আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রসঙ্গ গার্মেন্টসঃ দে ডোন্ট কেয়ার এবাউট আছ!!

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

হরতালে পোশাক খাতে শত কোটি টাকা ক্ষতি ও বহির্বিশ্বে ইমেজ সঙ্কট নিয়ে ব্যবসায়ী নেতাদের প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেন বিএনপি নেতারা। পোশাক খাতের সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী বাটেক্সপো সমাপনী অনুষ্ঠানে এ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ভবিষ্যতে হরতাল না দেয়ার আহ্বান জানালেও এ প্রসঙ্গে কোন কথা বলেননি বিএনপির কোন নেতাই। তবে আগামী ২৪ অক্টোবরের পর কী হবে ব্যবসায়ী নেতাদের এমন প্রশ্নে বিনএপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ওইদিন বিএনপির পক্ষ থেকে ঢাকায় সমাবেশ ডাকা হয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতায় পোশাক খাত যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিক খেয়াল রাখা হবে।

এ ছাড়া আগামীতে বিএনপি সরকার এলে পোশাক শিল্পের জন্য আলাদা একটি মন্ত্রণালয় গঠনের ঘোষণা দেয়া হয়। রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে শনিবার ২৪তম বাংলাদেশ এ্যাপারেল এ্যান্ড টেক্সটাইল এক্সপোজিশন (বাটেক্সপো)-২১৩ সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তাঁর পরিবর্তে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ওসমান ফারুক চৌধুরী, বিজিএমইএ সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ আজীম। বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দ্বিতীয় সহ-সভাপতি এস এম মান্নান কচি।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বিএনপি সরকার গঠনের দায়িত্ব পেলে পোশাক শিল্পের জন্য আলাদা একটি মন্ত্রণালয় গঠন করবে। আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করা এখন সময়ের দাবি। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময় তৈরি পোশাক খাত বন্ডেড ওয়্যার হাউস ও ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি সুবিধা দিয়েছিল। আবারও ক্ষমতায় এলে এ খাতের উন্নয়নে সব সমস্যা সমাধান করা হবে। তিনি বিদেশী ক্রেতাদের উদ্দেশ করে বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা পোশাক খাতে কোন প্রভাব পড়বে না।

আপনারা বাংলাদেশে নিয়মিত ক্রয়াদেশ দিতে থাকুন। এ শিল্পকে বাঁচাতে মালিক-শ্রমিককে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, মালিক-শ্রমিক একে অপরের পরিপূরক। শ্রমিক ভাল থাকলে, শিল্প ভাল থাকবে। তাই শ্রমিকদের কল্যাণে আরও বেশি করে কাজ করুন। যদিও বিজিএমইএ ইতোমধ্যেই শ্রমিকদের জন্য হাসপাতালসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে।

রানা প্লাজা ও তাজরীন অগ্নিকা-ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আমির খসরু মাহমুদ বলেন, বিএনপি বন্ডেড ওয়্যার হাউস ও ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি ছাড়াও ইউডি স্বাক্ষরের দায়িত্ব বিজিএমইএকে দিয়েছিল। এতে বিজিএমইএর দায়িত্ব বেড়ে গেছে। তাই বিজিএমইএকে আরও আত্মনিয়ন্ত্রক হতে হবে। বিশেষ করে কমপ্লায়েন্সের চাপে বিল্ডিং কোড বাস্তবায়ন নিয়ে যে সমস্যা চলছে।

এটি বিজিএমইএকে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। সরকারের ওপর দায়িত্ব দিলে ক্ষতি হবে। সরকার এটি সঠিকভাবে করতে পারবে না। নিজেদের স্বার্থেই এটি বিজিএমইএকে করতে হবে। সাবেক মন্ত্রী ওসমান ফারুক বলেন, পাট শিল্প ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর বিএনপি সরকার পোশাক খাতকে অগ্রাধিকার দিয়েছিল।

ফলে এ খাতটি বিকশিত হয়েছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় এ খাতের উদ্যোক্তারা ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন। ২০০৮ সালে যেখানে পাঁচ হাজার ৬শ’ পোশাক কারখানা ছিল। বর্তমানে সেখানে দুই হাজার ৬শ’ কারখানা আছে। আর ৩৬০টি স্পিনিং মিল ছিল।

এগুলো কাঁচামালের অভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বিজিএমইএর সহ-সভাপতি এম এ মান্নান কচি বলেন, রাজনেতিক অস্থিরতায় হরতালে প্রতিদিন শত শত কোটি ক্ষতি হচ্ছে। একই সঙ্গে পোশাক শিল্পের ইমেজ নষ্ট হচ্ছে। আমরা ব্যবসায়ীরা হরতাল থেকে মুক্তি চাই। এ শিল্প যাতে মুখ খুবড়ে না পরে সেদিক বিবেচনা করে হরতাল প্রত্যাহারের আহ্বান জানান তিনি।

বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, ব্যবসায়ীরা একটি সুষ্ঠু পরিবেশ চায়। যদি এটি দিতে পারেন, তাহলে এশিয়ার অন্যতম পোশাক রফতানিকারক দেশ হবে বাংলাদেশ। এ জন্য রাজনৈতিক পরিবেশ শান্ত হওয়া দরকার। আগামী ২৪ অক্টোবরের পর কী হবে কেউ জানে না। কিন্তু ব্যবসায়ীরা ২৫ অক্টোবর থেকেই স্বাভাবিক নিয়মে কাজ করতে চায়।

এ সুযোগ সরকার ও বিরোধী দলকে দিতে হবে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সরকার ও বিরোধী দল সমন্বয়ের মাধ্যমে শুধু পোশাক শিল্প নয়, সব অর্থনেতিক এজেন্ডায় জাতীয় ঐকমত্য সৃষ্টি হবে। যেখানে সরকার, বিরোধী দল, সুশীল সমাজ সবারই সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকবে এবং ঐকমত্যের ভিত্তিতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডাব্লিউ মজেনা প্রমুখ। বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, এদিকে গত বছরের তুলনায় এবারের প্রদর্শনীর কলেবর কমছে।

স্টলের সংখ্যা কমছে প্রায় এক- তৃতীয়াংশ। বায়ার এসেছেন মাত্র ৪৮ জন। স্টল মালিকদের মতে, নির্বাচনকেন্দ্রিক অনিশ্চয়তা, চলতি পুজো ও আসন্ন কোরবানির ঈদের কারণে এবার মেলা জমে ওঠেনি। তারপরও ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, এবারের মেলায় প্রায় ১৫ থকে ২০ শতাংশ ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ ছাড়া এবার প্রদর্শনীতে স্পট অর্ডারও কমতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

অথচ গত তিন বছরই আগের বছরের চেয়ে স্পট অর্ডার বেড়েছিল। সুত্র

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।