আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রগতি সরণির শপিং মলকে ঘিরে কৃত্রিম যানজট

প্রগতি সরণির কুড়িল বিশ্বরোডে একটি শপিং মলকে ঘিরে তৈরি হওয়া যানজট নিয়ে নানামুখী অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আর এই অপপ্রচারের টার্গেট করা হচ্ছে পুলিশ ও সিটি করপোরেশনকে। পরিকল্পিতভাবে এ দুটি সংস্থার বিরুদ্ধে বিষোদগার করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছে, মার্কেটের সামনে সার্ভিস রোড না থাকা আর অবৈধ পার্কিংয়ের কারণে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। অথচ নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে মার্কেট সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে অপপ্রচার করা হচ্ছে পুলিশ ও ডিসিসির বিরুদ্ধে। যারা যানজট নিরসনে আন্তরিকভাবে কাজ করছে নানাভাবেই তাদের বিপাকে ফেলা হচ্ছে।

জানা গেছে, অপরিকল্পিত নির্মাণ ও বিনোদনকেন্দ্র তৈরি এবং মদের বারসহ নানামুখী কার্যক্রমের কারণেই যানজট তৈরি হয়েছে। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত পার্কিংয়ের ব্যবস্থা এবং মূল সড়কের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রেখে সার্ভিস রোড নির্মাণ করা হয়। সিটি করপোরেশন ও পুলিশ প্রশাসনের এ ধরনের প্রস্তাব না শুনে আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে স্বেচ্ছাচারিতায় লিপ্ত হয়েছে। তারা অপপ্রচার চালাচ্ছে পুলিশ প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনের বিরুদ্ধে। শাক দিয়ে মাছ ঢাকার কৌশল হিসেবেই তাদের এ তৎপড়তা বলে মনে করা হচ্ছে। শুধু মার্কেট চালাতে পুরো এলাকার বাসিন্দাকে তারা জিম্মি করে রাখার অপচেষ্টা করছে। পুলিশ প্রশাসন তাদের কথা না শুনলে চালানো হয় তাদের বিরুদ্ধে নানামুখী অপপ্রচার। ট্রাফিক পুলিশের একজন সদস্য জানান, তারা অবৈধ পার্কিং না করতে বারবার অনুরোধ জানালেও কোনো কাজে আসে না। মার্কেটের সামনে পার্কিং না করতে অনুরোধ করলে তাদের লোকজন তাদের হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। ডিসিসির এক কর্মকর্তা জানান, মার্কেটটির সামনে কিছু জায়গা ছেড়ে রাস্তায় দেওয়া হলে যানজট আর থাকবে না। তিনি বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট প্ল্যানে নতুনবাজার থেকে কুড়িল পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে ২৫ ফুট করে সার্ভিস রোড থাকার কথা ছিল। কিছু অংশে সার্ভিস রোডও আছে। এই রাস্তাটির দুই পাশে সার্ভিস রোড করে প্রশস্ত করলে যানজট সমস্যার সমাধান সহজ হয়ে যাবে। ওই মার্কেটের ফুডকোর্ট উদ্বোধনের পর থেকেই যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। মার্কেটে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে বলে বলা হলেও অধিকাংশ গাড়িকেই ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয় না। এতে করে গাড়ির মালিকরা বেকায়দায় পড়েন। তারা ওই শপিং মলের সামনের সড়কে এলোপাতাড়িভাবে গাড়ি পার্ক করে রাখে। ধীরে ধীরে অবৈধ পার্কিংয়ের কারণে ওই এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হতে থাকে। এদিকে শপিং মলটির কারণেই প্রগতি সরণি অচল হয়ে পড়ার আগাম আশঙ্কা করা হচ্ছে। মার্কেটটি ঘিরে হাজারো গাড়ির আনাগোনা এবং প্রগতি সরণি ঘেঁষেই মার্কেটের প্রধান গেট নির্মাণের কারণেই এ আশঙ্কা করছেন নগর বিশেষজ্ঞরা। আরবান ট্রান্সপোর্ট সংক্রান্ত একাধিক গবেষণা ও জরিপ কাজে সম্পৃক্ত ড. আজিজুর রহমান ও ড. লুৎফুন্নাহার জানান, প্রগতি সরণি ঘেঁষে বেশ কয়েকটি ব্যস্ততম মার্কেট গড়ে ওঠার কারণেই মূলত রোডটির স্থানে স্থানে যানজটের সৃষ্টি হয়। তারা বলেন, যমুনা ফিউচার পার্কের মতো বড় মার্কেটের প্রধান গেটটিও প্রগতি সরণি ঘেঁষেই করা হয়েছে। মার্কেটটি চালু হলেই রাস্তাটি মারাত্দকভাবে যানজটের কবলে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ হিসেবে তারা জানান, প্রধান সড়ক থেকে মার্কেটের দিকে ঢুকতে গেলেই ভয়ঙ্কর যানজটের সৃষ্টি হবে। রাজধানীর যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়ে জানান, যানজট নিরসনকল্পে যমুনা ফিউচার পার্ক মার্কেটের প্রধান গেট উত্তর দিকে লিংক রোডের মাধ্যমে গড়ে তোলা উচিত। এতে প্রধান সড়কটির ওপর চাপ পড়বে না, যানজটের ধকল সৃষ্টিরও আশঙ্কা থাকবে না। এদিকে প্রগতি সরণিতে যাতায়াতকারী যাত্রী সাধারণ অভিযোগ করে জানান, কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে নেমে প্রগতি সরণিতে ঢুকতেই বেশ প্রশস্ত সড়ক পাওয়া যায়। কিন্তু কুড়িল চৌরাস্তা মোড় পার হওয়ার পর থেকে যমুনা ফিউচার পার্কের পূর্ব দক্ষিণ কোণ পর্যন্ত রাস্তাটি অপ্রশস্ত হয়ে পড়েছে। দুই পাশেই ফুটপাত যোগ করা ছাড়াও নানা কারণে রাস্তাটি প্রায় অর্ধেক হয়ে পড়ায় গাড়ির ধকল সামাল দিতে পারে না। এক্ষেত্রে কুড়িল থেকে বসুন্ধরা গেট পর্যন্ত প্রগতি সরণিটি আরও প্রশস্ত করারও দাবি জানিয়েছেন যাত্রীরা।

