গতকাল ছিল বিসিবির নির্বাচনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহের দিন। দুপুর ১২টায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) টাওয়ারে আসার কথা বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও তার প্যানেলের। কিন্তু সময় পেরিয়ে যখন ১টা, তখনো দেখা নেই তাদের। ঘড়ির কাঁটায় যখন দেড়টা, তখন দুই সর্বক্ষণিক সঙ্গী ইসমাইল হায়দার মলি্লক ও লোকমান হোসেন ভুইয়াকে নিয়ে এনএসসি টাওয়ারে ঢুকেন বিসিবি সভাপতি। বিসিবি সভাপতির পর পরই টাওয়ারে ঢুকেন একে একে আফজালুর রহমান সিনহা, আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি, জালাল ইউনুস, মঞ্জুর কাদের, শওকত রাসেল, আজিজ খান, নাইমুর রহমান দুর্জয়, খালেদ মাহমুদ সুজন, আকরাম খান, গাজী আশরাফ হোসেন লিপুরা।
আট তলায় এসে সচিবের রুমে অপেক্ষা করে জানতে পারেন মনোনয়নপত্র দেওয়া হবে পঞ্চম তলায়। তখন সঙ্গী-সাথীদের নিয়ে নেমে আসেন পঞ্চম তলায়। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে যখন মিডিয়া রুমে প্রবেশ করেন, তখন ২০-৩০ জন তরুণ স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে তুলে পরিবেশ, 'পাপন ভাইয়ের দুই নয়ন, ক্রিকেটের উন্নয়ন। ' 'পাপন ভাই এগিয়ে চল, আমরা আছি তোমার সঙ্গে। ' তরুণদের ওই স্লোগানেই নির্বাচনী আমেজ তৈরি হয় এনএসসি টাওয়ারে।
এর মধ্যে প্যানেলের পক্ষে সবার আগে মনোনয়নপত্র ক্রয় করেন নাজমুল হাসান পাপন স্বয়ং। এরপর একে একে ক্রয় করেন দুর্জয়, সুজন, আকরামসহ ৪৩ জন কাউন্সিলর। নির্বাচনে কাউন্সিলর হলেও মনোনয়নপত্র কেনেননি সাবের হোসেন চৌধুরী। আদালত অবমাননা হবে বলে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না সাবের ও তার সমর্থকরা। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার তারিখ ৩ অক্টোবর।
বিসিবির নির্বাচন ১০ অক্টোবর।
সাবের হোসেন নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ায় নির্বাচন অনেকটাই একপেশে হয়ে পড়েছে। যদিও সম্মিলিত পরিষদের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলেই ধারণা করছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। সাবেরের সরে দাঁড়ানোয় নির্বাচন হয়ে পড়েছে এখন একপেশে। তবে বিসিবি সভাপতি পদপ্রার্থী পাপন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য সাবেরকে অনুরোধ করেছেন, 'ক্রিকেটের স্বার্থে তার নির্বাচন করা উচিত।
নির্বাচনে জয়-পরাজয় থাকবেই। ক্রিকেটের স্বার্থেই তিনি নির্বাচন করুন। সাবের ভালো লোক। তাকে তার সঙ্গীরা ভুল বোঝাচ্ছেন। তিনি নির্বাচন করলে পরিষ্কার হয়ে যাবে তাদের মুখোশ।
' গতকাল মনোনয়নপত্র ক্রয় করার পর দুপুরে মিডিয়ার মুখোমুখি হন বিসিবি সভাপতি। তিনি জানান, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ক্রিকেটের সুনাম নষ্ট করার চক্রান্ত চলছে, 'ক্রিকেট নিয়ে অনেক মিথ্যাচার হচ্ছে। এতে দেশের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ইমেজ। ' নির্বাচন দেরিতে হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন বিসিবি সভাপতি।
তবে এর জন্য প্রতিপক্ষের মামলাকে দোষারোপ করেন, 'নির্বাচন আরও আগে হতে পারত। কিন্তু এক পক্ষের মামলায় সেটা পিছিয়ে গেছে। তারপরও নির্বাচন হচ্ছে। সে জন্য ভালো লাগছে। নির্বাচন সুপ্রিমকোর্টের অ্যাপিলায়েড ডিভিশনের নিয়ম মেনে।
' যে গঠনতন্ত্র অনুসরণ করে নির্বাচন করা হচ্ছে, সেটা আইসিসির নীতিমালা অনুযায়ীই হচ্ছে বলে জানান বিসিবি সভাপতি, 'আইসিসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচন করার কথা ছিল। কিন্তু আমরা মামলার জন্য করতে পারিনি। অবশ্য আমাদের সময় দেওয়ার জন্য আইসিসিকে ধন্যবাদ। ' নির্বাচন করা হচ্ছে দুটো কারণে বলে জানান বিসিবির সভাপতি, 'প্রথমত আইসিসির বাধ্যবাধকতা থাকায় নির্বাচন করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে নির্বাচন করা হচ্ছে।
'
সাবের হোসেন চৌধুরী নির্বাচন থেকে সয়ে দাঁড়িয়েছেন আদালত অবমাননার ভয়ে। কিন্তু বিসিবি সভাপতি আগেই আভাস পেয়েছেন তার সরে দাঁড়ানোর, 'আমার মনে হচ্ছে তিনি নির্বাচন করবেন না। নির্বাচন করতে যে প্রক্রিয়া করা উচিত, সেটা তিনি করেননি। তখনই আমার মনে হয়েছে তিনি নির্বাচন করবেন না। '
মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পর এখন বিসিবি পুরোপুরি নির্বাচনে জড়িয়ে পড়ল।
তবে সাবের সরে দাঁড়ানোয় নাজমুল হাসান পাপনের বিসিবি সভাপতি হওয়ার পথে আর কোনো বাধা থাকল না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।