আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পরিবারতন্ত্রের গনধোলাই ...... জানতে হলে মানতে হবে..

সাহেব-বিবি-গোলাম.....সাবধান..

গনতন্ত্র না পরিবারতন্ত্র। এ নিয়ে যেমন প্রশ্নের শেষ নেই তেমন উত্তরেরো শেষ নেই। আসলে দেশের রাজনীতি নিয়ে মাথা ঘামাবার মত ইচ্ছে আমার নেই। কিন্তু শব্দ গুলি যখন ব্যাক্তিজীবনে আঘাত হানে তখন তা নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার আছে। না ভাবনেন না আমি বাংলাদেশের দুই সরকারদলীয় প্রধানদের নিয়ে আলোচনা করব।

আমি বলব আমার গনতন্ত্রের কথা বা আমার পরিবারতন্ত্র। প্রতিটি মানুষের ব্যাক্তিগত ইচ্ছা থাকে যেখানে সে স্বাধীন। সেখানে সে হাসতে পারে, কাদতে পারে ,গাইতে পারে , মনের ইচ্ছে মত কথা বলতে পারে, যেখানে সে ভালবাসতে পারে। কিন্তু আমি ভেবে দেখলাম আসলেই কি তাই হয়। এই ধরুন সন্তানের জন্মের সাথে সাথে বাবা ঠিক করে ফেলে ছেলে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হবে বা হবে অফিসের বড় কর্মকর্তা।

বাবাদের তো ইচ্ছে হতেই পারে কেননা ইচ্ছের জগতে সবাই স্বাধীন। ছেলে বড় হয় আর একটু একটু করে বাবার ইচ্ছে পূরণ করতে থাকে। ছেলে তার পরিবারের কথা মতই চলা ফেরা করতে থাকে। বাবার ইচ্ছে মত চুলের স্টাইল হয়। মায়ের ইচ্ছে মত পোশাক পরিধান।

আগের দিনে তো বাংলাদেশ ক্রিকেট ভাল খেলত না। তখন বাংলাদেশ পাশের দুই দেশকে সাপোর্ট করত। যদি পরিবার ইন্ডিয়ার সাপোর্ট করে তো সেও ইন্ডিয়া আর পাকিস্তান করলে সেও পাকিস্তান। ফুটবলের বেলাতেও তাই। ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা।

আর বাংলাদেশের সরকার পছন্দ হয় পরিবারের পছন্দ মত। উপরের প্রতিটি কথাই সত্য এবং স্বাভাবিক। কেননা একটা বয়স পর্যন্ত আমাদের নিজস্ব চিন্তা চেতনা বলতে কিছুই থাকেনা। আমরা ভাল মন্দ বুঝিনা। এই সময় পরিবার তাদের গাইড করবে এটাই স্বাভাবিক।

কিন্তু আমরা আমাদের পরিবারের ইচ্ছের জগত থেকে বের হয়ে আসতে পারিনা যখন আমরা বুঝতে শিখি তখনো। আপনি ক্রিকেট খুব ভাল খেলেন । পুরো মাঠে আপনার নাম উচ্চারিত হচ্ছে। বোলার এর কাছে আপনি মুর্তমান আতঙ্ক। আপনার আশপাশ দিয়ে বল বেরিয়ে যেতে পারে না।

এ পাড়া থেকে তো কাল ও পাড়া থেকে আপনাকে ডাক দেয় তাদের হয়ে খেলে দেয়ার জন্য। কিন্তু আপনি তো হবেন ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার। তাই আপনার মাঝে খেলতে খেলতে যে খেলার প্রতি ভালবাসা তৈরি হয়েছে , তৈরি হয়েছে খেলোয়াড় হবার বাসানা সেটা হয়ত পাড়ার ক্রিকেট এর মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকবে। কেননা আপনার মাঠ কাপানো ছক্কা আর ড্রাইভ দিয়ে ধরা ক্যাচ আপনার বাবা কখনও দেখতে যাননি। যদিও কখনও গিয়েছেন তা আপনাকে সেখান থেকে ধরে নিয়ে আসার জন্য।

রাতে বাসায় আপনার বুকের মাঝে ভয় হচ্ছে আজ কি না কি জানি হয়। এরকম দিন সবার আসে তা বলছিনা আর আসার কথাও নয় কেননা মাঠের ঐ ১১ জনের মাঝে তারা ছিল না । কিন্তু আপনি ছিলেন। আপনি গান গাইতেন। স্কুলে মাঝে মাঝেই স্যাররাও আপনার গান শুনতে চাইত।

স্কুল কলেজ আর এলাকার সকল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আপনার ডাক পড়ত। কিন্তু গান তো গানই। তাই ওটা বাদ দিয়ে পড়াশুনায় মনোযোগ দিলে ভাল হয় এমন কথা শুনেছেন এমন মানুষের হয়ত অভাব হবে না। আজও আপনার হারমনিয়াম তবলা বা গিটার ঘরের কোনেই পড়ে আছে। হয়ত এগুলোর কিছুই ছিলনা কিন্তু আপনার সুন্দর গলা দিয়ে আজ গান বাহির হয় না কেননা আপনি গায়ক বা গায়িক নন ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হবার জন্য জন্মিয়েছেন।

আপনার লেখা গুলি আজ পড়ে আছে ঘরের কোনায়। আজ আপনার বইও বাজারে বিক্রি হতে পারত। কিন্তু আপনার লেখা গুলি তো নিছক ছেলেখেলা ছিল যা আপনি ঠিক ওই বয়সে লিখে ফেলেছেন যখন অন্যরা বাক্য রচনা করতে হমশিম খায়। কিন্তু আপনি তো এগুলো হবেন না। আপনার পরিবার চায় বড় চাকুরীজীবি হন।

হ্যা আমরা পরিবারে ইচ্ছা থেকে আমাদের কখনও আলাদা করতে পারিনি। কেননা আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটটাই এরকম। আমি যেটা বলছিলাম পরিবার না থাকলে মানুষ সঠিক পথ খুজে পেত না , শিখতে পারত না সভ্যতা সংস্কৃতি। কিন্তু পরিবারের এই ইচ্ছা থেকে যখন বের হতে পারিনা ... তখন পরিবারের ইচ্ছাই হয় আমাদের ইচ্ছা। আর এভাবেই আমাদের সন্তানরাও আমাদের ইচ্ছা মত চলতে শুরু করে।

শুরু হয় আর এক পরিবার তন্ত্রের।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.