরনো রেলওয়ে স্টেশনের কাছে কোকতারা বকুলতলার পুকুর পাড়ে নিয়ে তাদের গুলি করেন। এদের মধ্যে মোফাজ্জল নামে একজন বেঁচে যান।
সপ্তম অভিযোগ- একাত্তরের ২৬ মে নওদা গ্রামের ইলিয়াসউদ্দিন সরদার, ইউসুফ উদ্দিন সরদার, ইউনুস উদ্দিন সরদার ও আবুল কাদের মোল্লাকে অপহরণ করা হয়। এরপর আলীমের পরামর্শে ওইদিন সন্ধ্যায় কালী সাহার পুকুর পাড়ে নিয়ে তাদের গুলি করে হত্যা করে লাশ মাটিচাপা দেওয়া হয়। অষ্টম অভিযোগ- মে মাসের শেষ দিকে ক্ষেতলাল হিন্দুপল্লী, উত্তরহাট শহর, হারুনজাহাটসহ বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা, লুটপাট ও অগি্নসংযোগ করে রাজাকার বাহিনী। আলীমের নির্দেশে বাদল, সচীন ওরফে ভানু, প্রবাস চন্দ্র শীল, মনিভূষণ চক্রবর্তী, কার্তিক চন্দ্র বর্মণ, নিমাই চন্দ্র বর্মণ ও প্রিয়নাথ বর্মণসহ অপরিচিত আরও তিনজনকে হত্যা করা হয়। নবম অভিযোগ- একাত্তরের ১৪ জুন বগুড়ার খোকন পাইকারসহ ১৫ জন যুবক জয়পুরহাটের আক্কেলপুর হয়ে ভারতে যাওয়ার পথে শান্তি কমিটির লোকজনের হাতে ধরা পড়েন।
এরপর আলীমের নির্দেশে তাদের হাত-পা বেঁধে নির্যাতন শেষে হত্যা করা হয়। পরে ওই গ্রামের ময়েন তালুকদারের ছেলেকে ধরে এনে গর্ত করে লাশগুলো মাটিচাপা দেওয়া হয়। দশম অভিযোগ- জুনের শেষ দিকে আলীম জয়পুরহাট সদর রোডের শাওনলাল বাজলার গদিঘরে শান্তি কমিটির অফিসে বসে 'মুক্তিযোদ্ধা' সন্দেহে পাহাড়পুর থেকে ধরে আনা ২৬ যুবককে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর দুটি ট্রাকে করে ওই যুবকদের জয়পুরহাট রেলস্টেশনের পশ্চিমে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে হাতে অস্ত্র ধরিয়ে দিয়ে ছবি তোলা হয়। ছবিসহ নেগেটিভগুলো আলীম নিয়ে গেলেও স্থানীয় 'আলোখেলা' স্টুডিওর মালিক এইচ এম মোতাছিম বিল্লাহ কয়েকটি নিজের কাছে রেখে দেন।
ছবি তোলার পর ওই ২৬ যুবককে ট্রাকে তুলে জয়পুরহাট সরকারি কলেজে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। ১১তম অভিযোগ- জুনের শেষ দিকে কয়েকজন গাড়োয়াল এবং তাদের আত্দীয়-স্বজনসহ ২৬ জনকে আটক করা হয়। এরপর আলীমের নির্দেশে খঞ্জনপুর কুঠিবাড়ি ব্রিজের কাছে নিয়ে গুলি হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। ১২তম অভিযোগ- ২৪ জুলাই ডাক্তার আবুল কাশেমকে অপহরণ করে ব্যাপক নির্যাতন করা হয়। পরে আলীমের নির্দেশে ২৬ জুলাই তাকে খঞ্জনপুর ব্রিজের কাছে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়।
১৩তম অভিযোগ- সেপ্টেম্বরে দুটি ট্রাকে করে মুখে কালি মাখানো ১১ জন যুবককে জয়পুরহাট থানা রোডের আজিমউদ্দিন সরদারের বাড়ির সামনে নিয়ে আসা হয়। পাকিস্তানি বাহিনী ও রাজাকাররা তাদের সরকারি ডিগ্রি কলেজে নিয়ে যায়। সেখানে আবদুল আলীমের নির্দেশে ওই ১১ যুবককে ট্রাক থেকে নামিয়ে বারঘাটি পুকুরের দক্ষিণ পাড়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। ১৪তম অভিযোগ- ৭ অক্টোবর আক্কেলুপুর সদরের ফজলুল করিম ও অন্য দুজনকে আটক করে আলীমের নির্দেশে মুখে চুনকালি লাগিয়ে জয়পুরহাট শহর প্রদক্ষিণ করানো হয়। পরে তাদের খঞ্জনপুর কুঠিবাড়ি ঘাটে নিয়ে নির্যাতনের পর গুলি করে হত্যা করা হয়।
১৫তম অভিযোগ- ২৫ আগস্ট পাঁচবিবি থানার সোলেমান আলী ফকির এবং তার দুই বন্ধু আবদুস সামাদ মণ্ডল ও উমর আলী মণ্ডলকে পাঁচবিবি বাজারে পাকিস্তানি সেনাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এরপর আলীমের নির্দেশে তাদের ওপর নির্যাতন চলে। ওই ২৫ জনের মধ্যে ২৩ জনকে হত্যা করা হয়। ১৬তম অভিযোগ- আলীম একাত্তরে আক্কেলপুরের বিভিন্ন স্থানে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেন। তিনি সোলায়মান আলী ফকিরের মিল প্রাঙ্গণ, আক্কেলপুর রেলওয়ে স্টেশন, বিভিন্ন মাদ্রাসায় স্থাপিত সেনাক্যাম্প, শান্তি কমিটির অফিস ও দুর্গাবাবুর দালানঘরে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন।
