তরুণ নামের জয়মুকুট শুধু তাহার, বিপুল যাহার আশা, অটল যাহার সাধনা
রীতি অনুযায়ী পবিত্র কাবার গিলাফ পরিবর্তন করা হয়েছে। মক্কার মসজিদে হারামের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা আজ সোমবার পবিত্র কাবা ঘরের পুরনো গিলাফ নামিয়ে তাতে নতুন গিলাফ জড়িয়ে দেন। প্রতিবছর যিলহজ মাসের এ সময়ে কাবার গিলাফ পরিবর্তন করা হয়ে থাকে।
প্রাকৃতিক রেশম দিয়ে তৈরী এ নতুন গিলাফ তৈরীতে খরচ হয়েছে ২২ মিলিয়ন রিয়াল। ১৪ মিটার উঁচু কালো রঙের এ পবিত্র গিলাফ সর্বমোট ১৬টি ছোট টুকরো দিয়ে তৈরী।
কাবা শরীফের দরজায় ঝোলানোর জন্য আলাদা ভাবে এতে সাড়ে ছয়মিটার উঁচু এবং সাড়ে তিন মিটার প্রস্থ পর্দা রয়েছে। স্বর্ণের প্রলেপ মেশানো রূপার সুতা দিয়ে তৈরী নকশায় আল্লাহ পাকের নাম এবং আয়াত খচিত রয়েছে। কাবার গিলাফটি পাঁচটি সুবৃহৎ খন্ডে বিভক্ত, এ খন্ডগুলো একটি আরেকটির সাথে শক্তভাবে জোড়া লাগানো। চার খন্ড চার পাশে এবং একটি আলাদা খন্ড কাবার দরজায় ব্যবহৃত পর্দা হিসেবে।
ইতিহাসের পর্যালোচনায় দেখা যায়, ১৯৬২ সাল পর্যন্ত কাবা ঘরের গিলাফ মিসর থেকে তৈরী হয়ে আসতো।
তবে মাঝখানে ১৯২৮ সাল থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত ব্যবহৃত কাবার গিলাফ সৌদী আরবের মক্কায় তৈরী হয়েছিল। ১৯৩৯ থেকে ১৯৬২ পর্যন্ত পুনরায় মিসর সে দায়িত্ব পালন করেছে। বর্তমানে সৌদী আরবে তৈরী হওয়া এ গিলাফও মিশরের অনুকরণে তৈরী হচ্ছে।
প্রায় ৭০০ কেজি প্রাকৃতিক রেশম থেকে তৈরী হওয়া কাবার গিলাফে এক তৃতীয়াংশের উপর দিকে ৯৫ সেন্টিমিটিার প্রস্থের বন্ধনীতে কুরআনের বিভিন্ন আয়াত খচিত থাকে। তবে উত্তরদিকের অংশে লেখা থাকে, ‘খাদেমুল হারামাইন শরীফাইনের বাদশাহ আব্দুল আযীয ইবনে আব্দুর রহমান আলে সাউদের নির্দেশে এ গিলাফ পবিত্র নগরী মক্কায় তৈরী করা হয়েছে’।
১৯৭৭ সালে নতুন ভাবে স্থাপিত মক্কা নগরীর উম্মে জাওদ নামক জায়গায় অবস্থিত এ অত্যাধুনিক কারখানায় কাবা ঘরের বাইরের গিলাফ এবং ভেতরের গিলাফও তৈরী হয়। একই কারখানা থেকে মদীনায় রাসূল সা. এর রওজা মোবারকের কামরায় ব্যবহৃত অভ্যন্তরীন গিলাফও তৈরী হয়। যা প্রতি চার বছর পর পর পরিবর্তন করা হয়।
সারা বছরে পবিত্র কাবা ঘর দু’বার পরিস্কার করা হয়। আরবী হিজরীর শাবান মাসে এবং যিলহজ মাসে।
জমজমের পবিত্র পানি, মূল্যবান উদ আতর, গোলাপ নিংড়ানো পানি দিয়ে কাবার ভেতর ও বাহির ধোয়া হয়।
উল্লেখ্য, হযরত ইবরাহীমের সন্তান হযরত ইসমাইল নাকি মুহাম্মাদ সা. এর পূর্ববর্তী দাদা আদনান, কাবার প্রথম গিলাফ কে জড়িয়েছিল তা নিয়ে এ দুজনের ব্যাপারে মতবিরোধ থাকলেও এটা সর্বস্বীকৃত যে, হিজরতের ২২০ বছর আগে বাদশাহ তুব্বা আবি কারব আসাদ এ গিলাফের প্রথম প্রচলন করেছিলেন। মক্কা বিজয়ের পর ইসলামের নবী মুহাম্মাদ সা. এবং হযরত আবু বকর কাবা শরীফে গিলাফ পরিয়ে দেন। এর পর থেকে মুসলিম খলীফা এবং শাসকরা এ ধারা অব্যাহত রেখেছেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।