রানা প্লাজা ধসের পর পোশাকের অনেক কাজ বাংলাদেশ থেকে ভারত ও ভিয়েতনামের দিকে চলে যাচ্ছে। আর সম্প্রতি ভারতের রুপির বড় অবমূল্যায়ন হয়েছে। বাংলাদেশের টাকার অতিমূল্যায়ন হয়েছে। আবার দেশে ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদহারসহ বিভিন্ন কারণে প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় পোশাক খাত ইতিমধ্যেই খানিকটা সক্ষমতা হারিয়েছে। এতে রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে দেখা দিয়েছে নিম্নমুখী ধারা।
এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশের পোশাকশিল্প লন্ডভন্ড হয়ে যাবে—এমনটা মনে করে পোশাকমালিকদের সমিতি বিজিএমইএ। গতকাল রোববার বিজিএমইএ কার্যালয়ে বাটেক্সপো-২০১৩ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব বক্তব্য দেন সমিতির সভাপতি আতিকুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
ভারতকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে আখ্যায়িত করে আতিকুল ইসলাম বলেন, ডলারের বিপরীতে রুপির বড় অবমূল্যায়ন পরিস্থিতিতে বিদেশি ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে চান সেখানকার শিল্পপতিরা। তাঁরা বলছেন, ভারত হচ্ছে এখন আমদানিকারকদের জন্য লোভনীয় গন্তব্য।
বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা সরিয়ে নিতে সব রকম চেষ্টা করছে ভারত।
বিষয়টি ব্যাখ্যা করে আতিকুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি ডলারের বিপরীতে রুপির ২৭ দশমিক ৯১ শতাংশ অবমূল্যায়ন হয়েছে। অন্যদিকে টাকার বিপরীতে ডলারের অবমূল্যায়ন হয়েছে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ। এর ফলে ভারত প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে ৩৭ শতাংশ এগিয়ে থাকছে। বাংলাদেশ ইউরোপের বাজারে যে শুল্কসুবিধা বা জিএসপি পায়, তার পরিমাণ ১৩ থেকে সাড়ে ১৩ শতাংশ।
ফলে প্রতিযোগিতায় অনেকখানি এগিয়ে যাচ্ছে ভারত। এ পরিস্থিতিতে দেশের পোশাক রপ্তানিকারকদের জন্য পৃথকভাবে ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণের দাবি করেন তিনি।
প্রতিযোগী দেশের তুলনায় বাংলাদেশের উৎপাদনশীলতাও কম উল্লেখ করে বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, ভিয়েতনামে ১৫ লাখ পোশাকশ্রমিক। তাদের রপ্তানি আয় এক হাজার ৭০০ কোটি ডলার। আর বাংলাদেশের রপ্তানি আয় দুই হাজার ১০০ কোটি ডলার।
কিন্তু এর বিপরীতে শ্রমিক আছে ৪০ লাখ। ভিয়েতনামের হিসাব করলে বাংলাদেশের কমপক্ষে চার হাজার ২০০ কোটি ডলারের রপ্তানি আয় হওয়া উচিত।
রানা প্লাজা ধসের পর রপ্তানি কমে যাচ্ছে উল্লেখ করে আতিকুল ইসলাম বলেন, গত জুলাইয়ে তৈরি পোশাকের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ছিল ২২ শতাংশ। আগস্টে তা কমে সাড়ে ৫ শতাংশে দাঁড়ায়। সেপ্টেম্বরে তা আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
তবে পোশাকশিল্পের মানোন্নয়নে যৌথভাবে কাজ করা হচ্ছে। ইউরোপীয় ক্রেতাদের জোট অ্যাকর্ড, নর্থ আমেরিকার ক্রেতাদের জোট অ্যালায়েন্স ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে।
সমিতির সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, রানা প্লাজার পর আগামী দুই বছর খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ গোটা সময়টা টিকে থাকতে লড়াই করতে হবে। কারখানার যথাযথ কর্মপরিবেশ, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অনেক কারখানাই ঢাকার বাইরে সরিয়ে নিতে হবে।
এ ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী মূল্যে সরকারকে সহাযতা দিতে হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।