"...আমি তোমাদেরই লোক, আর কিছু নয়, এই হোক শেষ পরিচয়। । " [রবি ঠাকুর] নিজেকে অভ্র হিসেবে পরিচয় দিতে ভালোবাসি । আর ভালোবাসি লেখালেখি করতে । তবে সেসব লেখা তেমন সুখাদ্য হয় বলে মনে করি না ।
কিন্তু তবুও লেখি ।
ব্লগিং জগতে আমি নতুন । আগে যা লেখালেখি করেছি, তা শুধু নিজের পড়ার খাতায় আর ফেসবুক নামক সামাজিক যোগাযোগ সাইটে । এইখানে অনেক ভালো ভালো লেখক, ব্লগার আছেন । যাদের লেখায় ভুল ধরাটা খড়ের গাদায় সুঁই খোঁজার মত হয় প্রায় সময় ।
আমি নতুন হিসেবে অনেক ভুল-ত্রুটি থাকতে পারে । আশা করছি ভুলগুলো ধরিয়ে দেবেন আর ওগুলোকে একটু ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন । আপনাদের মত অভিজ্ঞরা যদি ভুলগুলো ধরিয়ে দেন, তাহলে ওইটাও আমার কাছে অনেক বড় অর্জন বলে মনে হবে । আরো ভালো করার উৎসাহ পাবো ।
আমার আশেপাশে ঘটে যাওয়া, আমার দেখা কয়েকদিনের কিছু ঘটনাকে নিজের মত করে সাজিয়ে লিখবো বলে ‘আমার দিনরাত্রি’–র জন্ম ।
আমি ব্লগিং জগতে প্রবেশ করেছি আমার মতে ১লা জানুয়ারি থেকে । তাই ওইদিন থেকেই আমার কথাগুলোর শুরু ।
# সবার আগে বলতে হচ্ছে নতুন বছর ২০১৩ এর আগমন এর কথা । ২০১৩ সালটা যেন হঠাৎ করেই এসে পড়ল । আসলে ২০১২ সালটার মধ্যে এতটাই মজে ছিলাম যে, কখন বছরটা শেষ হয়ে গেল টেরই পেলাম না ।
২০১২ বছরটা অনেক ঘটনাবহুল একটা বছর, আমার জন্য । ওই বছরে আমার জীবনের অনেক বড় একটা জিনিস খুঁজে পেয়েছি আমি । তাই ওই বছরটাকে বিদায় জানাতে একটু কষ্টই হয়েছে ।
হ্যাপি নিউ ইয়ারে কতজনে কত সুন্দর সুন্দর ফুল্টু ফুল্টু মেসেজ পায় । কিন্তু আমার কপালটা অতিমাত্রায় খারাপ হওয়ায় আমি একটাও পেলাম না ।
একটাও না । ওই হিসেবে ২০১৩ এর প্রতি একটা আলাদা ছোট্ট অদ্ভুত ক্ষোভ আছে ।
# বর্তমানে কিছু ধর্ষণের ঘটনায় আমরা সবাই সরব । অনেক লেখালেখি চলছে এ ব্যাপারে । সবাই সবার মতামত জানাচ্ছে ।
আমাদের মধ্যে অনেকেই বলে, এইসব ধর্ষণ এর মত কাজগুলো মেয়েদের পর্দা না করার কারণে হয় । আমিও এই কথার সাথে একমত । মানছি, মেয়েরা যদি তাদের পোশাক-আশাকের ব্যাপারে সচেতন হত তাহলে আর এইসব ব্যাপার ঘটত না । কিন্তু একটা কথা । আমাদের দেশে যে সব ছোট্ট ছোট্ট মেয়েগুলো ধর্ষিত হয়, ওদের ব্যাপারটা কি? একটা প্রাইমারীর মেয়েও কি বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করে হাঁটে? ওরাও কি অন্যরকম দৃষ্টিতে তাকায়? ওরা কি পর্দা করবে? ওরা কি এখনো এইসব ব্যাপার ঠিকমত বোঝে? আমি জানি না বোঝে কিনা ।
এইতো গত পরশু যে ঘটনাটা ঘটল, ওইটাতে কি বোঝা যায়? শিশু শ্রেনীতে পড়ুয়া মাত্র ছয়ব বছরের একটা বাচ্চা মেয়েকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে । কি বলব আর??? এইখানে নিশ্চয়ই কোনো ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের প্রয়োজন নেই ।
আমাদের দেশের ওইসব ঘটনাগুলোর বিচার কেন যে এত দেরীতে হয় বুঝি না ।
সম্প্রতি দিল্লির ব্যাপারটা ছাড়া আমাদের দেশের টাঙ্গাইলের খবরটা মনে আছে । আরো অনেক ঘটনাই শুনছি ।
তবে তেমন খেয়াল করি না । হয়তো ভুক্তভুগী না, তাই...
