আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঘুরে দাঁড়াচ্ছে পোশাকশিল্প

নানা প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে আবারও ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে দেশের তৈরি পোশাক শিল্প। মালিকদের মনে বিদ্যমান আশঙ্কার মেঘ কাটতে শুরু করেছে।

পরিস্থিতির পরিবর্তন হওয়ায় ক্রেতারা আবার বাংলাদেশ থেকে অর্ডার নিতে শুরু করেছেন। এতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কারখানা মালিকরা। তারা সার্বিক পরিস্থিতিকে ইতিবাচক বলে মনে করছেন।

বিজিএমইএ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের শেষ দিকে সংকটময় পরিস্থিতিতে পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ১৯.৯৬% ছিল। পরিস্থিতি ভালো থাকলে আগামী দু-তিন মাসে তা ৩০% হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ক্রেতাদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে ৩ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বায়ার্স ফোরামের সঙ্গে বিজিএমইএ নেতারা আলোচনায় বসবেন।

সেখানে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন।

গত বছর বিভিন্ন কারণে পোশাকশিল্প বিরাট ক্ষতির মুখে পড়ে।

যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য তাজরীন ফ্যাশনের অগি্নকাণ্ড ও রানা প্লাজা ধসের ঘটনা এবং বিদেশি ক্রেতাদের বিমুখতা। এ ছাড়া গত বছর বেতন-ভাতা, সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ ও নূ্যনতম মজুরির দাবিতে শ্রমিকরা লাগাতার আন্দোলনে জড়িয়ে কারখানায় অগি্নসংযোগ ও ভাঙচুর করেন। সবশেষে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সহিংসতায় পোশাক খাতের ক্ষতি হয় ১৩ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা (সূত্র : সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ)। তবে বর্তমানে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসায় কারখানাগুলো ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার জন্য পুরোদমে কাজ শুরু করেছে। আর বিদেশি ক্রেতাদের আস্থা ফেরাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কারখানা মালিকরা।

কারখানা মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ জানিয়েছে, ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে মালিকদের আরও চার মাস সময় লাগবে। বিজিএমইএ'র হিসাবে চলমান সহিংসতা ও অনান্য কারণে বাংলাদেশ থেকে পাশর্্ববর্তী দেশে ২০১৩ সালে ৩০-৪০ শতাংশ অর্ডার চলে যায়। এ অবস্থায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রায় ৭ শতাধিক কারখানা বন্ধের দ্বারপ্রান্তে পেঁৗছায়। অন্যদিকে নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়ন করতে না পেরে ঢাকার ৩৮% এবং চট্টগ্রামের ৯০% পোশাক কারখানা শ্রমিকদের ডিসেম্বর মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়। তবে শ্রমিকরা চাকরি হারানোর আশঙ্কায় এবং বাস্তবতা পর্যবেক্ষণ করে এখন পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া মালিকদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের আন্দোলনে নামেননি।

এমনকি সহিংসতার আশঙ্কা কেটে জনজীবন স্বাভাবিক হয়ে আসায় আবারও কারখানাগুলোতে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে আসতে শুরু করেছে। যান চলাচল স্বাভাবিক হওয়ায় আগের মতো ঢাকা থেকে মংলা বন্দরে পণ্য পরিবহনও শুরু হয়েছে। মালিকরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ক্রেতার অর্ডার সরবরাহ করতে। অর্ডার পূরণ করতে শ্রমিকরাও করছেন ওভার টাইম। বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, এখন রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংসতা নেই।

ঢাকা থেকে পণ্য নিয়ে বন্দরে গাড়ি চলাচল শুরু হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, পোশাক খাত আশঙ্কামুক্ত হতে পারবে। তবে এ জন্য পোশাক মালিকদের মূল লক্ষ্য হবে বিদেশি ক্রেতাদের আস্থা ফিরিয়ে আনা। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন ক্রেতাদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে মালিকদের সময়মতো পণ্য সরবরাহ, শ্রমিকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, শ্রমিকদের নায্য দাবি পূরণ এবং বড় ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

বিজিএমইএ'র ভাইস প্রেসিডেন্ট সহিদুল্লাহ আজিম বলেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভালো হওয়ায় বিদেশি ক্রেতারা আবারও অর্ডার নিয়ে আসছেন।

পোশাকশিল্প আবারও ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। আমরা ক্রেতাদের ফিরিয়ে আনতে তাদের কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নত করাসহ অন্যান্য দাবি বাস্তবায়ন শুরু করেছি। আমাদের পোশাকশিল্প নিয়ে বিদেশিদের মধ্যে যে ইমেজ ঘাটতি রয়েছে তা ইতিবাচক করার চেষ্টা করছি।

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।