শৈশবের প্রিয় গলি-রাস্তা ও মোড়ের বৃষ্টি ভেজা নতুন চেহারা, বৃদ্ধ গাছেদের জ্ঞানী উচ্ছাস, পদ্মপুকুর, জেল খাল আর বাগানের নিরবতার সাথে সুনীল বা অপুদা’র চা, শত চেনা-অচেনা চোখের উৎসুক চাহনি, লেচুশাহ, প্রয়াত বন্ধুরা, তপা পাগলা, টাউন হল, কীর্তনখোলা তীরবর্তী তৃনভূমির গরু-ছাগল থেকে শুরু করে মেঘে মেঘে ভেসে আসা ইলিশের দল, ডাহুক ডাকা পুরানো ঝোপ-জঙ্গল, স্বচ্ছ জল কেটে ছুটে চলা সাঁড়ি বাঁধা রাজহংস বা ঘরমুখো নিশি বকের কোলাহল, সাঁড়ি সাঁড়ি জানা-অজানা আলো, দোকান, পত্রিকা, সংগঠন, ফিকে হতে থাকা ঠাকুর বা নবাব এস্টেট, ব্রাহ্মমন্দির, ব্রাউন কম্পাউন্ড ঘেঁসা সাহেবের গোরস্থানে নির্মিত মার্কেট, পরিবর্তিত জেলগেট ও অপরিবর্তিত দই ঘর, পয়ত্রিশের শব্দাবলী, কালীপ্রসন্ন হলের ভেন্টিলেটরে বসবাসকারী শালিক-চড়ুইয়ের নয়া বংশধর আর উধাও হয়ে যাওয়া জালালী কবুতর, বদলে যাওয়া ফকিরবাড়ি, পুলিশ ক্লাব, কালীবাড়ি, চাঁনমাড়ি বস্তি, টিএন্ডটি কলোনী বা প্রিয় উদয়ন, অক্সফোর্ড মিশন, বিদ্যুতায়িত রিক্সা, সিটি বাস, ভেঙে ফেলা সোনালী বা কাকলী এবং প্রায় বন্ধ বিউটি সিনেমা হল, কসাইপট্টির হেলেনের ছল, ডোমদের হারানো শুয়োর-বিজাড়া আর শ্মশানবান্ধব কুকুরের দল, সবুজ শালুক দিঘী বা বিবির পুকুর; এসবই সুদূরের যোগসূত্র মেপে টেনে নিয়ে যায়, অবেলায়- অতীতের সব পথে। স্বদেশীদের গোপন সভা, বাল্যবিধবার বিয়ের আসর, লাশকাটা ঘর বা পীরের শালীস বৈঠক; আরো কত জায়গায়- মহাত্মা অশ্বিনী, প্রজ্ঞানানন্দ, দেবেন্দ্র, নলিনী, মুকুন্দ, দুর্গামোহন, জীবনানন্দ বা আরজকে দেখা যায়। মাঝে মাঝে গান্ধী, সুভাস বা ঠাকুরও আসে। আহা, কত আশেপাশে। তাই আজ ভাবি আর কবে বেরী ও শেলীর এ নগরে বর্তমানে থাকার জো রবে? আর হবে কি তেমন জনম? ফের শিশু হয়ে ফিরবো কি এখানে, এই বরিশালে?
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।