শুক্রবার বিকালে গুলিস্থান থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এই ফ্লাইওভার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
এরপর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক সুধী সমাবেশে শেখ হাসিনা বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে রাজধানীবাসীর জন্য এই ফ্লাইওভার ঈদ-উল-আজহার উপহার। ”
এর আগে রোজার মধ্যে কুড়িল ফ্লাইওভার যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওইটা ছিল রাজধানীবাসীর জন্য ঈদ-উল-ফিতরের উপহার।
মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার ঢাকা মহানগরীর যানজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে (পিপিপি) নির্মিত দেশের সবচেয়ে বড় এ ফ্লাইওভার সায়েদাবাদ হয়ে ঢাকায় প্রবেশকারী যাত্রীদের কষ্ট দূর করবে।
এতে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ৩০ জেলার মানুষের রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হবে।
“এজন্য আমি চাচ্ছিলাম, ঈদের আগে এইটুকু উদ্বোধন করে দেই,” বলেন প্রধানমন্ত্রী।
ফ্লাইওভার নির্মাণ নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “কিছু কিছু কাজ আমিই বাড়িয়ে দিয়েছি। র্যাম্প আর লুপ বাড়িয়েছি। আসলে আমরা যে কাজটা করি তার মধ্য দিয়ে মানুষকে সহায়তার চেষ্টা করি।
তিনি বলেন, “সরকারে এসেই যানজট পেয়েছি। এই পুরো ফ্লাইওভারটি পলাশী থেকে যাত্রবাড়ী পর্যন্ত হবে। অনেক র্যাম্প আর লুপও নামবে। ”
ফ্লাইওভারের নামকরণের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “মেয়র হানিফ ছিলেন, ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র। ”
মগবাজার থেকে মালিবাগ পর্যন্ত ফ্লাইওভারের কাজ শুরু হওয়ার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “এটাও অতি দ্রুত শেষ করা হবে।
”
ঢাকা শহরকে দূষণমুক্ত করতে সরকারের নেয়া পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শহরের চারপাশের বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু ও শীতলক্ষ্যা নদীর দূষণ রোধে এর তলদেশের বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।
“এতে দূষণমুক্ত হয়েছে। কিছুটা হলেও জলজ প্রাণী দেখা যায়। ”
তবে পরিবেশ রক্ষায় জনগণেরও দায়িত্ব রয়েছে বলে মনে করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “হাতির ঝিল করে দিতে পারলাম না।
এরইমধ্যে আশপাশের বাড়ি থেকে ময়লা ছুড়ে ফেলা শুরু করে দিয়েছে। ”
ঢাকার ২৫টি আসনের সব কয়টিতে ঢাকাবাসী নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে জয়ী করায় এই নগরবাসীর প্রতি তার সরকারের দায়িত্ব রয়েছে- বলেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “আমরা ঢাকার মানুষের সমস্যা সমাধানের পদক্ষেপ নিয়েছি। ঢাকাজুড়ে রিংরোড তৈরির ব্যবস্থা নিয়েছি।
“ঢাকা প্রাচীন শহর।
আমি প্রথম ৫২ সালে ঢাকায় আসি: আর বসবাস শুরু করি ৫৪ সাল থেকে। আমরা সবার জন্য বসবাসের উপযোগী ঢাকা শহর গড়ে তুলতে চাই। ”
মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার নির্মাণের সময় সহযোগিতার জন্য স্থানীয়দের ধন্যবাদ জানিয়ে হাসিনা বলেন, “আমরা আত্মনির্ভরশীল হতে চাই। পরনির্ভরশীলতা নয়। আমরা মর্যাদা নিয়ে চলবো।
হাত পেতে নয়। আমাদের বিশেষজ্ঞদের জ্ঞান ও মেধা রয়েছে। ”
অনুষ্ঠানে ফ্লাইওভার নির্মাণের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ওবায়দুল করিম বলেন, “এই প্রকল্প শুরু হয়েছে নেগেটিভ অ্যাটিচুড নিয়ে- এই প্রকল্প হবে না। আমরা দেখেছি- এটা আমাদের প্রকল্প না, এটা ছিলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রকল্প। ”
প্রকল্প বাস্তবায়নে বিভিন্ন সময় সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শের কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল করিম বলেন, “প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছা করলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ঢাকাকে যানজটমুক্ত করতে পারবেন।
”
অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।
প্রকল্প পরিচালক মো. আশিকুর রহমান জানান, এই প্রকল্পে সরকারের কোনো অর্থ ব্যয় হয়নি। তবে প্রতিদিনের আদায় করা টোলের ৫ শতাংশ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের তহবিলে জমা হবে। ২৪ বছর পর এর দায়িত্ব নেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ নজমুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বক্তব্য দেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।