# কিছুদিন আগের বিশ্বজিতের ঘটনাটার কথা একটু বলতে চাই । এই কয়েকদিনে বিশ্বজিতের ব্যাপারটা নিয়ে অনেক চিন্তা-ভাবনা করেছি । কোন কারণে নয়, এমনিতেই মাথায় আসছে তাই ।
আমি ওই ঘটনার কথা বলব না ।
ওইটা সবাই জানে । আমি শুধু বলতে চাচ্ছিলাম তাকে যেইসব ছেলেগুলো কুপিয়ে মেরেছে ওদের ধরার জন্য এত তদন্তের কি আছে? ওই ছেলেগুলারে সরাসরি ধরে এনে বিচার করলেই কি হয় না? ওরা যেই হোক না কেন । ছাত্রলীগ হোক, ছাত্রদল হোক, শিবির হোক, জামায়াত হোক । যেই হোক, ওদেরকে কি সবাই দেখেনি টিভিতে? ওদের ছবি কি পেপারে ছাপা হয়নি? ওদেরকে তো সবাই চেনে । কিন্তু ধরছে না কেন? হয়তো ওদের মাধ্যমে আরো বড় কাউকে ধরার চেষ্টা চলছে ।
হয়তো তদন্তের মাধ্যমে দেখা হচ্ছে, তারা আসলেই কোন দলের? তাদের পিছনে বিরোধীদলের হাত আছে কিনা? তারা আসলেই কি চাপাতি দিয়ে কুপিয়েছিলো কিনা? তারা আসলেই হাত দিয়ে চাপাতিগুলো ধরেছিলো কিনা? নাকি তারা ওইখানে রোবট ব্যবহার করেছে? নাকি তারা উন্নত টেকনোলজির সাহায্যে হাত ছাড়া চাপাতিগুলো ব্যবহার করেছে?
হায়রে বিচার । একটার বিচার হতে হতে আরো হাজারটা অপরাধ এসে হাজির হয় । আমাদের বিচারগুলোতো আবার একেকটা লং প্রজেক্ট । একটা সম্পন্ন হতে কয়েক বছর লাগে ।
হয়তো আমি যা বলছি তা হয় না ।
হয়তো আমার সব কথাই ভুল । হয়তো সব কিছুই ঠিকমত চলছে । হতেই পারে । আমি আবার এইসব জটিল ব্যাপার খুব কম বুঝি । তাই বলার মধ্যেও অজ্ঞতার ছাপ স্পষ্ট পাওয়া যাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক ।
# বর্তমানে খুব কম সময়ে বিশ্বখ্যাতি পেয়েছে যে, সে হল পাকিস্তানের মালালা ইউসুফজাই । সে সম্প্রতি তার একটা টুইটে নাকি বাংলাদেশকে বিড়াল বলে সম্বোধন করেছে । এই খবরটা যদিও আমি সরাসরি দেখিনি, কিন্তু এমন কিছু মানুষের কাছ থেকে জানতে পেরেছি, যাদের অবিশ্বাস করাটা মনে হয় একটা বিরাট আবুইল্যামি ।
তো মালালার এই টুইট কেন? কারণ বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম নাকি পাকিস্তানে খেলতে যাচ্ছে না । তাই...