এতে রাজাকার ও শান্তি কমিটির সদস্যরা মানবতাবিরোধী অপরাধে উৎসাহিত হয়।
১৭তম অভিযোগ- চট্টগ্রামের কালুরঘাটের ১৭ উইংয়ের ইপিআর সুবেদার মেজর জব্বল হোসেন মুক্তিযুদ্ধে গুরুতর আহত অবস্থায় পাঁচবিবি ধুরইল গ্রামের নাজিমউদ্দিনের বাড়িতে আশ্রয় নেন। খবর পেয়ে রাজাকাররা ওই বাড়ি ঘেরাও করে জব্বলকে অপহরণ করে। পরে আলীমের নির্দেশে তাকে হত্যা করা হয়।
মামলার কার্যক্রম : অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১২ সালের ১১ জুন আবদুল আলীমের বিচার শুরু হয়।
তিনি ২০১১ সালের ২৭ মার্চ জয়পুরহাটের বাড়ি থেকে গ্রেফতার হন। এক লাখ টাকা মুচলেকা এবং ছেলের জিম্মায় ৩১ মার্চ জামিন নেন। পরে বেশ কয়েক দফা জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। প্রসিকিউশন ২০১২ সালের ১৫ মার্চ ট্রাইব্যুনালে তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে। অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরে ১৬ এপ্রিল মামলাটি ট্রাইব্যুনাল-২ এ স্থানান্তর করা হয়। মোট পাঁচ কার্যদিবসে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ ও রানা দাশ গুপ্ত। অন্যদিকে, আসামিপক্ষে ছয় কার্যদিবস যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন আইনজীবী তাজুল ইসলাম, আহসানুল হক হেনা ও আবু ইউসুফ মো. খলিলুর রহমান। আলীমের পক্ষে তিনজন সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছেন। আর তদন্ত কর্মকর্তাসহ মোট ৩৫ জন তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
তবে ১৯তম সাক্ষী আবেদ হোসেনকে বৈরী ঘোষণা করে জেরা করেছে প্রসিকিউশন। তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেওয়া দুজনের জবানবন্দিও সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
মাঈনুদ্দিন ও আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক শুরু আজ
মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত পলাতক চৌধুরী মাঈনুদ্দিন ও আশরাফুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। গতকাল বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ প্রসিকিউশনের সাক্ষী তদন্ত কর্মকর্তা আতাউর রহমানকে আসামি পক্ষের জেরা শেষ হয়। সাক্ষীকে জেরা শেষ করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আসামি পক্ষের আইনজীবী সালমা হাই টুনি।
গত মঙ্গলবার জবানবন্দি গ্রহণের পর সাক্ষীকে জেরা শুরু করেছিলেন এই আইনজীবী। গতকাল ট্রাইব্যুনাল এ মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন। এ মামলায় আসামি পক্ষের কোনো সাক্ষী নেই। গত ২৪ জুন আশরাফুজ্জামান ও মাঈনুদ্দিনের বিরুদ্ধে ৫ ধরনের ১১টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল।
কায়সারের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ : মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামিনে থাকা জাতীয় পার্টির সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
গতকাল তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে প্রসিকিউশনে। কায়সারের বিরুদ্ধে ৯ ধরনের ১৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে জব্দ তালিকার ১২ জনসহ ৮১ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
কামারুজ্জামানের আপিলের সারসংক্ষেপ জমার নির্দেশ
মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জানের আপিলের সারসংক্ষেপ ২৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আসামি পক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ৫ সদস্যের বেঞ্চ গতকাল এ আদেশ দেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।