একটি বাংলা দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার রুশ দূতাবাসের এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এই খবরের কোনো ভিত্তি নেই।
রুশ দূতাবাসের উপ-প্রধান আনাতোলি ওয়াই ডেভিডেঙ্কো বলেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চলমান ঘটনাবলির কারণে ব্যস্ততার জন্য ঢাকা সফরের সময় করে উঠতে পারছেন না পুতিন।
দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনার চুক্তিতে বাংলাদেশের দিক থেকে অগ্রগতিতে ক্রেমলিন সন্তুষ্ট না হওয়ায় ২ অক্টোবর শেখ হাসিনার সঙ্গে রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিস্থাপনের নির্ধারিত অনুষ্ঠানে আসছেন না পুতিন।
আনাতোলি ডেভিডেঙ্কো বলেন, “প্রথমত, আমি এই ভ্রান্ত তথ্য সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করছি। এ ধরনের তথ্যের কোনো ভিত্তি নেই।
”
রুশ প্রেসিডেন্টের ব্যস্ততা বোঝার জন্য সবাইকে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “… পুতিনের মতো এরকম একজন নেতা, রাশিয়ার মতো একটি দেশের নেতা। দয়া করে আপনার বুঝতে চেষ্টা করুন, তিনি কতটা ব্যস্ত।
“আপনারা জানেন সিরিয়ায় কী হচ্ছে… রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কেও জানেন আপনারা। এটা একটা বাড়তি সমস্যা হিসেবে যুক্ত হয়েছে। আর সব সমস্যাই দেখতে হচ্ছে প্রেসিডেন্টকে।
”
পুতিন গত জানুয়ারিতে দেয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছিলেন।
“এটা কর্মসূচির মধ্যে থাকলেও তার (পুতিন) ব্যস্ততার কারণে সম্ভব হচ্ছে না,” বলেন রুশ কর্মকর্তা।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকাস্থ রুশ সংস্কৃতি কেন্দ্রের প্রধান আলেক্সান্ডার পি ডেমিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মস্কো সফরের প্রস্তুতি নিতে প্রায় এক বছর সময় লেগেছিল।
“তাই রাশিয়ার দিক থেকেও সফরের বিষয়টি খুবই জটিল। ”
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিস্থাপন অনুষ্ঠানে রাশিয়ার স্টেট অ্যাটমিক এনার্জি কমিশন রোসাটমের মহাপরিচালক আসছেন, তিনি মন্ত্রী পদমর্যাদার কর্মকর্তা।
রোসাটমের মহাপরিচালক নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল ১ অক্টোবর ঢাকায় পৌঁছাবে। পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র ভিত্তিস্থাপনের আগে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র তথ্যকেন্দ্র উদ্বোধন করবেন তিনি।
রাশিয়ার সহযোগিতায় পাবনার রূপপুরে ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন দেশের প্রথম পরমাণু কেন্দ্রের কাজ আগামী ২ অক্টোবর শুরু হচ্ছে। এজন্য ২০১১ সালের ২ নভেম্বর রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি সই হয়।
চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়া এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণসহ অবকাঠামো ও মানব সম্পদ উন্নয়নে সহায়তা করবে।
এছাড়া দীর্ঘ মেয়াদে জ্বালানি সরবরাহ এবং ব্যবহৃত জ্বালানি ফেরত নেবে রাশিয়া।
গত জানুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাশিয়া সফরের সময় সমরাস্ত্র কেনা ও পারমানণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের লক্ষ্যে রাশিয়ার কাছ থেকে ১২ হাজার কোটি টাকা পেতে তিনটি ঋণ চুক্তি সই হয়।
এর মধ্যে সেনা ও বিমান বাহিনীর সমরাস্ত্র কেনার জন্য প্রায় ৮ হাজার কোটি ঋণ নেয়া হবে। রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে আরো ৪ হাজার কোটি টাকার ঋণ নেয়া হবে।
সংসদীয় কমিটিতে উপস্থাপিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২ এপ্রিল রূপপুর পারমাণবিক বিদুৎ কেন্দ্রের প্রথম পর্যায়ের কাজ একনেকে অনুমোদিত হয়।
প্রকল্পের মোট ব্যয় ৫ হাজার ৮৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১ হাজার ৮৭ কোটি টাকা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।