শেয়ারবাজার থেকে পুঁজি জোগানের ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য নেই। হাতে গোনা কয়েকটি খাতেই পুঁজির জোগান সীমাবদ্ধ রয়েছে। গত চার বছরে পুঁজিবাজার থেকে জোগান দেওয়া বেশির ভাগ অর্থ গেছে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে।
২০০৮ থেকে ২০১১—এ চার বছরে মিউচুয়াল ফান্ডগুলো প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে বাজার থেকে তিন হাজার ২৭ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। এর ফলে অর্থ সংগ্রহের দিক থেকে একক খাত হিসেবে এটি শীর্ষে ছিল।
এই চার বছরে আইপিওর মাধ্যমে মোট অর্থ উত্তোলন করা হয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার ৯৪৩ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। বিআইবিএমের গবেষণা তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সালে আইপিওর মাধ্যমে যে পুঁজির জোগান দেওয়া হয়েছে, তার প্রায় ৭২ শতাংশই গেছে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে।
বিআইবিএমের গবেষণা তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সালে আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে এক হাজার ৩৯৩ কোটি টাকার মূলধন জোগান দেওয়া হয়। এর মধ্যে এক হাজার কোটি টাকাই গেছে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে।
৩১৪ কোটি টাকা জোগান দেওয়া হয়েছে প্রকৌশল খাতে, যা ওই বছর জোগান দেওয়া মোট অর্থের ২৩ শতাংশ।
পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের দিক থেকে মিউচুয়াল ফান্ড খাতটি শীর্ষে থাকলেও অর্থের ব্যবস্থাপনার দিক থেকে খুবই খারাপ অবস্থায় রয়েছে। পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, সাধারণ মানুষের অর্থ নিয়ে মিউচুয়াল ফান্ডের ব্যবস্থাপকেরা সেগুলোকে যথাযথভাবে ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
বিআইবিএমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহে কয়েকটি খাত, বিশেষ করে মিউচুয়াল ফান্ড এগিয়ে থাকলেও অন্যান্য খাতের অর্থায়ন খুবই নগণ্য।
জানতে চাইলে বিআইবিএমের শিক্ষক ও গবেষণা দলের সদস্য প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জি প্রথম আলোকে বলেন, অর্থায়নের ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য না থাকলে এবং উৎপাদনশীল খাতকে প্রাধান্য দেওয়া না হলে অর্থনৈতিক উন্নয়নে শেয়ারবাজারের অংশগ্রহণ বা অবদান বাড়বে না।
তাই বিভিন্ন খাতের কোম্পানিকে বাজারে আনার উদ্যোগ নিতে হবে। নিয়মিতভাবে বাজারে আইপিও সরবরাহ করতে হবে।
প্রশান্ত কুমার আরও বলেন, ‘শিল্পক্ষেত্রে তৈরি পোশাক খাত এ দেশের প্রধান রপ্তানি শিল্প হলেও শেয়ারবাজারে আমরা এ খাতের খুব বেশি উপস্থিতি দেখি না। একইভাবে বহুজাতিক ও বড় বড় শিল্পগোষ্ঠীও বাজারে নেই। ’
জানতে চাইলে সম্পদ ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠান অ্যালায়েন্স ক্যাপিটাল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ওয়ালিউল মারুফ মতিন প্রথম আলোকে বলেন, ২০১০ সালে শেয়ারবাজার ধসের পর শেয়ারবাজারে উৎপাদন খাতের কোম্পানি কম এসেছে।
এ কারণে এ সময় বাজার থেকে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে বেশি অর্থ গেছে। বর্তমানে বাজারে যেসব মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড রয়েছে, সেগুলোর প্রকৃত সম্পদ মূল্যের (এনএভি) সঙ্গে বাজারমূল্যের বেশ বড় ধরনের ব্যবধান রয়েছে। অর্থাৎ মেয়াদি তহবিলগুলো ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে যথেষ্ট দুর্বলতা আছে, এ কথা ঠিক। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।