কার্জন কামাল নামে এই ব্লগ এ কোন জীবিত মানবের উপস্থিতি আজ অবধি চোখে পড়েনি...শুধুই একটি জীবিত নাম...
পুলিশ জনগণের সেবক নাকি শোষক?কাগজে পুলিশ কে জনগণের সেবক বলা হলেও পুলিশের সেবার মান শোষণের চরম পর্যায় অতিক্রম করেছে। পুলিশের সেবা শুধু বিজ্ঞাপন সর্বস্ব বর্তমানে বাংলাদেশে পুলিশের অপরাধ প্রবণতা ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। পথে ঘাটে পুলিশের ডিজিটাল প্রতারণার শিকার যারা হয়েছেন তারাই কেবল বলতে পারবেন পুলিশের নাগরিক সেবা কত প্রকার ও কি কি.। ? অদক্ষ,অশিক্ষিত মেধাহীন পুলিশ কখনো মানুষকে সেবা দিতে পারেনা পারে শোষণ করতে। বর্তমানে ডিএমপি (ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশ)কে গোপালগঞ্জ রেঞ্জ বলা হয়।
কারণ ডিএপির প্রতিটা থানা এখন গোপালগঞ্জ রেঞ্জ এর দখলে। ফলে এরা এতোই বেপরোয়া যে এদের হাত থেকে পাওয়ার পার্টির লোকেরাও নিস্তার পায়না। পুলিশ নিয়ে অনেকের মুখেই অনেক কথা শুনেছি তবে কখনো নিজে সেটা সাফার করিনি। সর্বশেষ আপীল শুনানিতে কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় হওয়ার পর জামাত যে হরতাল ডাকে সেই হরতাল এর প্রথম দিন সন্ধ্যায় কাজিন কে কাকরাইল এ ডাক্তার দেখিয়ে রায়ের বাগে তার বাসায় পৌঁছে দিয়ে ফেরার পথে প্রথম যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশের ডিজিটাল বাটপারির শিকার হই। চেকিং এর নামে ব্যাক পকেটে থাকা ১৬০০ টাকা খুব সহজেই ছিনতাই করে তারা।
অন্ধকার সব লোকেশন গুলো হয় তাদের চেকিং এর প্রথম চয়েস। তারউপর একজন চেকিং এর নামে মারিং করে আর বাকীরা পাশে বেরিক্যাড দিয়ে রাখে যেন বাইরে থেকে কোন কিছু বুঝা না যায়। সাধারণ মানুষকে পাশে ঘেঁষতে দেয়া হয়না। সেদিন ভাবছিলাম হরতাল তাই হয়তো এই সুজোগটা তারা কাজে লাগাচ্ছে। কোরবানীর মার্কেটিং এর টাকা ম্যানেজ করতে হবেনা????????
কিন্তু আজতোরে বাপ কোন হরতাল ছিলনা?কাল কাজিন বলল ডাক্তার এর ওষুধ খাইয়া ওর সারাদিন মাথা ঘুরছে।
সেজন্য আজ আবার ওকে আসতে বললাম। সন্ধ্যা ৬ টায় ডাক্তার এর ভিজিটিং আওয়ার। ফলে একা এলেও একা ওকে যেতে দেইনি। ডাক্তার দেখিয়ে সন্ধ্যায় মালিবাগ থেকে রিক্সা রিজার্ভ করে ওকে নিয়ে যাচ্ছি রায়ের বাগে ওর বাসার দিকে। শনির আখড়া ব্রিজ এর কাছাকাছি গেলে আবছা অন্ধকার এর মধ্যে পেছন থেকে রিক্সাওলাকে কেউ ডাক দিয়ে রিক্সা থামাতে বলল।
রিক্সা থামানোর পর আর্মস পুলিশের ইউনিফর্ম পরা একজন সিপাহী আমাকে রিক্সা থেকে নামতে বললেন। আমি নামলাম। বাসা কোথায় জানতে চাইলেন আমি বললাম মালিবাগ। কোথায় যাচ্ছি জানতে চাইল-আমি জানালাম রায়ের বাগ যাব। সাথের মেয়েটি আমার কি হয় জানতে চাইল আমি বললাম কাজিন।