আমি এই ব্যাপারে কিছুই বলব না ।
কিছু বলার নাইই আসলে । যেখানে মালালা নিজে তার দেশে গুলিবিদ্ধ হয়েছে, যেখানে তার নিজের নিরাপত্তারই ঠিক নাই, সেখানে আমাদের নিরাপত্তার কি গ্যারান্টিরে আফা?? আর আমাদের টাইগাররা কিন্তু এতেও ভয় পায় না । আসল সমস্যা হল আমাদের । আমরা যে আমাদের টিমটারে অনেক ভালোবাসি । ওইটা তো আর আপনারে বোঝানো যাইবো না ।
।
# এই কয়েকদিনের ভেতর ব্লগিং জগতের একটা উজ্জ্বল নক্ষত্র হঠাৎ করেই হারিয়ে গেছেন । হারিয়েছেনও এমনভাবে, যেন আর খুঁজে পাওয়া না যায় তাকে । তিনি হলেন ইমন জুবায়ের । আমি তাঁকে চিনিনা ।
তাঁর সাথে আমার কথাও হয়নি কখনো । কিন্তু সবার তাঁর প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, সম্মান দেখে ঠিকই বুঝতে পেরেছি যে, আমি খুব বড় একটা জিনিস মিস করে ফেলেছি । আমার আরো আগেই আসা উচিত ছিলো ব্লগিং জগতে ।
ইমন জুবায়ের, আপনি যেখানেই থাকুন, শান্তিতে থাকুন ।
# দুই দিন আগে আমার এক বন্ধুর সাথে রাস্তায় হাঁটছিলাম ।
তখন আমরা একটা ভিক্ষুকের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম । তার দুইটা পার হাঁটুর নিচ থেকে নেই ।
তাকে একজন একটা দুই টাকার নোট দিল । তখন ভিক্ষুকটা সেই দুই টাকার নোটটার দিকে কিছিক্ষণ তাকিয়ে ছিল । তার সেই দৃষ্টিতে হয়তো অনেক দুঃখ ছিল ।
আমি ঠিক বুঝতে পারিনি । আমি আবার এইসব চোখ দেখে সবকিছু বলে ফেলার কাজটা একেবারি পারি না ।
তখন মনে হয়েছিল, আমরা যেভাবে আছি এখন, তাতে বলতে পারি আমরা অনেক সুখে আছি । আমাদের কাছে দুই টাকার একটা নোট হয়তো কোন ব্যাপার না । কিন্তু ওই ভিক্ষুকটা এই রকম পাঁচটা নোট জমা করে দশ টাকা করে ।
# আর হ্যাঁ, একটা জটিল খবর আছে । ৭ তারিখ আমার পরীক্ষা ছিল বলে আমি সারা রাত জেগে পড়েছি । পরীক্ষার আগেরদিন পর্যন্ত যে বই উল্টিয়েও দেখে না, তার ক্ষেত্রে এইটা খুবই জটিল একটা ব্যাপার বলে মনে করি আমি । এমনকি এর পরেরদিনও রাত জেগে পড়েছি । নিজেকে খুব পড়ুয়া ছাত্র মনে হচ্ছে ।
# এইবারের ফিফা ব্যালন ডি’অরের পুরষ্কার পেয়ে টানা চতুর্থবারের মত এই পুরষ্কার পেল লিওনেল মেসি । আমি জন্মের পর থেকে (!) আর্জেন্টিনার সাপোর্টার । আর সেই সূত্রে মেসিরও । তাই মেসির এইরকম সাফল্যটা আমার জন্য নিশ্চয়ই অনেক বড় একটা ব্যাপার ।
আরো অনেক ঘটনা হয়তো ঘটেছে, কিন্তু আমার অজান্তে ।
সংবাদপত্র খুব একটা পড়া হয়না ।
এতক্ষণ ধরে আমার এই আজাইরা পেঁচালগুলো পড়ার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ । একটা অনুরোধ, ভালোবেসে দোয়া না করেন, সমস্যা নাই । খালি বদদোয়া দিয়েন না পিলিজ । ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।