সংশ্লিষ্ট এলাকার ট্রাফিকের উপ-কমিশনার রুহুল আমিন এ প্রসঙ্গে বলেন, প্রগতি সরণির যানজট নিরসনে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরামর্শ চাওয়া হয়েছে। তাদের সুপারিশ অনুযায়ী সিটি করপোরেশন সিদ্ধান্ত নিলে ট্রাফিক পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) মাসুদুর রহমান বলেন, ট্রাফিক পুলিশের কাজ যানবাহন নিয়ন্ত্রণ। কোথায় সিগন্যাল পয়েন্ট হবে, আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকার প্রবেশপথ হবে তা নির্ধারণ করে রাজউক, সিটি করপোরেশনসহ অন্য সংস্থাগুলো। কিন্তু দুঃখজনকভাবে একটি দৈনিক লাগাতারভাবে পুলিশ বিভাগের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে প্রচারণা চালাচ্ছে। এদিকে গুলশান, বাড্ডা এলাকায় কর্তব্যরত ট্রাফিক কর্মকর্তারা বলছেন, কুড়িল ফ্লাইওভার চালুর পরও প্রগতি সরণিসহ কুড়িল বিশ্বরোডে যানজটের নানা কারণ রয়েছে। রাজধানীর অন্য অনেক স্থানের মতো বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার প্রবেশপথের কারণে কখনই তীব্র যানজট হয় না। এর জন্য বেশি দায়ী যমুনা ফিউচার পার্কে যানবাহন ঢোকানোর প্রক্রিয়া। তাদের প্রক্রিয়ায় মূল সড়কে যানজট লেগে যায়। পার্কে গাড়ি ঢোকানোর আগে কিছু যানবাহন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা-সংলগ্ন স্থানে এলোমেলো পার্কিং করে রাখে। যা যানজট তৈরি করে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলেও বিশেষ মহল বাধা দেয়।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.