চট্টগ্রামের জামেয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে একজন নিহত হয়েছেন। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ, হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মুফতি ইজহারুল ইসলাম দাবি করেছেন, ল্যাপটপ বিস্ফোরণ এবং তা থেকে কেরোসিনের চুলায় আগুন লেগে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটেছে। পুলিশ বলেছে, বোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণ ঘটে। পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত কক্ষ থেকে হাতে তৈরি তিনটি তাজা বোমা এবং লোহার পাইপ, মার্বেলসহ বোমা তৈরির বিভিন্ন উপাদান উদ্ধার করে। অধ্যক্ষের বাসা থেকেও ১৮ বোতল এসিড জাতীয় পদার্থ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আহত চারজনসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন মারা যান। বিস্ফোরণে মাদ্রাসার ওই কক্ষের জানালা উড়ে যায়। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের একজন ছাত্রও আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চট্টগ্রাম সফরের প্রাক্কালে মাদ্রাসায় বোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণের ঘটনা নিঃসন্দেহে উদ্বেগের বিষয়। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এটিকে ল্যাপটপের বিস্ফোরণ বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও ঘটনাস্থলের ক্ষয়ক্ষতি সে বক্তব্যকে হাস্যোদ্দীপক করে তুলেছে। ঘটনাস্থল থেকে বোমা ও বোমা তৈরির উপকরণ উদ্ধার সম্পর্কে তারা কোনো ব্যাখ্যা দেননি। বিস্ফোরণে আহতদের বেসরকারি হাসপাতালে লুকিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার কারণটিও তারা স্পষ্ট করতে পারেননি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বোমা তৈরির কারখানা বানানোর সঙ্গে যারা জড়িত তারা যে অসুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী সে সম্পর্কে সন্দেহের কোনো অবকাশ থাকাই উচিত নয়। ইসলামী শিক্ষা বিস্তারের মহান উদ্দেশে কওমি মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠা। শান্তির ধর্ম ইসলামের সঙ্গে সন্ত্রাসের দূরতম সম্পর্ক কল্পনা করাও কঠিন। যারা ইসলামের মানবতাবাদী চেতনার বদলে ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বোমা বানানোর কারখানা হিসেবে গড়ে তুলছেন, তাদের গর্হিত কর্মকাণ্ড রুখতে আলেম সমাজকে সচেতন হতে হবে। আমরা মনে করি চট্টগ্রামের জামেয়াতুল উলুম মাদ্রাসায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক তাদের গ্রেফতার এবং বিচারের সম্মুখীন করতে সরকার সব কিছু করবে। ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা যাতে গড়ে না ওঠে তা নিশ্চিত করতে বোমাবাজেেদর সম্পর্কে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদেরও সোচ্চার হতে হবে। নিজেদের মর্যাদা ও সুনামের স্বার্থেই তারা এ ব্যাপারে সক্রিয় হবেন এমনটিই কাম্য।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।