রাইন নদীর পারে সুন্দর-শান্ত একটি এলাকা আসমানহাউজেন।
অধিবাসীর সংখ্যা ১ হাজার। সেখানকার রাইনের তীর প্রধানত জাহাজ ঘাট বা জেটি হিসেবেই ব্যবহৃত। এখান থেকেই ছোট ছোট জাহাজ প্রতিদিন পর্যটকদের নিয়ে যায় সেই বিখ্যাত পাথুরে খাড়া পাহাড়। দেখতে যা 'মৎস্যকন্যা লোরেলাই' নামে পরিচিত।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বছরে প্রায় ২০ মিলিয়ন বা দুই কোটি পর্যটক আসেন এই 'মিডল রাইন ভ্যালি'তে, লোরেলাই দেখার জন্য দিনের ভ্রমণে পাড়ি জমান তারা। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই 'লোরেলাই'-এর গল্প জানেন। ২০০২ সাল থেকে লোরেলাই ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত। এই সেই পাহাড। যেখান থেকে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন সর্বনাশী মৎস্যকন্যা লোরেলাই সূর্যস্নাত দিনে জাহাজের ডেকে আইস বা ঠাণ্ডা পানীয় নিয়ে বসে পর্যটকরা আনন্দময় পরিবেশে উপভোগ করেন ধীরে ধীরে সরে যাওয়া নদীর পাড়ের অপরূপ দৃশ্য? পুরনো দুর্গ বা কাসেল, কাঠের ঘর, সবুজে ঘেরা বনান্তর আর সরস সবুজ আঙ্গুর খেত বা ভিনিয়ার্ড।
প্রায় দেড় ঘণ্টা নৌপথ পাড়ি দিয়ে রাইনের মতোই একটি পাহাড়। এই পাহাড় এবড়োথেবড়ো প্রস্তরময় উঁচু। খুব চোখে পড়ার মতো কিছু নয়। কিন্তু রাইনের মতোই একে ঘিরে রেখেছে কাল্পনিক, পৌরাণিক এবং কাব্য কাহিনী, যা ছড়িয়ে পড়েছে আটলান্টিক মহাসাগরের ওপার অবধি। ১৮০১ সালে রোমান্টিক ধারার কবি ও লেখক ক্লেমন্স ব্রিন্টানো তার বিয়োগান্তক কাহিনীতে লোরেলাইকে এক জাদুকরী নারীর রূপ দিয়েছিলেন।
এই পাহাড়ের কাছেই ছোট্ট একটি এলাকা বাখারাখে ছিল তার বাস। যে কোনো পুরুষই মুগ্ধ হয়ে যেত তার রূপে। এক বিশপ তাকে মঠে নিয়ে আসার আদেশ করেন। যাওয়ার পথেই শেষবারের মতো একবার দেখতে চায় তার ভালোবাসার স্থান। উঠে আসে এই পাহাড়ে।
মৃদু গানের সঙ্গে উড়ছিল তার সোনালি চুল। তারপর সেই উঁচু থেকেই সে ঝাঁপিয়ে পড়ে রাইনের বুকে। লোরেলাই খ্যাত পাহাড়ের পাশ দিয়ে বয়ে চলা রাইন। লোকগাথায় আছে একটি ভ্রাম্যমাণ জাহাজের নাবিকেরা মুগ্ধ চোখে উপরে তাকিয়ে দেখছিল দাঁড়িয়ে থাকা 'লোরেলাই'-এর সেই অপরূপ রূপ। পথভ্রষ্ট জাহাজ ধাক্কা খায় পানির তলার কঠিন পাথুরে শিলায়।
বিধ্বস্ত হয় জাহাজ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।