কোথা থেকে আসছি জিজ্ঞাসা করার পর আমি বললাম মালিবাগ থেকে। এবার সিপাহী তার বস(সাব-ইন্সফেক্টর টাইপের কিছু হবে)তাকে ডাকলেন। তিনি এসে আমাকে কিছু না বলে রিক্সায় বসে থাকা আমার কাজিন এর পার্টস(মেয়েদের একধরনের হাত ব্যাগ) চেক করতে চাইলেন। ও আপত্তি করার পর লোকটা জোর করে তার ব্যাগ ধরে টানাটানি শুরু করলে আমি এগিয়ে গিয়ে তার নাম জানতে চাই। তিনি সেই সিপাহীকে ইশারা দিলে তিনি আমাকে টেনে অন্যদিকে নিয়ে যান আর এই ফাঁকে লোকটি অন্ধকার এ আমার কাজিন কে নানান উল্টা পালটা কথা বলতে থাকেন।
পরে আমি তারা কোন থানা থেকে এসেছেন জানতে চাইলে ওই সিপাহী যাত্রাবাড়ী থানা বলে জানায়। আমি মোবাইল বের করে যাত্রাবাড়ী থানার ওসির মোবাইল নাম্বার খুঁজতে থাকি। সিপাহী সেটা বুজতে পেরে আমার হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নেয়। কাজিন এর হাতে নকিয়া লুমিও আর এন৮ সিরিজের ২টা মোবাইল। এর মধ্যে ওই সাব ইন্সফেক্টর আমার কাজিন এর ব্যাগ নিয়ে যায়।
আমি এর কারণ জানতে চাইলে ব্যাগে ইয়াবা আছে এই বলে হন্তদন্ত হয়ে তিনি তার বস(এসআই-অন্ধকারে নেইম প্লেট দেখতে পাইনি)তার কাছে চলে যান। আমি ইয়াবা কোথায় আছে দেখতে চাইলে এসআই আমাকে এ্যারেস্ট করার কথা জানান। আমি এর কারণ জানতে চাইলে প্রথমে বলল-আপনি সন্ধ্যা বেলা একটা মেয়েকে নিয়ে রিক্সায় ঘুরছেন এটা আপনার অপরাধ। আমি বললাম বাংলাদেশের কোন আইনে এটা নিষেধ করা হইছে আমাকে সেই আইনটা দেখান। বলল থানায় গেলে দেখতে পারবেন।
এরপর বলল-বাড়াবাড়ি করলে ইয়াবার মামলায় ফাঁসাবেন। আমি বললাম ইয়াবা কি আপনারা সাথে নিয়ে ঘুরেন নাকি?বলল হ্যাঁ তোমার মত লোকদের জন্য ওইগুলা আমরা সব সময়েই পকেটে রাখি। আমি বললাম বাহ বেশতো!!
অবশেষে বাধ্য হয়ে বললাম আমি এলিট পার্টির লোক। পদবী বলার পর ওই এসআই আমার হোম ডিসট্রিক্ট কই জানতে চাইলেন আমি বলার পর তিনি নিজের পরিচয় দিলেন। ছাত্রলীগের সভাপতি তার বন্ধু।
তার বাড়ী গোপালগঞ্জ এর টুঙ্গিপাড়ায়। তিনি বঙ্গবন্ধু কলেজের সাবেক ভিপি আরো অনেক অনেক লম্বা লম্বা পরিচয়। পরে আমি বললাম আচ্ছা আমি আপনার ওসির সাথে কথা বলব মোবাইল টা দিন। দিলোনা। বললাম ঠিক আছে আমার কাজিন অসুস্থ্য ওকে ছেড়ে দিন আমি থানায় যাচ্ছি।
ওকে ছেড়ে দিল কিন্তু ওর ব্যাগ আর মোবাইলগুলো রেখে দিল। আমি বললাম ব্যাগ এ ইয়াবা পাইছেন(ব্যাগের ভেতরের টাকা গুলো পুলশের হাতে যাওয়ার পর ইয়াবা হয়ে গেল!!)মোবাইল এ কি পাইছেন?কোন উত্তর না দিয়ে ফিস ফাস করে নিজেদের মধ্যে কি জানি বলাবলি করল তারপর আমাকে বলল ঠিক আছে তুমি যাও। আমি মোবাইল হাতে নিয়ে ওসিকে ফোন দিলাম তাকে পেলাম না। এক পরিচিত সাংবাদিককে ফোন দিলাম তাকে পেলাম না। অবশেষে একজন আউটপুট এডিটর কে বললাম বিষয়টা সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে একটা নিউজ কাভার করতে।
তিনি বললেন-ভাই এমন ঘটনাতো ঘটছেই আমরাও লিখছি,কিন্তু কাজের কাজতো কিছুই হচ্ছেনা। তবুও তিনি বিষয়টা নিয়ে একটা নিউজ করার আশ্বাস দিলেন।
সবশেষে একটা বানীই মনে পড়ল-
"শুনো হে মানুষ ভাই,সবার উপরে পুলিশ সত্য তাহার উপরে নাই.। .। .।
। "
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।